Eagle 3D Leg: অসুস্থ ঈগলের জন্য থ্রি ডি প্রযুক্তির পা বানাচ্ছেন রাফিদ

পশু-পাখির জন্য কজন ভাবেন এই একুশ শতকে? খুব কম জন। কিন্তু যারা ভাবেন তারা অন্তর থেকে ভাবেন এবং নিজের সন্তানের মতন দেখাশোনা-আদর-যত্ন করেন। তেমনই একজন…

পশু-পাখির জন্য কজন ভাবেন এই একুশ শতকে? খুব কম জন। কিন্তু যারা ভাবেন তারা অন্তর থেকে ভাবেন এবং নিজের সন্তানের মতন দেখাশোনা-আদর-যত্ন করেন। তেমনই একজন হলেন বাংলাদেশের কন্টেন্ট ক্রিয়েটার রাফিদ হক সোয়াদ। তার বাড়ির ছাদে দেখা যায় অগুন্তি চিল। হেসে-খেলে উড়ে বেড়াচ্ছে তারা। খুশি মনে উড়ে এসে আলতো করে বসে পড়ছে রাফিদের মাথায়। ছাদে তাদের বসার জন্য ডালের ব্যবস্থাও রয়েছে। সেখানে সারি সারি চিল বসে রয়েছে। এরমধ্যে অনেক চিল এমনও রয়েছে যারা হয়ত উড়তে পারেনা, বা কোন চিলের হয়ত পা নেই বা হয়ত কেউ অসুস্থ। তাদের সেবা-যত্নে নিমজ্জিত রাফিদ। তবে শুধু চিলের সেবা যত্ন করছেন রাফিদ তা নয়, তাদের ভাল থাকার জন্য বানাতে চলেছেন ৩ ডি পা।

বাংলাদেশের স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উঠে এলো রাফিদের পশু-প্রেমের দৃশ্য। চিল বা ঈগল পাখি সম্পর্কে ফারিদ বলেন, “এগুলো হচ্ছে টেরিটোরিয়্যালের বিষয়। দেখবেন অনেকজনই বলেন যে ছাদে উঠলে মাঝে মধ্যে চিল এসে মেরে চলে যায়। এই চিলটা (পাশেই কয়েকটা চিলকে দেখিয়ে) ভাবছে যে এটা একটা ওদের এরিয়া হয়ে গেছে। এগুলো কিছু আনস্টেবেল চিল। এই যে চিলটা আমার মাথায় এসে বসল, ওকে আমরা ৫ বার ছেড়েছি। পাঁচ বার ছাড়া হয়েছে। ইলেক্ট্রিক শক খাওয়ার কারণে ওর পাশের যে ব্লেডগুলো আছে, ওগুলো একেবারেই ভেঙে গেছিল। কিন্তু এখন যতটুকু ও উড়ছে, ও ভালোই ফ্লাই করতে পারে। এখানে যারা আছে এরা মূলত খুব শীঘ্রই ওড়া শিখে গেছে। আমরা কিছুদিনের মধ্যেই ওদেরকে ছেড়ে দেব।“

   

সাংবাদিকের প্রশ্ন যে এগুলোকে আপনি কীভাবে রক্ষা করলেন বা কীভাবে পেলেন? উত্তরে রাফিদ জানান, “আমাদের সবচেয়ে কমন যে কেসগুলো থাকে, এই পাখিগুলো মানুষের চোখে অনেক অ্যাট্রাক্টিভ লাগে। কেন লাগে আমি জানিনা, তা হওয়ারই কথা। এগুলো দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে যেমন আমাদের এখান থেকে বের হলে আমাদের একটি হুইশেল আছে যা দিয়ে আমরা কমিউনিকেট করি। বিকালের দিকে তিন-চারশো চিল আসে। আমরা ওই হুইশেলেই কমিউনিকেট করি ওদের সাথে। মানুষ অবৈধভাবে এগুলোকে পোষার চেষ্টা করে। এরা ছোট জায়গায় কোনভাবেই সার্ভাইভ করবেনা। ছোট জায়গায় ওরা মানিয়ে নিতে পারবেনা কারণ ওরা যখন তাদের ডানা বিস্তার করে, সেগুলো বিশাল।“

অবলা জীবের প্রতি ভালবাসা রাফিদের চোখে-মুখে স্পষ্ট। রাফিদ আরও বলেন, “২০ টা চিল নিয়ে এসেছিলাম শহীদ মিনারে যখন ঝড় হয়েছিল, একসাথে তখন ২০০-৩০০ চিলটা মাটিতে পড়ে গেছিল। এগুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণের ঘটনা আছে। এছাড়াও অনেক চিল আছে যারা কোথাও ধাক্কা খেয়ে আহত হয়েছে, তাদের ডানাটা পুরো ভাঙা এবং অ্যাম্পুটেটেড।“

এরপর একটি আহত চিলকে দেখিয়ে রাফিদ বলেন, “এই চিলটিকে দেখলে বুঝবেন এই চিলের পা নেই এবং পাখা পুরোপুরি ভাঙা। আমরা লেজগুলোকে প্লাক করে দিয়েছিলাম, এখন নতুন লেজ হচ্ছে।“ এমন সকল চিলের কথা ভেবে রাফিদ জানান, “সম্প্রতি আমরা ভাবনাচিন্তা করেছি যে, যে চিলের পা নেই, ওদের জন্যে আমরা ৩-ডি পা বানিয়ে দেব। আশা করব তাতে তারা অন্তত দাঁড়াতে পারবে ঠিক করে।“

পোষ্য চিলরা কী খায়? রাফিদ জানান, “ওরা মাংস খায়, কলিজা খায়। প্রোটিন সোর্সের জন্য আমরা চিকেন মিট দি, লিভার দি, কিছু চিকেন ফ্যাটও দি, অর্গ্যান্স দি। ওরা এই কমপ্লিট ডায়েটটা খায়। আর এই ডায়েটের কারণেই আমার মনে হয় ওরা ভাল আছে।“