কেউ বেকার নয়, যে গ্রামের প্রত্যেকের মাথাপিছু আয় ৯০ লক্ষ টাকা

সুইজারল্যান্ডের একটি গ্রাম লুঙ্গান। গ্রামটির মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৯০ হাজার ডলার। যা ৯০ লক্ষ টাকারও বেশি। মাত্র ৪৫ বর্গকিলোমিটারের গ্রামটিতে ২১৪৮ জন মানুষের বসতি।…

সুইজারল্যান্ডের একটি গ্রাম লুঙ্গান। গ্রামটির মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৯০ হাজার ডলার। যা ৯০ লক্ষ টাকারও বেশি। মাত্র ৪৫ বর্গকিলোমিটারের গ্রামটিতে ২১৪৮ জন মানুষের বসতি। বিশ্বের টপ টেন সুন্দর তকমা পাওয়া গ্রামটি আল্পস পর্বতের সারনেরা উপত্যকায় অবস্থিত। এটির উত্তরে খোলা উপত্যকা এবং তিনদিকে খাড়া পাথর বেষ্টিত পাহাড়। নদী, লেক, সবুজ উপত্যকা আর জলপ্রপাত নিয়ে স্বপ্নের মতো একটি গ্রামের নাম লুঙ্গার।

এখানের প্রায় সব মানুষ কর্মজীবী। বেকার বা কর্মহীন কেউ নেই বললেই চলে। বেকার বা কর্মহীনের হার ০.৬ শতাংশ। এখানে অর্থনৈতিক ভাবে কৃষি, বনজ ও কাঠের কাজ প্রাধান্য দেওয়া হয়। অপরূপ সুন্দর পরিপাটি গ্রামটির অধিকাংশ বাড়িতে আছে গরু, ছাগল ও ভেড়ার খাবার। তার নিজ হাতে তৈরি করেন পনীর। তাদের তৈরি খাঁটি দুধের পনীর বিশ্ববিখ্যাত। পাশের বনের কাঠ দিয়ে তৈরি করেন রকমারি হস্তশিল্প। বর্তমানে বিশ্বের চকলেটের উৎপাদনে সুইজারল্যান্ড প্রথম সারিতে উঠে এসেছে শুধু দুধের গুণগত মানের জন্য। ‌এই দেশে সবচেয়ে বেশি চকলেট উৎপাদিত হয়। বিশ্বমানের চকোলেট উৎপাদনে কেউই সুইজারল্যান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি।

দেশটির মধ্য দক্ষিণে সারনেরা উপত্যকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের পৌনে এক কিলোমিটার উপরে ওক ওয়ালটন ক্যালটনে অবস্থিত গ্রামটি। এই অঞ্চলে প্রথম বসতির কথা শোনা যায় ১২৭৫ সালে। ওই সময় স্থানটিকে ‌লুটিগান হিসেবে অভিহিত করা হত। বর্তমানে লুঙ্গান পর্যটকদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গার একটি। একসময় গ্রামটিতে যাওয়া অনেক কঠিন ছিল। যাতায়াতের জন্য সড়ক যোগাযোগ সুবিধাজনক ছিলনা। ১৮৬১ সালে সড়ক নির্মাণের পর এখানে যাতায়াত সহজ হয়। বর্তমানে লুঙ্গানে পৌঁছানোর জন্য বাস, ট্রেন ও অসংখ্য সহজ যাতায়াতের পথ সৃষ্টি হয়েছে।

দিন দিন গ্রামটির সৌন্দর্যের জৌলুশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বময়ে। সেখানে অনেক বিদেশী গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ইউরোপের পাহাড়ি দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সুইজারল্যান্ড। এটিকে অনেকে স্বপ্নের দেশ কিংবা ভূস্বর্গ বলে অভিহিত করেন। পর্যটকরা সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য আকৃষ্ট হন। এছাড়াও পর্বত ভ্রমণের জন্য এখানে অনেক পর্যটক আসে। আল্পস পর্বত ও ছবির মতো সাজানো গ্রাম অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রয়েছে তুষারমুকুট আল্পসের চূড়া, ঝিলমিল হ্রদ, অ্যামারল্ড টালি, হিমবাহের পাশাপাশি বিশ্বমানের আন্তর্জাতিক রিসোর্ট।

আল্পসের সবচেয়ে উঁচু চূড়ার একটি হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের মেটারফর। এখানে আছে ঘোড়ায় টানা গাড়ি, কাঠের বাড়ি, বিশ্বমানের হোটেল রেস্টুরেন্ট। এছাড়াও বাতাসের গুণাগুণ ঠিক রাখার জন্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এখানে মোটরচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। শীতের সময় স্কেট করার সময় ৩০০ কিলোমিটার ঢালে চলে যেতে পারে মানুষ। গ্রীষ্মের সময় পর্বতারোহণ, সাঁতার ও টেনিস খেলা জনপ্রিয়।