স্টিভ-পন্টিংদের পেশাদার ক্রিকেটের পথপ্রদর্শক এই ক্রিকেটার

বিশেষ প্রতিবেদন: সত্তরের দশকে ক্রিকেট বেশিরভাগটাই আটকে লাল বলের ক্রিকেটে (cricket)। পেশাদারিত্ব নিয়ে কীভাবে ক্রিকেটটা খেলতে হয় তা তখনও দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব। দেখালেন ইয়ান চ্যাপেল।…

Ian chappell

বিশেষ প্রতিবেদন: সত্তরের দশকে ক্রিকেট বেশিরভাগটাই আটকে লাল বলের ক্রিকেটে (cricket)। পেশাদারিত্ব নিয়ে কীভাবে ক্রিকেটটা খেলতে হয় তা তখনও দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব। দেখালেন ইয়ান চ্যাপেল। অধিনায়কত্বেও আনলেন পেশাদারিত্বের ছোঁয়া। এভাবেই বিশ্ব ক্রিকেটে তিনি রাজ করেছেন ১৬টা বছর।

অন্যতম বড় প্রমাণ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেই বিখ্যাত ম্যাচ। ভাই গ্রেগকে নিয়ে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন তিনি। এমন ইনিংস টেস্ট ক্রিকেট আর হয়নি। দুই ভাই দুই ইনিংসেই নাকি সেঞ্চুরি। বেসিন রিজার্ভের উইকেট এমনিতে পেসারদের জন্য স্বর্গ। তার উপর সেদিন চলছিল ঝড়ো বাতাস। ফলস্বরূপ ম্যাচের প্রথম ঘন্টাতেই দুই অজি ওপেনারের ড্রেসিংরুমে বিদায়।

Ian chappell

প্রথম উইকেট পড়তেই ব্যাট করতে নামেন ইয়ান পরে দ্বিতীয় উইকেট যেতেই নামেন গ্রেগ। বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল (Ian chappell) দ্রুত সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান। করেন ১৪৫ রান। সঙ্গে দুরন্ত গ্রেগ। ২৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেন দুজনে। বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল খেলেন ১২১ রানের ক্লাসিক ইনিংস। অন্যদিকে স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্নক ছিলেন গ্রেগ। মাত্র দু’ঘন্টায় পৌঁছে যান থ্রি মার্ক ফিগারে। শেষপর্যন্ত আউট হন ১৩৩ রান করে। ম্যাচটি ড্র হলেও ওই ইনিংস আজও রেকর্ড।

৭৬ টেস্টে ৪২.৪২ গড়ে ৫৩৪৫ রান করেছেন ইয়ান, সাথে ১৪টি শতরান। টেস্টে চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ ক্যাচ ধরার রেকর্ড তাঁরই দখলে। তিনি মোট ৩০টি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব করেন, তার মধ্যে ১৫ টি ম্যাচ জেতেন। এটাও একসময় রেকর্ড ছিল। পড়ে স্টিভ , পন্টিং জমানায় তো অজিরা শাসন করেছিল বিশ্ব ক্রিকেটকে। চরম পেশাদারিত্ব, যা তাঁরা পেয়েছিলেন ইয়ান চ্যাপেলের সূত্রেই।

Ian chappell

পাশাপাশি একদিনের ম্যাচও খেলেছেন বড় চ্যাপেল। তখন সবই টেস্ট ম্যাচ। ওয়ানডে হাতে গুনে। ১০ বছরে মাত্র ১৬টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছেন, কিন্তু করেছেন প্রায় ৪৯ গড়ে ৬০০ এর বেশি রান। ১৬টি ইনিংসের মধ্যে ৮টি অর্ধ শতরান করেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই যে আজ ব্যাটসম্যানস গেম ক্রিকেটে এত ছয় ছক্কার বন্যা , শুরুটা হয়েছিল ইয়ান চ্যাপেলের হাত ধরে। একদিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ছয়টি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকেই। অস্ট্রেলিয়া দলের প্রথম একদিনের ম্যাচের অধিনায়কও ছিলেন তিনিই। প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে ১৯,০০০ এর বেশী রান করেছেন, রয়েছে ৫৯টি শতরান।

ক্রিকেট পরিবারে জন্ম ইয়ানের। তার দাদু ভিক রিচার্ডসন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন এবং ভাই গ্রেগ চ্যাপেলও জাতীয় দলে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তার আরেক ভাই ট্রেভর চ্যাপেলও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন।

ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৬৪ সালে ,মেলবোর্নে। সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্টে খেলার জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে নেওয়া হয়। ব্যাটে মাত্র ১১ রান করলেও চারটি ক্যাচ নিয়েছিলেন। প্রথমে সাত নম্বরে ব্যাটিং করলেও ও পরে উঠে আসেন তিন নম্বরে। এই পজিশনেই নিজের ছন্দ খুঁজে পান ইয়ান। তারপর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি পেশাদারি ক্রিকেট দেখিয়ে গিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট তা রন্ধ্রে রন্ধ্রে রপ্ত করেছে।