নয় উইকেট হারিয়েও ফলাফলহীন ভারত-বাংলাদেশের ওডিআই সিরিজ

মিরপুরে একটা টান টান ম্যাচেও কোনো ফলাফল হল না ভারত বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের এই ওডিআই সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল আজ। প্রথমটিতে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল…

মিরপুরে একটা টান টান ম্যাচেও কোনো ফলাফল হল না ভারত বাংলাদেশের। তিন ম্যাচের এই ওডিআই সিরিজের শেষ ম্যাচ ছিল আজ। প্রথমটিতে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল হারলেও পরেরটাতে জিতে সিরিজে সমতা ফেরায়। সেই সে সমতা ফিরলো, শেষ ম্যাচেও তার আর ফলাফল হলো না।

মাত্র চার উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান তোলে বাংলাদেশ। সেই ২২৪ রান তুলতেই হিমসিম খেয়ে গেল ভারতের ১১ জন ক্রিকেটর। ৯ উইকেট হারিয়েও জেতা ম্যাচ শেষে “ড্র” হয়ে গেল। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা । ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক সুলতানা (২৪) নিজে খুব বেশি করতে না পারলেও তাঁর দলের ওপেনাররাই ধীরে হলেও দলের অর্ধেকের বেশি রান তুলে দিয়ে যান।

ওপেনার শামিমা সুলতানা ৭৪ বলে ৫২ রান করেন। তবে ফারগানা হক ছিলেন শেষ অবধি। ১৬০ বলে অত্যন্ত ধৈর্য নিয়ে তৈরী করেন তাঁর ১০৭ রানের ইনিংসটি। শেষ ওভারের শেষ ডলে রান করে রে দেয় তাঁকে শেফালী বর্মা।

শামিমা চলে গেলে পরে তিনে অধিনায়ক নিজে আসেন এবং তারপর রিতু মণি (২)। তারপর ফারগানার সাথে ২২ বলে ২৩ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেন শোভনা মোস্তারি। চতুর্থ উইকেটে ৫৬ রানের একটি পার্টনারশিপও খরেন মোস্তারি এবং ফারগানা। ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৪ রান তোলে বাংলাদেশ।

ভারতের বোলারদের মধ্যে স্নেহ রানা দুটি ( শামিমা এবং নিগার সুলতানা) এবং দেবিকা বৈদ্য একটি (রিতু মণি) উইকেট নিয়েছিন। এদিকে ২২৫ রান তাড়া করতে নেমে ১১ রানের মাথায় শেফালী বর্মার (৪) উইকেট হারায় ভারত। মারুফা আখতার বলে মারুফা আখতারকেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

শেফালীর বর্মা যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সুলতানা খাতুনের বলে এলবিডাব্লু হয়ে ফিরে যান যশ্তিকা ভাটিয়া। কিন্তু তখনও লড়াই চালিচ্ছিলেন ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা (৮৫ বলে ৫৯)। ফাহিমা খাতুনের বলে ফিরে যান তিনিও।

ভারতের অধিনায়ক হরমনপ্রীত এলে কিছুটা আগ্রাসন আশা করে ভক্তরা। তবে সে আসায় জন ঢেলে ফিরে যান তিনিও। নাহিদা আখতারের একটি ফুল লেঙ্কথের বল হাঁটু গেড়ে বসে স্যুইপ মারতে গেলে বলটি এসে প্যাডে লাগে হরমনপ্রীতের। আম্পায়ার আউট দিলে হরমনপ্রীত বার বার বলেন যে বলে ব্যাট লেগেছিল তাঁর। অবিচলিত আম্পায়ার সিদ্ধান্ত না বদলালে নিরাশ হয়ে ফিথে যান তিনি।

ক্রিজে তখন হরলীন দেওল এবং সদ্য ব্যাট করতে আসা জেমাইমা রদ্রিজ। তারপরেই বৃষ্টিতে আটকে যায় ম্যাচ। প্রায় আধঘন্টা পর আবার শুরু হলে শুরু হয় আক্ষরিক অর্থে “শুধু যাওয়া আসা, স্রোতে ভাসার” খেলা। দেওল যাওয়ার পর কোনো পার্টনারশিপই তৈরী করতে পারেনি ভারতীয় দল। একা জেমিমা রদ্রিজ দাঁড়িয়ে ছিলেন শেষ অবধি। ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংসে একটিও বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি নেই।

৪১. ২ মাথায় রান আউট হয়ে যান হরলীন দেওল। ফাহিমা খাতুনের হাত থেকে বিদ্যুত বেসে বল এসে ফেলে দেয় স্টাম্পস। তখনও পিচে মাঝে দেওল। ফিরে যান তিনি, সমাপ্তি ঘটে ১০৮ বলে ৭৭ রানের ইনিংসটি। এর পরের ওভারেই ফিরে যান দিপ্তী শর্মাও। ঘারত সেই রাই রান আউট।

১০ রান বাকি থাকতে এলবিডাব্লু হন আমানজোত কর। হরমনপ্রীতের মতনই স্যুইপ মারতে গিয়ে বল মিস করে এলবিডাব্লু হন তিনি। পরের ওভার শুরু হতেই ফিরে যান স্নেহ রানা। নিজের করা বলই ডাইভ মেরে ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেন রানাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে একই ভাবে দেবিকা বৈদ্যকেও ফিরিয়ে দেন নাহিদা আখতার।

শেষ ওভারে তখন ৩ রান দরকার। প্রথম বলে এক রান নিয়ে জেমিমাকে স্ট্রাইক দিলেন মেঘনা। ফরে একটা বাউন্ডারিও মারেন মেঘনা। ৩ বলে ১ রান বাকি। প্রায় জিতে যাওয়া ম্যাচটার শেষে একপ্রকার “উইকেটাঞ্জলি” দিয়ে এলেন মেঘনা। একটা অফ স্টাম্পের বাইরের বল ম, রান নিতে লাগালেন ব্যাট। রান তো হলই না, উল্টে জমা পড়লেন কিপারের হাতে।

ফলাফলহীন ম্যাচ! ঘাতক কে? বাংলাদেশ বোলিং, নাকি ভারতের ব্যাটিং, নাকি বৃষ্টি?