Rafiq Khan : ইতিহাস গড়ে ছুতোরের ছেলে রাতারাতি হয়েছিলেন নায়ক

“হয়তো আমাকে কারো মনে নেই … এই মাটি এই জন্ম আমার।” রফিক খানকে (Rafiq Khan) হয়তো অনেকের মনে নেই। কাঠমিস্ত্রীর ছেলে রাতারাতি হয়েছিলেন ভারতের নায়ক।…

“হয়তো আমাকে কারো মনে নেই … এই মাটি এই জন্ম আমার।”

রফিক খানকে (Rafiq Khan) হয়তো অনেকের মনে নেই। কাঠমিস্ত্রীর ছেলে রাতারাতি হয়েছিলেন ভারতের নায়ক। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছিলেন তিনি। ভোপালের (Bhopal) রফিক এখন বিস্মৃত প্রায় একজন।

কাঠের কাজ করতেন রফিক খানের বাবা। এক সময় রফিক নিজেও করেছেন ছুতোরের কাজ। বাড়িতে চাল-ডাল ছিল বাড়ন্ত। তথাকথিত পড়াশুনা করতে পারেননি তিনি। দাবা খেলতে খুব ভালবাসতেন। কীভাবে খেলতে হয় শিখেছিলেন একটু একটু করে। নিজের অজান্তেই হয়ে উঠেছিলেন দক্ষ দাবাড়ু।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

এই রফিক খান ভারতের হয়ে সর্বপ্রথম চেজ অলিম্পিয়াডে পদক জিতেছিলেন। সাদা-কালো বোর্ডের প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল আমৃত্যু। ভারতের ইতিহাসে অন্যতম সেরা দাবাড়ুদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এবং অবশ্যই পথিকৃৎ।

Rafiq Khan
পদক জিতেছিলেন রফিক খান।

১৯৭৬ সালে প্রথম আলোচনায় উঠে এসেছিলেন খান পরিবারের ছেলে। সকলে বিস্মিত করে জিতেছিলেন ন্যাশনাল বি চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৩/১৫ স্কোর বিজয়ীর মুকুট পরেছিলেন তিনি। এরপর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হতে বেশি সময় লাগেনি তাঁর।

দাবার বোর্ডে মাইল ফলক গড়লেও অর্থনৈতিক অবস্থা অবস্থা ক্রমেই তলানিতে ঠেকছিল। মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে কাঠের কাজ করতেন। পারিশ্রমিক পেতেন অল্প। সংসারের কথা ভাবতে গিয়ে মন বসাতে পারছিলেন না দাবার ঘুঁটিতে।

একটি পত্রিকায় রফিক খানকে লেখালেখি হয়েছিল। ম্যাগাজিনটি চোখে পড়েছিল তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজের। তিনি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত। ভারত হেভি ইলেকট্রিকালস লিমিটেডে চাকরি পেলেন রফিক।

বড় কোম্পানিতে চাকরি, বেতন বেড়েছিল আগের থেকে। পরিবারে অর্থনৈতিক চাপ থেকে অনেকটা মুক্ত হতে পেরেছিলেন তিনি। মন দিতে পেরেছিলেন দাবায়। যার ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল ১৯৮০ সালে। মাল্টায় রৌপ্য পদক জয় রফিকের। প্রথম ভারতীয় হিসেবে দাবা অলিম্পিয়াডে পদক অর্জন।

Rafiq Khan
আমরাও পারি, বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন মজদুররা।

সাড়া পড়ে গিয়েছিল দেশে। রফিকের কীর্তি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল দেশে। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন নতুন করে। রফিক খানের জীবন-গল্প তাতিয়ে দিয়েছিল আপামর ভারতবাসীকে। সাধারণ শ্রমিকও যে কিছু করে দেখাতে পারেন সেটা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন ভোপালের গ্রামের ছেলেটি।

Rafiq Khan
রফিক খানকে প্রদান করা সার্টিফিকেট।

রফিক যখন বাড়ি ফিরেছিলেন তখন তিনি হিরো। নায়কের সম্মানে বরণ করে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শেষ বয়সে যখন রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তখনও দাবার জন্য ভেবেছিলেন নিরন্তর।