ISL: জামশেদপুরকে চ্যাম্পিয়ন করে দৌড় থামাতে চান মোহনবাগান স্কুলের এই বাঙালি ফুটবলার

তাঁর গোলেই এবার আইএসএলে (ISL) লিগ শিল্ড ঘরে তুলল জামশেদপুর এফসি। রাতারাতি লাইমলাইটে চলে এলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন আসানসোলের তরুণ তারকা ঋত্বিক…

তাঁর গোলেই এবার আইএসএলে (ISL) লিগ শিল্ড ঘরে তুলল জামশেদপুর এফসি। রাতারাতি লাইমলাইটে চলে এলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন আসানসোলের তরুণ তারকা ঋত্বিক দাস। এটিকে মোহনবাগানকে ১-০ গোলে হারিয়ে লিগের এক নম্বর জায়গাটা পাকা করে নেয় ইস্পাতনগরীর দল।

লিগ শিল্ড জয়ের ফলে আগামী মরসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে জামশেদপুর। বাগানের বিরুদ্ধে লিগের শেষ ম্যাচে ৫৬ মিনিটের মাথায় গ্রেগ স্টুয়ার্টের পাস নিয়ে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের সামনে থেকে সোজা গোলে যে শট নেন ঋত্বিক, তা আটকাতে পারেননি সবুজ-মেরুন দুর্গের শেষ প্রহরী অমরিন্দর সিং। সঙ্গে সঙ্গে হাজার ওয়াটের হাসি ফোটে ঋত্বিকের মুখে।

তাঁর গোলে দলের লিগের সেরা হওয়াটা যে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো, তা জানিয়ে ঋত্বিক বলেন, ‍‘মরসুম শুরু হওয়ার সময় থেকেই এই জায়গায় পৌঁছনোটা ছিল আমার স্বপ্ন। তাই দারুন অনুভূতি হচ্ছে। এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এটিকে মোহনবাগানের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে গোল করতে পারাটা আমার কাছে বিশেষ ব্যাপার।’ এই মোহনবাগান ক্লাবের ফুটবল স্কুলেই এক সময়ে পেশাদার ফুটবলের তালিম নিয়েছিলেন ঋত্বিক। সেই ক্লাবের বিরুদ্ধেই গোল এবং জামশেদপুরকে লিগ শিল্ড এনে দেওয়ার অনুভূতিটা যে খুব ‘স্পেশাল’, তা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই ঋত্বিকের। বলেন, ‍‘এখন আমি জামশেদপুর এফসি-র খেলোয়াড়। তাই এই দল নিয়েই শুধু ভাবি। তবে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করতে পারাটা আমার কাছে অবশ্যই বিশেষ ব্যাপার।’

কলকাতার ফুটবলে ঋত্বিক অভিযান শুরু করেন কাস্টমসের হয়ে। কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনেও খেলেন তিনি। কালীঘাট এমএস-এর হয়ে তিনি প্রিমিয়ার ডিভিশন গ্রুপ ‘বি’-তে খেলেন। সেখান থেকেই রিয়াল কাশ্মীর তাঁকে ডেকে নেয় আই লিগে খেলার জন্য। ২০১৮-র ডিসেম্বরে আই লিগে অভিষেক হয় তাঁর। গত মরসুমের আগে তিনি কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দেন, কিন্তু চারটির বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। এই মরসুমের আগের জামশেদপুরে যোগ দেন ও তাঁকে নিয়মিত খেলার সুযোগ দেন আওয়েন কোইল। তার ফল তিনি পেলেন লিগের শেষ পর্যায়ে। শেষ ছয় ম্যাচে চারটি গোল করেছেন ঋত্বিক। করিয়েছেন একটি। 

এই মুহূর্তে ফুটবল জীবনের সেরা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন ২৫ বছর বয়সি মিডফিল্ডার। এই ফর্মের জন্য তিনি কৃতিত্ব দেন দলের স্কটিশ কোচ আওয়েন কোইলকে। বলেন, ‍‘আমাদের কোচ আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে অনেক কিছু চান। অবশ্য প্রত্যেক ফুটবলারকে তার সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসও জোগান। ওঁর জন্যই প্রতি ম্যাচে আমরা উন্নতি করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি এবং ভালো খেলি।’ এবার সামনে নক আউট পর্ব। আরও কঠিন লড়াই। যে লড়াইয়ে এক মুহূর্তের ভুলে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নক আউট পর্বে খেলা নিয়ে ঋত্বিক বলছেন, ‍‘এবারই প্রথম আইএসএল সেমিফাইনালে উঠেছে আমাদের দল। লিগ শিল্ডও আমরা প্রথমবারই জিতেছি। আর কোনও বার এর জন্য লড়াই করার জায়গাতেও আসতে পারেনি জামশেদপুর। আমাদের প্রত্যেকের কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। চেষ্টা করব, সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়নও হওয়ার।’