Singur: টাটারা আমাদের হারাতে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল: মমতা

“সিঙ্গুর(Singur) থেকে টাটাদের তিনি নন, তাড়িয়েছে সিপিএম” সিঙ্গুর- টাটা প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।বুধবারই সিঙ্গুর নিয়ে তৃণমূলকে সেফসাইড করে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শাসক দলের…

Chief Minister Mamata Banerjee

“সিঙ্গুর(Singur) থেকে টাটাদের তিনি নন, তাড়িয়েছে সিপিএম” সিঙ্গুর- টাটা প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।বুধবারই সিঙ্গুর নিয়ে তৃণমূলকে সেফসাইড করে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শাসক দলের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল সুপ্রিমো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর থেকেই তাঁকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে একযোগে তোপ দেগেছে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি নেতৃত্বরা।

আমি নয়, টাটাকে তাড়িয়েছে সিপি(আই)এম। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর গতকাল থেকেই রাজ্য রাজনীতি‌ উত্তপ্ত। দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গুর আন্দোলনে আগুনে যে ভাটা পড়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য তা ফের জ্বলতে শুরু করেছে। মমতার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সোচ্চার হয়েছে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধী দলগুলির বিরোধিতার পরও বৃহস্পতিবার ফের একই মন্তব্য করলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে। 

   

এদিন সিঙ্গুর প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্য,”আমি একটা কথা বলতে গিয়েছিলাম। যে কেউ কেউ আজকাল বলে বেড়াচ্ছে যে, টাটা কেন স্কিল ট্রেনিংয়ে বাংলার ছেলেমেয়েদের চাকরি দেবে? বিজেপি-সিপিএম আমার মন্তব্যকে বিকৃত করে পেশ করার চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি তিনি বলেছেন, তৃণমূল কখনো পক্ষপাত করে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,”আমাদের এখানে এ টু জেড, যারাই আসবে ইন্ডাস্ট্রি করতে সকলকে স্বাগত জানাই। আমরা এখানে কোনও বিভেদ করি না। কাজেই টাটা যদি স্কিল ট্রেনিংয়ের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়েদের চাকরি দেয়, ওরা জানে না এখানে টাটার কতগুলো কোম্পানি হয়েছে? যান খড়গপুরটা গিয়ে ঘুরে আসুন। যান একটু আইটি সেক্টরটা গিয়ে ঘুরে আসুন।”

বামেদের উদ্দেশ্যে মমতার মন্তব্য,”আপনারা কৃষকদের জমিও কেড়েছেন জোর করে। এটা আমরা বলি না। সাথে সাথে মানুষ মেরেছেন। তাপসী মালিকের মতো মেয়েকে পুড়িয়ে মেরেছেন। কৃষকদের পুড়িয়ে মেরেছেন। টাটারা তো তখন আমাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল নির্বাচনের সময় আপনাদের ভোট দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা কোনদিন কিছু বলিনি। 

এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বলেছিলাম, এখানে জমি আছে তোমরা করো। আমাদের আপত্তি নেই। বিকল্প জমি নাও। আমরা বারবার করে বলেছিলাম জোর করে দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমি নেওয়া যাবে না। তারপর আমাদের ওই আন্দোলনটাই আজ সারা ভারতবর্ষে আইন হিসাবে গড়েছে। আজও বাংলায় যদি কিছু করি আগে জিজ্ঞেস করে নিই জমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে না তো? আমি বলি টাকার বিনিময়ে করতে দিলে তবেই করো নাহলে করতে যেও না। 

সিঙ্গুর প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,’টাটাকে আমি তাড়াইনি, সিপিএম তাড়িয়েছে। ওরা জোর করে জমি নিয়েছিল। আমি সেই জমি ফেরত দিয়েছি। হঠাৎ ১৪ বছর পর এধরনের কথায়, প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

তিনি আরও বলেন, আমরা কখনও অন্য কারও জমি কেড়ে নিইনি। আমরা শিল্পপতিদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করি না। আমরা চাই সব শিল্পপতি এখানে বিনিয়োগ করুক এবং কর্মসংস্থান হোক। হাসিমারাতে আমারা বিমানবন্দর তৈরির চেষ্টা করছি। বাগডোগরার পাশাপাশি আরও ৩-৪টে বিমানবন্দর তৈরি হবে। আমি ঢেলে কর্মসংস্থান চাই। কেউ চাইছে না, তাই কর্মসংস্থানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা কারও চাকরি খাইনা, চাকরি খাবও না”।

বৃহস্পতিবার বিরোধীদের সুরে সুর মেলাতে দেখা গিয়েছে জমি আন্দোলনের সময় সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ওরফে মাস্টার মশাইকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করে মাস্টারমশাই বলেছেন, ‘শুধুমাত্র সিপিএমের জন্য টাটা চলে গেছে এটা আমি বিশ্বাস করি না। সিঙ্গুর আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আমাদের সবার ধরনার জেরেই টাটারা রাজ্য ছেড়ে চলে যায়।’ মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন, এই বলে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এবার তাদের দাবিকেই সমর্থন করে সিঙুর আন্দোলনের অন্যতম নেতা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, “মমতার ধরনার জন্যই টাটারা সিঙুর ছেড়ে চলে গিয়েছে”। বিরোধী দলগুলি এবং নিজে দলে বিধায়কের বিরোধিতার পরও আজ এক যোগে বাম ও টাটাকে কড়া আক্রমণে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী।