হৃদরোগ প্রতিরোধে ৬টি সহজ জীবনযাত্রার পরিবর্তন

বিশ্বব্যাপী হৃদরোগ এখন স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। তবে এর প্রতিরোধের জন্য বড় ধরনের জীবনযাত্রা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না। কিছু ছোট এবং ধারাবাহিক পরিবর্তনও…

বিশ্বব্যাপী হৃদরোগ এখন স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। তবে এর প্রতিরোধের জন্য বড় ধরনের জীবনযাত্রা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না। কিছু ছোট এবং ধারাবাহিক পরিবর্তনও আপনার হৃদরোগ প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদীর প্রভাব ফেলতে পারে।

অনেকে বড় ধরনের চিকিৎসা বা হস্তক্ষেপের দিকে মনোযোগ দেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তগুলি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতীয় কলেজ অফ কার্ডিওলজির সাধারণ সম্পাদক ডঃ সি এম নাগেশের সাথে এক সাক্ষাত্কারে জানা গেছে, কীভাবে কিছু সাধারণ জীবনযাত্রা পরিবর্তন হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

   

সক্রিয় থাকুন

ডঃ নাগেশ এর মতে, “কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম, যেমন সাইক্লিং, অথবা সাঁতার কাটলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ রক্তচাপ কমাতে, রক্তসঞ্চালন বাড়াতে এবং হৃদপেশী শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা কিংবা খাবারের পর হাঁটাহাঁটি করার মতো ছোট পরিবর্তনও ফলপ্রসূ হতে পারে।”

হৃদরোগ-বান্ধব খাদ্য গ্রহণ করুন

ডঃ নাগেশ বলেছেন “ফল, সবজি, পূর্ণ শস্য, লীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (যেমন বাদাম, বীজ এবং অলিভ অয়েল) যুক্ত খাবার হৃদরোগের প্রতিরোধে সাহায্য করে,। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার, ট্রান্স ফ্যাট, এবং অতিরিক্ত চিনি সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করলে স্থূলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ধূমপান বন্ধ করুন এবং মদ্যপান সীমিত করুন

ডঃ নাগেশ বলেছেন,“অতিরিক্ত মদ্যপান রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, হৃদপেশী দুর্বল করে এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন তৈরি করতে পারে। ধূমপান রক্তনালীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং ব্লকেজের ঝুঁকি বাড়ায়।” তাই ধূমপান ছাড়া এবং মদ্যপান সীমিত করা জরুরি।

পর্যাপ্ত জল পান করুন

“সঠিক সঞ্চালনের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। জল শূন্যতা রক্ত ঘন করে দিতে পারে এবং এর ফলে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বাড়ে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়,” জানিয়েছেন ডঃ নাগেশ।

মানসম্মত ঘুমের গুরুত্ব

ডঃ এর মতে “খারাপ ঘুম উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতি রাতে ৭–৯ ঘন্টা ঘুমানো উচিত যাতে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।”

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান

ডঃ নাগেশ সতর্ক করে বলেছেন, “নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করালে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ অনাবিষ্কৃত থেকে যায়। সময়মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা এই রোগগুলোর শনাক্তকরণে সহায়ক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।”

এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো সুস্থ হৃদয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নিয়মিতভাবে এই অভ্যাসগুলো মানলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।