গত মরশুমে আইএসএল শেষ হওয়ার পর থেকেই নতুন কোচের সন্ধান শুরু করে দিয়েছিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) শিবির। এক্ষেত্রে শুরু থেকেই উঠে আসছিল একাধিক হাইপ্রোফাইল নাম। যাদের মধ্যে ছিলেন সার্জিও লোবেরা, কার্লোস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat), অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস ও মানালো মার্কুইজ।
তবে গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই সকলকে পিছনে ফেলে কোচ হওয়ার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যায় স্প্যানিশ কোচ সার্জিও লোবেরা। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় বেঙ্গালুরু এফসির আইএসএল জয়ী কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাতকে দুই বছরের চুক্তিতে দলের দায়িত্বে আনে লাল-হলুদ শিবির। যা দেখে খুশি আপামর ইস্টবেঙ্গল জনতা।
কিন্তু জানেন কে এই কুয়াদ্রাত? কোচ হিসেবে ও বা কতটা সফল তিনি। জানা গিয়েছে, বার্সেলোনার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমি থেকে প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল এই স্প্যানিশ তারকার। তখন ১৯৭৮ সাল, হঠাৎ একদিন বছর দশেকের একটি ছেলে যোগদান করেন বার্সার এই অ্যাকাডেমিতে। নিজের যোগ্যতার দরুন সহজেই সুযোগ পেয়ে যান বার্সেলোনার যুবদলে। সেখানেই লেফট ব্যাক হিসেবে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেন কুয়াদ্রাত।
শুধু কি তাই, ১৯৮৬ ও ৮৭ সালে তার হাত ধরেই সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনার অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবল দল। এছাড়াও সিনিয়র দলের হয়ে ঘরের মাঠে অর্থাৎ ক্যাম্প ন্যুতে বেশ কয়েকটি ম্যাচ খেলেন তিনি। পাশাপাশি জাতীয় দলের জার্সিতে ও নিজের জাত চেনানোর সুযোগ পেয়েছিলেন এই স্প্যানিশ তারকা। তবে বছর তিরিশের মাথায় গুরুতর চোটের কবলে পড়ায় ফুটবলার হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েন তিনি। তারপর শুরু এক নতুন অধ্যায়।
কিছু সময় পরেই বার্সেলোনার যুব দলের দায়িত্বে আসেন কুয়াদ্রাত। তারপর কিছুদিন গাভার ইয়ুথ টিমের দায়িত্ব সামলানোর পর জনপ্রিয় ক্লাব গালতাসারের টেকনিক্যাল টিমের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন কার্লোস কুয়াদ্রাত। বছর কয়েক পর সেই চাকরি ছেড়ে চলে আসেন ভারতে। তারপর বেঙ্গালুরু এফসির দায়িত্ব পান তিনি। সেখানে অ্যালবার্ট রোকার সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন এই তারকা। তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফলেই গত ২০১৭ সালে অতিসহজেই ফেডারেশন কাপ জেতেন সুনীলরা। এরপর ২০১৮-১৯ সালে কুয়াদ্রাত জামানায় আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয় বেঙ্গালুরু এফসি। সেবার টানা এগারোটি ম্যাচে অপরাজিত ছিল সুনীল ব্রিগেড। এমনকি তার দৌলতেই এফসি কাপের কোয়ালিফায়ারে পারো এফসি কে ৯-১ গোলে পরাজিত করে জিন্দালের বেঙ্গালুরু।
তারপরেই ভারত ছেড়ে সাইপ্রাসে চলে যান কুয়াদ্রাত। সেখানে অ্যারিস লিমাতে তে কোচিং করান তিনি। পরবর্তীতে ডেনমার্কের মিডটিজিল্যান্ডের ও দায়িত্বে ছিলেন কুয়াদ্রাত। সেখান থেকেই ফের ভারতে ফেরার ডাক পেলেন এই স্প্যানিশ কোচ। শেষ পর্যন্ত রাজি ও হলেন তিনি। এবার ইমামি ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব সামলাবেন ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ। তার হাত ধরে আদৌ কতটা ছন্দে ফেরে কলকাতার এই প্রধান এখন সেটাই দেখার।