এবার জাহাজ চলবে মদ দিয়ে

এবার তেল দিয়ে নয় জাহাজ চলবে অ্যালকোহল দিয়ে। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও ইতিমধ্যেই অ্যালকোহল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হয়ে গিয়েছে কিন্তু তেল রেখে হঠাৎ এরকম…

এবার তেল দিয়ে নয় জাহাজ চলবে অ্যালকোহল দিয়ে। শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও ইতিমধ্যেই অ্যালকোহল দিয়ে জাহাজ চলাচল শুরু হয়ে গিয়েছে কিন্তু তেল রেখে হঠাৎ এরকম প্রক্রিয়া কেন?

জ্বালানিকে পরিবেশবান্ধব করতে এবার মদ (সবুজ মিথানল) দিয়ে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল শুরু করেছে মার্কসলাইন শিপিং কোম্পানি। ১৪ সেপ্টেম্বর ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে বিশ্বের প্রথম অ্যালকোহলচালিত জাহাজ লরা মার্কস উদ্বোধন হয়।তবে এ ধরনের মদ জাহাজ চলাচলের জন্য ব্যবহার হলেও, এটি খাওয়ার অ্যালকোহল নয়।

   

অ্যালকোহলের প্রকারভেদ এর মধ্যে মিথানল সবথেকে সরল অ্যালকোহল। এটি হালকা উদ্বায়ী দহনশীল এবং বর্ণহীন তরল। ইথানলের মতো গন্ধ থাকলেও মিথানল পান করা যায় না। এটি খুবই বিষাক্ত এবং হজমের অনুপযোগী। সবুজ মিথানল বা পরিবেশ বান্ধব মিথানল হল বায়োমাস বা জৈব পদার্থ থেকে উৎপন্ন এক ধরনের অ্যালকোহল। যা জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হলে প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় কন্টেইনার জাহাজ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন ৬০ থেকে ৯৫ শতাংশ কমাতে পারে।

মার্কসের সিইও ভিনসেন্ট ক্লার্ক জানান, বিশ্ববাণিজ্যের ৯০ শতাংশ সমুদ্রপথে পরিচালিত হয়। আন্তর্জাতিক শিপিং বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমনের শতকরা ৩ ভাগের জন্য দায়ী। তবে মিথানল দিয়ে জাহাজ চালানোর এই পদক্ষেপ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নিতে সহায়তা করবে।

প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, সবুজ মিথানল দিয়ে জাহাজ চালালে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদন কমবে। মদ দিয়ে চালিত বিশ্বের প্রথম জাহাজটির নাম রাখা হয়েছে লরা মার্কস। এটি প্রায় ১৭২ মিটার দীর্ঘ।

জাহাজাটি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে জানিয়ে মার্কসলাইন জানায়, শিগগিরই বহরে আরও ১০০টির বেশি মিথানল চালিত কন্টেইনারবাহী জাহাজ যুক্ত হবে।

বিজ্ঞানীরা জ্বালানি তেল থেকে দূরে সরানোর জন্য পরিবেশ বান্ধব কোনও প্রক্রিয়া বের করা যায় কিনা এই চেষ্টা ক্রমাগত করে চলেছেন। সফলতার মুখও দেখা যাচ্ছে নানা ক্ষেত্রে। তবে সে পর্যায়ে বাজারজাত করা যায় এমন কোন প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি। কখনো আবার পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করতে গিয়ে লোকশানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে নিয়মিত পরিবেশবান্ধব উপায় নিয়ে চলছে গবেষণা

একদিকে সৌদি আরব এবং রাশিয়ার তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা আরেক দিকে তেলের চাহিদা বাড়ছে চিনে। এসব কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়তে বাড়তে ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছোঁয়ার পথে। অপরদিকে বিশ্ব বাজারে তেলের সরবরাহ কমানোর ঘোষণা করেছে সৌদি আরব এবং রাশিয়া। একই দিকে বিশ্বের শীর্ষ তেল আমদানি কারক দেশ চীনে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে সরবরাহ সংকট নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম আরো বেড়েছে বিশ্ববাজারে।রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সময় তেলের দাম যে পরিমাণে বেড়েছিল আবার তেলের দাম সেই পর্যায়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।