বেলগাছের ডাল থেকে বালিকা নেমে স্থান নেন শ্যামাসুন্দরীর গর্ভে, জন্ম হয় শ্রীশ্রী মায়ের

জগৎমাতা শ্রীমা সারদাদেবী আবির্ভূতা হয়েছিলেন জয়রামবাটির শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সহধর্মিণী শ্যামাসুন্দরী দেবীর কোল আলো করে। বাংলায় তখন হেমন্তের অবসান ও পৌষের শুরু। কৃষক কুল ধান্যলক্ষ্মীকে…

story behind ma sarada birthday

জগৎমাতা শ্রীমা সারদাদেবী আবির্ভূতা হয়েছিলেন জয়রামবাটির শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সহধর্মিণী শ্যামাসুন্দরী দেবীর কোল আলো করে। বাংলায় তখন হেমন্তের অবসান ও পৌষের শুরু। কৃষক কুল ধান্যলক্ষ্মীকে গৃহে এনে নবান্ন উৎসব ও মাতা লক্ষ্মীর আহ্বানে মগ্ন- ঠিক সেই সময় মায়ের আবির্ভাব এই ধরণীতে । ১২৬০ বঙ্গাব্দের ৮ পৌষ ( ইং ১৮৫৩, ২২ শে ডিসেম্বর ) বৃহস্পতিবার কৃষ্ণ পক্ষের সপ্তমী তিথি, রাত্রি ২ দণ্ড ৯ পল সময়ে ( দুর্গাপুরী দেবী লিখেছেন সন্ধ্যার পর) আবির্ভূতা হলেন জগত জননী শ্রীমা সারদাদেবী ।

শ্রীশ্রীমায়ের আবির্ভাবের পূর্বে তাঁর মাতা ও পিতার সাথে একটি দিব্যলীলা ঘটেছিলো। একদা শিহড় গ্রামে পিতৃগৃহে অবস্থান কালে শ্রীমায়ের গর্ভধারিণী জননী উদারময় রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধকারে বিল্ব বৃক্ষের নীচে শৌচে যান – ঠিক সে সময় বিল্ব বৃক্ষের শাখা হতে এক ক্ষুদ্র বালিকা নেমে এসে শ্যামাসুন্দরী দেবীর গলা জড়িয়ে ধরেন । ভয় পেয়ে শ্যামাসুন্দরী দেবী মূর্ছা গেলেন । মূর্ছা ভঙ্গের পর তিঁনি অনুভব করলেন ঐ ক্ষুদ্র বালিকা তাঁহার গর্ভে প্রবেশ করেছে । অপরদিকে শ্রীমায়ের পিতা শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় একদা স্বপ্নে মাতা লক্ষ্মীর দর্শন লাভ করেন । এক হেমাঙ্গী স্বর্ণ আভূষণ ভূষিতা বালিকাকে স্বপ্নে দেখেন। সেই দিব্যা বালিকাকে পরিচয় জিজ্ঞেস করতে বলেন- “এই আমি তোমার কাছে এলুম।” নিদ্রা ভঙ্গের পর শ্রী রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বুঝতে পারলেন- সেই বালিকা আর কেউ নয় – স্বয়ং ভগবতী ।

বিশ্বজননী মা সারদা । একাধারে তিঁনি ঠাকুরের লীলাশক্তি অপরধারে বিশ্বমাতা । সকলকে দিয়েছেন মাতৃস্নেহ । পুরাণ শাস্ত্রে দেবীশক্তির মাতৃত্ব স্বরূপ বেদব্যাস মুনি বর্ণনা করে গেছেন, শ্রীমায়ের মধ্যে সেসব স্বরূপ ছিলো প্রকাশিতা। নিজ মুখেই তিনি বলেছেন- “আমি সত্যিকারের মা; গুরুপত্নী নয়, পাতানো মা নয়, কথার কথা মা নয়- সত্য জননী।”