শাহীন আফ্রিদি এবং স্মৃতি মান্ধানা ICC বর্ষসেরা ক্রিকেটার ২০২১ নির্বাচিত হয়েছেন

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) পাকিস্তানি পেসার শাহীন আফ্রিদিকে ICC বর্ষসেরা পুরুষ ক্রিকেটার ২০২১’র জন্য স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফির প্রাপক হিসেবে ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, ২০২১ সালের…

ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) পাকিস্তানি পেসার শাহীন আফ্রিদিকে ICC বর্ষসেরা পুরুষ ক্রিকেটার ২০২১’র জন্য স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফির প্রাপক হিসেবে ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে, ২০২১ সালের ICC মহিলা ক্রিকেটারের জন্য রাচেল হেইহো ফ্লিন্ট ট্রফির প্রাপক হিসাবে ভারতীয় ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।

ICC’র এক প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফ্রিদি ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটে ২০২১ দুর্দান্ত কেটেছে। তিনি ৩৬ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ২২.২০ গড়ে ৭৮ উইকেট নিয়েছেন। খেলার টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে তার অবদান ছিল অসাধারণ। ICC পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শাহীন আফ্রিদি ছয় ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে শক্তিশালীভাবে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছে দেয়। টেস্ট ফর্ম্যাটে, আফ্রিদি ধারাবাহিক ছিলেন এবং মাত্র ৯ ম্যাচে ১৭.০৬ গড়ে ৪৭ উইকেট শিকার করেছে।

পাক পেসারের স্মরণীয় পারফরম্যান্স ছিল ICC
পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে হাই স্টেক খেলায়। শাহীন আফ্রিদি ওই ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। যার মধ্যে রয়েছে রোহিত শর্মা এবং কেএল রাহুলের উইকেট এবং ডেথ ওভারে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির উইকেট।

ICC’র এমন প্রেস্টিজিয়ার্স পুরস্কার প্রাপক হিসেবে নিজের নাম ঘোষণার প্রতিক্রিয়াতে শাহীন আফ্রিদি বলেছেন, “আইসিসি বর্ষসেরা পুরুষ ক্রিকেটারের জন্য সম্মানজনক স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি জিতে প্রথম পাকিস্তানি ক্রিকেটার হয়ে আমি সত্যিই সম্মানিত এবং সৌভাগ্য বোধ করছি। আমি সবসময় পাকিস্তানের জন্য অনন্য এবং বিশেষ কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। এই পটভূমিতে, আমি উচ্ছ্বসিত এবং আমাকে এই সম্মান দেওয়ার জন্য সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ জানাই।

পাক পেসার বলেন,”আমি কিংবদন্তিদের একটি গ্যালাক্সিতে যোগ দিতে পেরে নিজেকে ধন্য বোধ করছি যারা আগে গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি জিতেছেন। আমি এই ক্রিকেটারদের টেম্পা দেখে বড় হয়েছি এবং এখন তাদের সাথে একই সাড়িতে আবদ্ধ হওয়া আমার জন্য, আমার পরিবার, আমার সতীর্থদের এবং আমার দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

এখানেই থেমে না থেকে শাহীন আফ্রিদি আরও বলেন,”এই পুরষ্কারটি একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং বছরে আমরা একটি গ্রুপ হিসাবে যে উন্নত মানের ক্রিকেট খেলেছি তার প্রমাণ। এর জন্য ধারাবাহিকভাবে অনেক মানসিক এবং শারীরিক দৃঢ়তার প্রয়োজন, এবং আমি আনন্দিত যে আমরা সবাই আমাদের ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য উন্নত মান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন,”পাকিস্তানের হয়ে আমার প্রতিটি পারফরম্যান্সই উপভোগ্য এবং স্মরণীয় ছিল এবং তা সম্ভব হয়েছে আমার সতীর্থদের সমর্থনের মাধ্যমে। কিন্তু আমার কাছে, ২০২১ সালের  ICC’র পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে তিনটি উইকেট এবং জ্যামাইকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে আমি যে ১৮ উইকেট নিয়েছিলাম, তা হল অসাধারণ পারফরম্যান্স।

সঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পাকিস্তানের পেস বোলার শাহীন আফ্রিদি মনে কোনও দ্বিধা না রেখে বলেন,”আমি প্রত্যাশার সাথে ২০২২’র দিকে তাকিয়ে আছি এবং আশা করি দিনের শেষে আমি পাকিস্তানের সাফল্যে নিয়মিত অবদান রাখতে সক্ষম হব, এটি নির্ভর করে আমরা কীভাবে একটি দল এবং ইউনিট হিসাবে পারফর্ম করি।”

অন্যদিকে, ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাট জুড়ে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানার ২০২১ সেশন দুর্দান্ত কেটেছে। মান্ধানা ২২ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩৮.৮৬ গড়ে ৮৫৫ রান করেন, যার মধ্যে একটি সেঞ্চুরি এবং ৫ হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের সিরিজে যেখানে ভারত ঘরের মাঠে ৮ ম্যাচের মধ্যে দুটি জিতেছিল, মান্ধানা দুটি জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারত ১৫৮ রান তাড়া করার ফলে স্মৃতি মান্ধানা অপরাজিত ৮০ রান করেন যা ওই সিরিজ সমতা আনতে সাহায্য করেছিল এবং শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের জয়ে অপরাজিত ৪৮ রান করেন মান্ধানা।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র হওয়া একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসেও স্মৃতি মান্ধানা ৭৮ রান করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মান্ধানা ৮৬ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টে একটি দুর্দান্ত শতরান রয়েছ , যা তার কেরিয়ারের প্রথম এবং ওই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পান।

ICC’র সম্মান প্রাপ্তির খবরে স্মৃতি মান্ধানা নিজের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতে বলেন, “আইসিসি বর্ষসেরা মহিলা ক্রিকেটার ২০২১’র জন্য মর্যাদাপূর্ণ রাচেল হেইহো ফ্লিন্ট ট্রফি পাওয়ার জন্য আমি সত্যিই সম্মানিত। আমি আমার সতীর্থ, আমার কোচ, আমার পরিবার, বন্ধু এবং ভক্তদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমার সম্ভাবনার ওপর বিশ্বাস রেখেছিল এবং এই অভিযানে আমাকে সমর্থন করেছিল। একটি ব্যতিক্রমী এবং কঠিন বছরে ক্রিকেটের গ্লোবাল গভর্নিং বডির কাছ থেকে এই ধরনের উচু শ্রেণীর স্বীকৃতি আমার খেলাকে আরও উন্নত করতে এবং টিম ইন্ডিয়ার সামনের সাফল্যে অবদান রাখতে অনুপ্রাণিত করবে।

মান্ধানার আরও প্রতিক্রিয়া, “আমি নিউজিল্যান্ডে আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২২ জেতার বিষয়ে স্পষ্ট ফোকাস সহ ২০২২’র জন্য উন্মুখ হয়ে আছি কারণ আমরা একটি দল এবংইউনিট হিসাবে প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি।”