পুনে টেস্টে লায়ন-আন্ডারসনকে ছাপিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন অশ্বিন

ক্রিকেটবিশ্বে বোলারদের সারাজীবনই পিছনের সারিতে রাখা হয়। লাল বলের ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স করলেও প্রচারের আলোকে ‘অটোমেটিক চয়েস’ হয়ে যান ব্যাটাররা। তবে বেশ কিছু বছরের খতিয়ান…

ক্রিকেটবিশ্বে বোলারদের সারাজীবনই পিছনের সারিতে রাখা হয়। লাল বলের ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স করলেও প্রচারের আলোকে ‘অটোমেটিক চয়েস’ হয়ে যান ব্যাটাররা। তবে বেশ কিছু বছরের খতিয়ান তুলে দেখলে লক্ষ্য করা যাবে এই প্রথাগত চিত্রটি ধীরে ধীরে পরিবর্তনের রূপ নিচ্ছে। আর এই ছন্দ ভাঙার কারিগর হিসেবে ভারতের হয়ে প্রতিনিয়ত যিনি নিজেকে মেলে ধরছেন তাঁর নাম রবিচন্দ্রন অশ্বিন। চলতি ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টেস্টে কিউয়ি ব্যাটিংকে ধ্বংস করার পাশাপাশি বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি (Ravichandran Ashwin WTC Most Wickets IND vs NZ)।

বর্তমানে পুনের এমসিএ স্টেডিয়ামে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড প্রথমে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম দিনে নিউজিল্যান্ড ভালো শুরু করলেও , কিন্তু ভারতীয় স্পিনার অশ্বিনের অসাধারণ বোলিংয়ে ম্যাচের গতিপথ বদলে যায়। অশ্বিন তার প্রথম স্পেলে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথামকে (১৫) প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে ভারতের জন্য প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে তিনি উইল ইয়ংকে (১৮) আউট করেন, যা ভারতকে প্রথম সেশনে এগিয়ে দেয়। এছাড়াও লাঞ্চের পর একপ্রকার ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কিউয়ি ওপেনার কনওয়েকেও (৭৬) ফেরান অশ্বিন।

   

পুণে টেস্টের প্রথম সেশনে ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেওয়ার মাধ্যমে আর অশ্বিন ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বাধিক উইকেট শিকারী বোলার হিসেবে ইতিহাস গড়েন। তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করতে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্পিনার নাথান লায়নকে পেছনে ফেলেছেন। লায়নের নাম ৪৩ ম্যাচে ১৮৭টি উইকেট ছিল, কিন্তু অশ্বিন মাত্র ৩৯টি ম্যাচে ১৮৮টি উইকেট নিয়ে এই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই আসরে দাপটের সঙ্গে পারফর্ম করে অশ্বিন ভারতের বোলিং আক্রমণের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সফল স্পিনার হিসেবে গড়ে তুলেছে। পুণে টেস্টে তার বোলিং দায়িত্ব শুরু হওয়ার পরই ভারতীয় দলের জন্য বড় সাফল্য আসতে শুরু করে, বিশেষ করে কিউই অধিনায়ককে আউট করার মাধ্যমে।

গম্ভীরের আস্থাভাজন হয়েও দ্বিতীয় টেস্টে ‘ব্রাত্য’ রাহুল

পুণে টেস্টের প্রথম সেশনে টম ল্যাথামকে (Tom Latham) আউট করে অশ্বিন তার প্রথম উইকেট তুলে নেন, এরপর তিনি দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে উইল ইয়ংকে ফিরিয়ে দেন। অধিনায়ক রোহিত শর্মার কৌশলগত সিদ্ধান্তে, অশ্বিনকে সেশনের সপ্তম ওভারে আক্রমণে আনা হয়, এবং তার বোলিংয়ে ভারতীয় দল প্রথম সেশনেই বড় সাফল্য পায়। অশ্বিনের অসাধারণ বোলিং কিউই ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলে দেয়, যা ম্যাচে ভারতের প্রভাব আরও বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও লাঞ্চের পর অশ্বিনকে ফেরত আনেন রোহিত এবং তিনি ফের অধিনায়কের মান রেখে কনওয়েকে ফেরত পাঠান। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। কিউয়িদের হয়ে তরুণ ব্যাটার রচিন রবীন্দ্র (৩৩) এবং ড্যারিয়েল মিচেল (৫) অপরাজিত হয়ে ক্রিজে টিকে আছেন। (সমস্ত স্কোরবোর্ডের আপডেট এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)

ঋদ্ধি-শামি নন, এই দুই তারকাকেই নিলামে ধরে রাখার ইঙ্গিত গুজরাটের

ব্যাঙ্গালোর টেস্টে কার্যকরী না হলেও, পুনে টেস্টের প্রথম দিনে নিউজিল্যান্ডের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের বিপরীতে ভারতের স্পিন আক্রমণ বিশেষভাবে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। অশ্বিনের উইকেট শিকারের পাশাপাশি (Ravichandran Ashwin WTC Most Wickets IND vs NZ) ভারতের বোলাররা নিয়মিত চাপ সৃষ্টি করে রেখেছেন। সবমিলিয়ে পুনের পিচে স্পিনারদের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে এবং অশ্বিনের বোলিং ভারতের জয়ের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করছে।