Inspiring Feat: পুকুরে সাঁতার অভ্যাস করে জোড়া সোনা জয় সিকিউরিটি গার্ডের মেয়ে স্নিগ্ধার

Inspiring Feat: বাংলার আনাচেকানাচে লুকিয়ে থাকে বহু প্রতিভা। কলকাতার মধ্যেও রয়েছেন এমন অনেকে যারা আপাতত প্রচারের আলোকের বাইরে। তেমনই একজন স্নিগ্ধা ঘোষ (Snigdha Ghosh)। যিনি…

Security Guard's Daughter, Snigdha Ghosh

Inspiring Feat: বাংলার আনাচেকানাচে লুকিয়ে থাকে বহু প্রতিভা। কলকাতার মধ্যেও রয়েছেন এমন অনেকে যারা আপাতত প্রচারের আলোকের বাইরে। তেমনই একজন স্নিগ্ধা ঘোষ (Snigdha Ghosh)। যিনি সম্প্রতিতম খেলো ইন্ডিয়ার আসরে জিতেছেন তিনটে সোনার পদক, দু’টো রূপোর পদক।

মধ্যবিত্ত বাড়ির আর পাঁচজন মেয়ের মতো বেড়ে ওঠা। লেখাপড়ার ফাঁকে মাঝেমধ্যে শখ পূরণের চেষ্টা। ধীরে ধীরে সাঁতারে পারদর্শী হয়ে ওঠেন স্নিগ্ধা ঘোষ। বাংলায় সাঁতার শিখে ক্যারিয়ার গড়ার চল খুব একটা নেই। সাঁতারু হিসেবে পদক জয় করার আগে স্নিগ্ধাকেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে বারংবার। পড়াশুনা, পারিবারিক, শারীরিক কারণে একটানা সাঁতার অভ্যাস করা হয়ে উঠছিল তাঁর। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেও প্রত্যাশা পূরণ করার মতো পারফরম্যান্স করতে পারছিলেন না। সেই সময় স্নিগ্ধা নিজেও হয়তো ভাবেননি ২০২৩ সালে পদক জিতবেন জাতীয় স্তরে।

   

“২০১৯-এ আমি প্রথম মেডেল পাই, ৪x১০০ রিলে ফ্রি স্টাইল। ব্যক্তিগত ইভেন্টে তখন সাফল্য পায়নি। তারপর দুটো বছর উৎরাই। লকডাউন, বাবার চাকরি চলে যাওয়া (২০২০-২১)। বাবা সাই-তে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতেন। সেখানে কিছু সমস্যার কারণে বাবার চাকরি সেই সময় ছিল না”, জানিয়েছেন স্নিগ্ধা।

২০২১ থেকে ‘২২, এই সময়কালে স্নিগ্ধার ক্যারিয়ারে কঠিন সময়। সিনিয়র কিংবা জাতীয় টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছিলেন না। এক দিকে সাঁতার, অন্য দিকে বোর্ডের পরীক্ষা। মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিক। পড়াশুনার চাপ ছিলই, সেই সঙ্গে সাঁতারে প্রত্যাশা পূরণ করার চাপ। ধাক্কা খেয়েছিল স্নিগ্ধার আত্মবিশ্বাস। সেখান থেকে বাউন্স ব্যাক।

“উচ্চমাধ্যমিক তারপর ঠাম্মা মারা যাওয়ার পর আবার গ্যাপ হয়। মে মাসে যখন আবার শুরু করি তখন ২ সপ্তাহ মতো গ্যাপ হয়ে যায়। স্টেট গেমসে স্কুলে ফার্স্ট হয়েছিলাম তিনটেতে। স্কুল ন্যাশনালে মেডেল পাই ফার্স্ট প্লেস। এক সপ্তাহের ডিউরেশনে সিনিয়র স্টেট হয়েছিল।” সিনিয়র স্টেটে রেকর্ড গড়েন স্নিগ্ধা ঘোষ। ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইল সিনিয়র ইভেন্টে ২০১৮ সালে গড়া রেকর্ড ভাঙেন তিনি।

স্নিগ্ধা ঘোষের উত্থানের পিছনে প্রশিক্ষক বিশ্বজিৎ দে চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য। স্নিগ্ধা জানিয়েছেন, তাঁর মনোবল যখন ভেঙে পড়েছিল তখন নিরন্তর সাহস যুগিয়েছেন বিশ্বজিৎ দে চৌধুররী। বাংলায় পেশাদার উপায়ে সাঁতার শেখার মতো পরিকাঠামো নেই। সেই অভাব পূরণ করার জন্য বিশ্বজিৎ দে চৌধুরী লেকটাউনের একটি পুকুরে ট্রেনিং করানোর ব্যবস্থা করেন। তাতেই কাজ হয়। জাতীয় স্তরে চারটি পদক জিতে নেন স্নিগ্ধা ঘোষ।

স্নিগ্ধা অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটির পড়ুয়া। ইংরেজি অনার্স। ইউনিভার্সিটি পাশে রয়েছে তাঁর। সাঁতারের অনুশীলন কিংবা কোনো ইভেন্টের জন্য সময় দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে।

স্নিগ্ধার বাবা গণেশ ঘোষ বলেছেন, “আমরা আগে থেকে সেরকম কিছু চাপিয়ে দিইনি। ও এখন সাঁতারের দিকে এগিয়েছে। সেদিকেই এগিয়ে যাক। যে বিষয়ে ভালো করছে সেটাই করুক। আমরা পাশে আছি।”