Kuntala Ghosh Dastidar : ব্যতিক্রমী এক কাজে ব্যস্ত এখন কুন্তলা

তার সময়ে নিজে ছিলেন উজ্জ্বল এক তারকা ফুটবলার। ভারতের জার্সিতে শুধু খেলা নয়, ১৯৮২-র মহিলাদের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন! তখন ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের…

Kuntala Ghosh Dastidar

তার সময়ে নিজে ছিলেন উজ্জ্বল এক তারকা ফুটবলার। ভারতের জার্সিতে শুধু খেলা নয়, ১৯৮২-র মহিলাদের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন! তখন ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের ঔজ্জ্বল্য ছিল নজরকাড়া। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দু’বার রানার্স, একবার তৃতীয় স্থানে শেষ করা। আরও বিরল পালক তার মুকুটে স্থান পেয়েছে।  শুক্লা দত্ত আর শান্তি মল্লিকের সঙ্গে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে এশীয়ান অলস্টার দলে নির্বাচিত হওয়ার বিরল সম্মান। খেলা ছাড়ার পর রাজ্য মহিলা দল, এমনকী জাতীয় দলেরও কোচ হয়েছিলেন। তাতেও থামা হয়নি কুন্তলা ঘোষ দস্তিদারের (Kuntala Ghosh Dastidar )। কোচিং ডিগ্রি অর্জনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

Kuntala Ghosh Dastidar

আর এখন? কুন্তলা ঘোষ দস্তিদার ভারতে কোচেদের মাস্টারমশাই! ‘ডি’ আর ‘ই’ লাইসেন্সধারী কোচেদের কোচিং করান কুন্তলা। গত সাত বছরে অন্তত ৫০০ জন কোচ কুন্তলার কাছে কোচিংয়ের ক্লাস করেছেন। এখানেই থেমে যেতে পারত কুন্তলার গৌরবময় ফুটবল ও কোচিং জীবনের যাত্রা। কিন্তু থামেননি রেলের চাকরি জীবন থেকে সম্প্রতি অবসর নেওয়া ৬০ বছর বয়সের এই তরুণী! যে মেয়ে দুর্গাপুজোর সময় অঞ্জলি দেওয়ার আগে একবার মাঠ ঘুরে আসেন তার থামার কথাও হয়ত ছিল না। এক ব্যতিক্রমী কাজে নেমেছেন তিনি।

কলকাতার এক যৌনপল্লিতে বেড়ে ওঠা মেয়েদের সুস্থ জীবনে ফেরানোর লড়াই শুরু হয়েছে কুন্তলার। কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে একটি সংস্থা গড়েছেন। নাম ‘বন্ধু কালেকটিভ’। দু’একমাস হবে সংস্থা অফিসঘর পয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে তার কাছে জড় হয়েছে প্রায় ২০জন মেয়ে। কুন্তলা বললেন, “এদের ভীষণ ইচ্ছে আছে। এরা খেলতে চায়। ফুটবলের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে যদি এরা সুস্থজীবনে ফিরতে পারে সেটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হবে। শুধু যৌনপল্লি নয়, শহরে অনেক প্রান্তিক মানুষ আছেন যাদের তীব্র লড়াই অর্থকষ্টের বিরুদ্ধে। যাদের ছেলেমেয়েদের দু’বেলা ভালভাবে ভাত জোটে না, সেরকম প্রায় ২৫ জন মেয়েও বন্ধু কালেকটিভ পরিচালিত ফুটবল স্কুলে কুন্তলা ও তার সহকারী কোচেদের কাছে ট্রেনিং করছে।
ফুটবল কুন্তলাকে অনেক কিছু দিয়েছে। কুন্তলা ফুটবলের মাধ্যমেই সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দিতে চাইছেন!