Bangladesh: ৩৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা বাংলাদেশি পি কে হালদারের সঙ্গে ‘পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীর সুসম্পর্ক’

বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে ভারত হয়ে কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃত অবৈধ অর্থ লেনদেন সম্পর্ক। এই লেনদেনে জড়িত বাংলাদেশি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ও তার সহযোগী…

বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে ভারত হয়ে কানাডা পর্যন্ত বিস্তৃত অবৈধ অর্থ লেনদেন সম্পর্ক। এই লেনদেনে জড়িত বাংলাদেশি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ও তার সহযোগী সুকুমার মৃধা দুজনেই পলাতক। তাদের বিষয়ে তদন্ত বাংলাদেশে যত এগিয়েছে ততই চমকে উঠছেন দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আধিকারিকরা। তাঁরা জানতে পেরেছেন পি কে হালদারের পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীর সংযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কয়েকজন সাংসদের সরাসরি যোগাযোগ আছে।

কে তারা? ঢাকা থেকে ইঙ্গিত আসছে নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় এখনই নজরে থাকা পশ্চিমবঙ্গের সেই প্রভাবশালী রাজনীতিকদের নাম বলা সম্ভব নয়। তবে ইঙ্গিতে এও বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলা উত্তর ২৪ পরগনায় আছে সূত্রের চাবিকাঠি।

বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, প্রশান্ত কুমার হালদার পলাতক। আপাতত তার অবস্থান কানাডায়। কিন্তু তার বিপুল বেআইনি রোজগার ও সম্পত্তি ভারতে ছড়িয়ে। দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক সম্পর্ককে মজবুত করে পি কে হালদার ও সুকুমার মৃধা পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ুতে সম্পত্তি সরিয়েছে। তাদের বেআইনি লেনদেনে রাজনৈতিক সংযোগ স্পষ্ট।

বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের  প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার। প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা সে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ। পি কে হালদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।

বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর আরও কয়েকটি রাজ্যে আছে পি কে হালদারের বাড়ি। এর পরেই দুদক পি কে হালদারের বিষয়ে তথ্য পাঠায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এর কাছে। সেই তথ্য নিয়ে শুক্রবার অশোকনগরে অভিযান চলে ইডির। পলাতক পি কে হালদারের আর এক সহযোগী সুকুমার মৃধার একটি বাড়ি আছে অশোকনগরে।

অশোকনগর পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা। তদন্তে উঠে এসেছে নিজেকে পিকে হালদারের সহযোগী নয়, ক্লায়েন্ট বলে পরিচয় দিত সুকুমার। ইডি যে বাড়িতে অভিযান চালায় সেটি পিকে হালদারের ভাই প্রীতিশ হালদারের বাড়ি বলে জানা যাচ্ছে। তবে এলাকাবাসীর কাছে তিনি প্রাণেশ হালদার নামে পরিচিত। সেই হাড়ি দু’বছর আগে সুকুমার মৃধার নামে হস্তান্তর করা হয়।

পিকে হালদার এবং সুকুমার মৃধা প্রকৃতপক্ষে অশোকনগরের দীর্ঘদিনের প্রতিবেশী।দুজনের দীর্ঘদিনের যোগসাজশেই বাংলাদেশে বিপুল আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশী হলেও পিকে এবং সকুমার জুটি স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং মন্ত্রীর সঙ্গে চরম ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছিলেন।

ইডি তদন্তে এসেছে, অশোকনগরের ভারতী পল্লী এলাকার পাশেই নবজীবন পল্লীতে বিলাসবহুল বাগানবাড়ি রয়েছে প্রশান্ত কুমার হালদারের আত্মীয় প্রণব কুমার হালদারের। তার পাশেই আরেকটি বাগান বাড়ি সুকুমার মৃধার। মাছ ব্যবসায়ী পরিচয় সুকুমার মৃধা এলাকায় পরিচিত। তার আর্থিক সঙ্গতি নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে।

মনে করা হচ্ছে সঞ্জয় মৃধার মারফত উত্তর ২৪ পরগনার কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিকের সঙ্গে দহরম মহরম হয় পি কে হালদারের। বাংলাদেশে যেমন টাকা ছড়িয়ে নিজের প্রভাব বাড়িয়েছিল পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গেও একই পথ নেয়। ফলে নিশ্চিন্তে তার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিরাপদ স্থানে ঢুকে গিয়েছে।