Malaikari Misti: শুধু চিংড়ি? পশ্চিমবঙ্গ জানেই না ময়মনসিংহের স্বর্গীয় ‘মালাইকারি মিষ্টি’

মালাইকারি সে তো চিংড়ির হয়। বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গবাসী তেমনই জানেন। কিন্তু মিষ্টির মালাইকারি! এমনটা বাংলাদেশেই হয়। ময়ময়নসিংহের বিখ্যাত মিষ্টির মালাইকারি (Malaikari Mist) তেমনই জিনিষ। এই মিষ্টি…

Malaikari Misti

মালাইকারি সে তো চিংড়ির হয়। বেশিরভাগ পশ্চিমবঙ্গবাসী তেমনই জানেন। কিন্তু মিষ্টির মালাইকারি! এমনটা বাংলাদেশেই হয়। ময়ময়নসিংহের বিখ্যাত মিষ্টির মালাইকারি (Malaikari Mist) তেমনই জিনিষ। এই মিষ্টি হল ময়মনসিংহের ঐতিহ্য মালাইকারি মিষ্টি। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক বিখ্যাত খাবারও রয়েছে। খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ রয়েছে অসংখ্য এলাকা। তবে মিষ্টির কথা বললে ময়মনসিংহ জেলা এগিয়ে থাকবে।

দুধের ছানা দিয়ে তৈরি হয় মিষ্টি। এরপর কেটে লাগানো হয় ক্ষীরের প্রলেপ। খাবার বেলায় এই মিষ্টির স্বাদ বাংলাদেশের অন্যতম মিষ্টি গুলির মধ্যে সেরা। ভিন্ন স্বাদের বেশ কিছু মিষ্টি উদ্ভাবন করেছেন এই জেলার কারিগররা। এর মধ্যে মুক্তাগাছা মন্ডা, মালাইকারি মিষ্টি বিখ্যাত। ময়মনসিংহের মালাইকারি মিষ্টি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা মিষ্টি। শত বছর ধরে এই মিষ্টি মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। মালাইকারি মিষ্টির উদ্ভাবন হয়েছিল ময়মনসিংহের মাটিতে। বর্তমানে এই মিষ্টি জেলার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

   

গরুর খাঁটি দুধে তৈরি হয় মালাইকারি মিষ্টি। যার স্বাদ লেগে থাকে মানুষের মুখে। সেই কারণেই ময়মনসিংহের মালাইকারি মিষ্টি গোটা দেশ জুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টিকে বলা হয় ছানা ও ক্ষীরের জাদু। ছানার তৈরি মিষ্টির উপর ক্ষীরের প্রলেপ দেওয়া হয়। তাতে স্বাদ পাওয়া যায় ভিন্ন ধরনের।

প্রায় ১০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল মালাইকারি মিষ্টির যাত্রা। শুরুতে হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে তৈরি হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বর্তমানে ময়মনসিংহের সকল বড় বড় দোকানে এই মালাইকারি মিষ্টি পাওয়া যায়। ঐতিহ্যবাহী মালাইকারি মিষ্টি আবিষ্কার করেছিল, জানকীনাথ সুইটস। যা ছিল ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রথম মিষ্টির দোকান। তাদের হাত ধরেই প্রথমে মিষ্টি তৈরি হয়। যার পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস।

ব্রিটিশ আমলে মুক্তাগাছার জমিদার ছিলেন মহারাজ শশীকান্ত আচার্য। একবার জমিদার বাড়ির এক অনুষ্ঠানের জন্য মিষ্টির অর্ডার আসে জানকী নাগের দোকানে। তবে তাকে শর্ত দেওয়া হয়, মিষ্টি হতে হবে ভিন্ন স্বাদের। জমিদারের নির্দেশ অনুযায়ী মিষ্টি বানান জানকী নাগের তৎকালীন মালিক। শত বছর আগে বানানো সেই মিষ্টি ছিল মালাইকারি। স্বাদ ভালো হওয়ার কারণে এরপর থেকে নিয়মিত এই মিষ্টি বানানো শুরু হয়। সাধারণ মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ে মিষ্টির জনপ্রিয়তা।

শত বছর পরে ওই মিষ্টির সুনাম অক্ষুণ্ণ আছে এখনো। প্রথমে দুধের ছানা দিয়ে গোলাকার মিষ্টি তৈরি করা হয়। এরপর মিষ্টি মাঝ বরাবর কেটে লাগানো হয় ক্ষীরের প্রলেপ। এভাবেই তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী মালাইকারি। যার স্বাদ এক কথায় অতুলনীয়। বর্তমানে প্রতি কেজি মালাইকারি বিক্রি হয় ৪০০ টাকা দামে। কেজি প্রতি গড়ে ১৫ টি মালাইকারি মিষ্টি পাওয়া যায়।