পাকিস্তানকে হারিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তাঁরা। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যে কতখানি পতনের কারণ হিসেবে ফুটে উঠতে পারে ; তাঁর প্রমান হাতেনাতে পাচ্ছে বাংলাদেশ। সদ্যই ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ হারের পর এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও হারের মুখ দেখতে হল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। চলতি বাংলাদেশ- দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মিরপুর টেস্টে একদিন বাকি থাকতেই প্রথম টেস্ট হারলেন শান্ত- লিটন- মুশফিকুররা। শুরুতে কিছুটা আশা জাগালেও শেষমেশ রাবাডা- মহারাজদের দাপটে সাত উইকেটে বাংলাদেশকে পরাস্ত করেন আফ্রিকানরা (South Africa vs Bangladesh Series 2024)।
এদিন মিরপুরে চতুর্থ দিন সকালে বাংলাদেশের ইনিংস টিকেছে মাত্র ৪.৫ ওভার। ৮৫ ওভারে ৭ উইকেটে ২৮৩ রানে তৃতীয় দিন শেষ করা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ৮৯.৫ ওভারে ৩০৭ রানে। শেষমেশ প্রোটিয়াদের জয়ের জন্য মাত্র ১০৬ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছেন শান্ত এন্ড কোম্পানি। পরিসংখ্যান বলছিল, টেস্টে প্রতিপক্ষকে ২০৪ রানের কম লক্ষ্য দিয়ে বাংলাদেশ কখনো জিততে পারেনি। আর শেষমেশ তাই হয়েছে। একপেশে লড়াইয়ে হার মেনেছে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা।
Victory for the Proteas! 🙌🏏
The boys have clinched the first Test against Bangladesh by 7 wickets, sealing the win with a dominant all-round performance! 💪
🇿🇦 A fantastic start to the series—onwards and upwards from here! 🏏🚀#WozaNawe #BePartOfIt #BANvsSA pic.twitter.com/zRQBye7min
— Proteas Men (@ProteasMenCSA) October 24, 2024
দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের লড়াকু ৯৭ ও জাকের আলীর ৫৮ রানে বেশ কিছুটা হলেও ম্যাচের রাশ ধরে রেখেছিল বাংলাদেশ। এরপরেই বল হাতে জ্বলে ওঠেন প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা।মিরপুর টেস্টে মোট ৭২ রানে ৯ উইকেট নিয়েছেন এই আফ্রিকান স্পিডস্টার। এর মধ্যে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট, যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেরা বোলিং। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ১৫তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন রাবাদা।
মিরপুরে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে মাত্র ৩০৭ রানে অলআউট হন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ১০৬ রানের। এই ক্ষুদ্র লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে দক্ষিণ আফ্রিকাও বেশি সময় নেয়নি। ২২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যান তাঁরা। ৫২ বলে ৪১ রান করেন টনি দে জর্জি। ৩৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন ত্রিস্তান স্টাবস। ২৭ বলে ২০ রান করে তাইজুল ইসলামের বলে বোল্ড হন মার্করাম। বাংলাদেশের হয়ে এই টেস্টে স্মরণীয় বলতে এই তাইজুলই রয়েছেন। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া তাইজুল এই টেস্টে মোট ১৬৫ রানে ৮ উইকেট নিলেন।
ঋদ্ধি-শামি নন, এই দুই তারকাকেই নিলামে ধরে রাখার ইঙ্গিত গুজরাটের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই টেস্টে হারের পর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় আরও বেশি পিছিয়ে পড়ল বাংলাদেশ। যদি এই সিরিজটি শেষপর্যন্ত হারের মুখে পরে তাঁরা তাহলে এবছরের মতো ফাইনাল খেলার স্বপ্ন একপ্রকার স্বপ্নই রয়ে যাবে তাঁদের কাছে। আগামী মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবার দেশের মাটিতে সেই টেস্টে (South Africa vs Bangladesh Series 2024) কতখানি ঘুরে দাঁড়াতে পারেন শান্তরা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
পুনে টেস্টে লায়ন-আন্ডারসনকে ছাপিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন অশ্বিন
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১০৬ ও ৩০৭ (মিরাজ ৯৭, জাকের ৫৮, মাহমুদুল ৪০, মুশফিক ৩৩, নাজমুল ২৩, নাঈম ১৬; রাবাদা ৬/৪৬, মহারাজ ৩/১০৫, মুল্ডার ১/৪০)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩০৮ ও ১০৬/৩ (জর্জি ৪১, স্টাবস ৩০*, মার্করাম ২০, বেডিংহাম ১২; তাইজুল ৩/৪৩, হাসান ০/১২, মিরাজ ০/১৩, নাঈম ০/২০)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: কাইল ভেরেইনা (দক্ষিণ আফ্রিকা)