Pink Salt: আলেকজান্ডারের ঘোড়া বিস্ময়কর আবিষ্কারক! মানুষ পেয়েছে পুষ্টিকর গোলাপি লবণ

ঘোড়া চাটছে গোলাপি পাথর। অবাক হয়ে দেখছিলেন আলেকজান্ডার। এ কী ব্যাপার। ঘোড়ায় তো ঘাস খায়। পাথর খায় নাকি! ঝিলম নদীর তীরে সে এক কান্ড। গ্রিক…

ঘোড়া চাটছে গোলাপি পাথর। অবাক হয়ে দেখছিলেন আলেকজান্ডার। এ কী ব্যাপার। ঘোড়ায় তো ঘাস খায়। পাথর খায় নাকি! ঝিলম নদীর তীরে সে এক কান্ড। গ্রিক বাহিনীর ঘোড়াগুলো মনের আনন্দে পাথর চিবোচ্ছিল। কিছু গোলাপি রঙের টুকরো পাথর গিলেও নিল। আলেকজান্ডার আর তার বাহিনীর সেনাপতিরা দেখে থ মেরে গেলেন।

যীশুখিষ্ট্রের জন্মের ৩০০ বছর আগের কথা আলেকজান্ডার দি গ্রেট এর ঘোড়া আবিষ্কার করেছিল এক মহা বিস্ময়কর লবণ। পুষ্টিগুণে যা অতুলনীয় ও দেখতেও ভারী সুন্দর। আজকের যুগে এসে ঐতিহাসিক সেই পিঙ্ক সল্ট-ই মহা মূল্যবান সামগ্রী। রোজ বাড়িতে আমরা যে খাবার নুন খাই তা মূলত সাগরের জলের ইভেপোরেশন প্রাপ্ত। পৃথিবীতে এমন আরও কিছু লবণের উৎস আছে যেগুলো কোনো সাগরের জল নয়, বড়ো বড়ো পর্বতের তলে সজ্জিত। পিঙ্ক সল্ট ঠিক তেমনই একটা লবণ।

আলেকজান্ডার তখন পৃথিবী জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ভারতের দিকে এগোচ্ছেন। ইতিমধ্যে,  পাকিস্তানের ঝিলাম নদীর কাছে বড়ো বড়ো প্রস্তর খন্ডের কাছে তার ঘোড়াগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে। যোদ্ধা দলের সেই ঘোড়াগুলি এক রঙের পাথর চাটতে থাকে। সেখান থেকে পরে সৈন্যরা আবিষ্কার করে সেই পাথর কোনো সাধারণ পাথর নয়, তা ছিল নোনতা স্বাদের পাথর। ঠিক ওই সময় আবিষ্কৃত হয় পিঙ্ক সল্ট, যা আজও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।

সাধারণ নুনের সাথে পিঙ্ক সল্টের তফাত কী ? পুষ্টিবিদরা বলছেন, সাধারণ লবণে যেখানে শুধু সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে, সেখানে পিঙ্ক সল্টে থাকে আরও বেশ কয়েকটি পুষ্টি উপাদান। সোডিয়াম ক্লোরাইড- এর পাশাপাশি আয়রন অথবা জিঙ্কের মতো আরও বেশ কিছু মাইক্রো আর ম্যাক্রো পুষ্টিগুণ পিঙ্ক সল্টে পাওয়া যায়। একারণেই এই নুনের স্বাদ ও চেহারা সাধারণ লবণের থেকে বেশ আলাদা। এই হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট বেশ অনেকটা দামি।

খাদ্য লবণের এক কেজি কম বেশি ৫০ টাকা, সেখানে সমপরিমাণ পিঙ্ক সল্টের জন্য গুনতে হয় হাজার খানেক টাকা। পিঙ্ক সল্টের উচ্চ মূল্যের কারণ খনির দুষ্প্রাপ্যতা। এই মূল্যবান নুনের খনি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে সল্ট রেঞ্জে আছে। পৃথিবীর অন্য কোনো স্থানে এই বৃহৎ পরিমাণে সল্ট মেলেনি। পাকিস্তানের খেউরা সল্ট মাইন এই লবণের জন্য সবচেয়ে পরিচিত খনি। এই খনিতে তেমন কোনো  উন্নত প্রযুক্তি ছাড়াই কেবল শ্রমিকের পরিশ্রমে উত্তোলিত হয় লবণ। এই কারণে এই লবণের আহরণ বেশ কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ।

রসনাতৃপ্তি ছাড়াও ঘর সাজানো, স্পা থেকে শুরু করে রূপচর্চার কাজে এই লবণের ব্যবহার হয়। পিঙ্ক সল্ট কোনো আয়োডিন থাকে না। পিঙ্ক সল্ট দিয়ে শরীরে লবণের চাহিদা মেটালে তিনি হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত হবে। এই লবণ কোনো‌ভাবে প্রেশার কমাতে সাহায্য করে না।