মঙ্গলে মুখ পুড়েছিল, বুধে হারের যুক্তি সাজাতে আপ্রাণ চেষ্টা কল্যাণের

মঙ্গলেই মুখ পুড়েছিল (Kalyan Chaubey)। তাঁর এক বিস্ফোরক অডিয়ো ভাইরাল করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই ভিডিয়োই মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে বলতে শোনা গিয়েছিল, আপনি (কুণাল)…

মঙ্গলেই মুখ পুড়েছিল (Kalyan Chaubey)। তাঁর এক বিস্ফোরক অডিয়ো ভাইরাল করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই ভিডিয়োই মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে বলতে শোনা গিয়েছিল, আপনি (কুণাল) আমাদের সাহায্য করুন। আর বুধবার ভোট চলাকালীনই তৃণমূল বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলেন কল্যাণ। ভোটের নামে প্রহসন হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

আসলে মানিকতলার লড়াইটা যে খুব একটা সহজ হবে না, তা ভালোই জানত বঙ্গ বিজেপি। সূত্রের খবর, বেশ কিছু বড় নামকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তাঁরা কেউই রাজি হননি। এই সিটের পরাজয়ের অভিজ্ঞতা থাকা কল্যাণ চৌবে অবশ্য দলের প্রস্তাব ফেরাননি। মানিকতলার প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা পর থেকেই জোরদার প্রচার শুরু করেন কল্যাণ চৌবে।

   

প্রচারপর্ব শেষ হতেই বড় ধাক্কা খান কল্যাণ। সৌজন্যে কুণাল ঘোষের ফাঁস করা অডিয়ো। কুণালের অভিযোগ, কল্যাণ চৌবে ফোন করে উপনির্বাচনে তাঁকে সাহায্য করার কথা বলেছেন। এআইএফএফ-এর সভাপতি পদ ব্যবহার করে আমাকে বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়েছে। উনি বুঝতে পেরেছেন ওনার হার আসন্ন। তাই উনি ফোন করে অনুরোধ করেছেন, তাঁকে সাহায্য করার জন্য। 

উপনির্বাচনের মাঝেই শক্তি বাড়াল বিজেপি, গেরুয়া শিবিরে যোগ হেভিওয়েট নেতার

এর পাল্টা কল্যাণ সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, অডিয়ো ক্লিপ এডিট করা হিয়েছে, আমি অনেক কিছুই বলিনি। বেশ কিছু জায়গায় অডিয়ো ডক্টরড করা হয়েছে। কোনও প্রস্তাব বা ঘুষ দিতে চাইনি। আমার ভয়েস এডিট করা হয়েছে। অসংখ্য লোককে ফোন করেছি। কোন দলের তা না দেখেই ফোন করেছি। ব্যক্তিগত স্তরের পরিচয় থেকে ফোন করে সমর্থন চেয়েছি।

সেই সঙ্গে কল্যাণ আরও বলেন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কুণাল ঘোষ বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি ওনাকে নিতে চায়নি। সপ্তাহ খানেক আগেও উনি বিজেপিতে আসার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।

বুথ দখল করে দেদার ছাপ্পা দিচ্ছে তৃণমূল! চাঞ্চল্যকর অভিযোগ বাগদায়

আর আজ, উপনির্বাচনের দিন সকাল থেকেই দৌড়ে বেড়ালেন কল্যাণ। অনেকটা লোকসভা ভোটে ‘দৌড়ে হারা’ দিলীপ ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, অর্জুন সিংয়ের মতো। ভোটের শেষলগ্নে নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলেও মন্তব্য করেন কল্যাণ। একই সঙ্গে পুনর্নির্বাচনের দাবিও তোলেন মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী। তিনি বলেন, আমি হারছি। কারণ এই ভোট মানুষের ভোট নয়। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে ভোট করা হয়েছে। 

কল্যাণ চৌবে এদিন একাধিক জায়গায় যান। আর সেখানেই দেখা যায়, তৃণমূলের কর্মীরা কোথাও জয় বাংলা স্লোগান দেন। কোথাও আবার ‘চোর চোর চোরটা’ বলা শুরু করেন। এমনকী তাঁর গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টাও চলে। হাতে পাথর নিয়ে তাড়া করতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী কোনওরকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

‘ভোটে আমার হয়ে কাজ করুন’, কুণালকে ফোনে প্রস্তাব মানিকতলার বিজেপি প্রার্থী কল্যাণের

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, মঙ্গলে অডিয়ো ফাঁসে পর অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। আর আজ ভোটের চিত্র দেখে কল্যাণ নিশ্চিত হয়ে যান, তাঁর হার আসন্ন। আর তাই উঠছে পুনর্নির্বাচনের প্রসঙ্গ। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হল, ভোট চলাকালীনই মানিকতলায় ভোট লুটের অভিযোগ তুলে ফুলবাগান থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে পড়ল বিজেপি।