লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের গোপনীয় নথি ইডির হাতে

সোমবার সারাদিন ইডির অভিযান চলে, কালীঘাটের কাকু ছিলেন ইডি’র নজরে গতকাল। পাশাপাশি গতকাল গোটা রাত অভিযান চালানো হয় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে। একাধিক আর্থিক লেনদেন…

সোমবার সারাদিন ইডির অভিযান চলে, কালীঘাটের কাকু ছিলেন ইডি’র নজরে গতকাল। পাশাপাশি গতকাল গোটা রাত অভিযান চালানো হয় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অফিসে। একাধিক আর্থিক লেনদেন এই মুহূর্তে ইডির স্ক্যানারে। রাতভর তল্লাশির পরে নিউ আলিপুরের অফিস থেকে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিপুল নথি আধিকারিকরা পেয়েছেন। কী কী তথ্য পেলেন ইডি আধিকারিকরা সোমবার সকাল থেকে রাত অবধি প্রায় ১২ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালানোর পর?

নিউ আলিপুরে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সদর দফতরে সোমবার প্রায় ১২ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালান ইডি-র আধিকারিকরা। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের কারখানায়ও তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি করে এখনও পর্যন্ত বিপুল সংখ্যায় নথি পাওয়া গিয়েছে। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের যোগ পাওয়া গিয়েছিল সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কোম্পানি এসডি কনসার্নসের সঙ্গে একটি আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্র করে। কিন্তু তারপরের যে নথি পাওয়া গিয়েছে সেই নথির মধ্যে কিছু ডিজিটাল প্রমাণ রয়েছে, প্রচুর পরিমাণ আর্থিক লেনদেন রয়েছে, কিছু এগ্রিম্যেন্টের কপি রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে।

প্রাথমিক স্তরে গোয়েন্দারা দাবি করছেন কেবলমাত্র একটি কনসালটেন্সির সঙ্গে যে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের খুব সন্দেহজনক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে তা নয়। এরকম একাধিক নির্মান সংস্থার হদিশ পাওয়া গিয়েছে যেখান থেকে এই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের যে ৩ টে সংস্থা তার বিভিন্ন সংস্থায় সেই টাকা ঢুকেছে। প্রত্যেকটাই সন্দেহজনক বলে দাবি করা হয়েছে।

পাশাপাশি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের তিনটি সংস্থা, তাদের নিজেদের মধ্যেও বেশ কিছু আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনগুলোকে খুব সোজা পথে লেনদেন হয়েছে বলে মনে করছেন না গোয়েন্দারা। এর ফলে নিয়োগ দুর্নীতিতে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের লেনদেনটা নজরে চলে আসছে ইডে আধিকারিকদের।

আর সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক এলাকায় একযোগে হানা দেন ED অফিসাররা। অভিষেক ঘনিষ্ঠ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চলে অভিযান। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর মেয়ে-জামাইয়ের ফ্ল্যাট-সহ ৩টি জায়গায় একযোগে হানা দেয় ইডি। সূত্রের খবর বিপুল টাকার সন্ধান করছে ইডি।

সোমবার সকালেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের নিউ আলিপুরের অফিসে হানা দেম এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা। নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে তোলা টাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কোথায় কোথায় সরিয়েছে তার তদন্ত করতেই তল্লাশি অভিযান বলে জানা যায়। নিউ আলিপুরের পাশাপাশি লি রোডে একটি ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি গোয়েন্দারা। এই ফ্ল্যাট সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে জামাইয়ের। সুজয়কৃষ্ণ এটি কিনেছিলেন বলে ইডি সূত্রে খবর। এ ছাড়া জোকা ও ঠাকুরপুকুরের একাধিক ঠিকানায় ইডি তল্লাশি চলে।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এই লিপস অ্যান্ড বাউন্ড কোম্পানিতে সিইও ছিলেন। অভিষেকের পরিবারের সদস্যরা এই কোম্পানির কর্মকর্তা। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এমন একযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ইডি হানার জেরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে চাপা আতঙ্ক ছড়ায়। বিরোধী বিজেপি, সিপিআইএম ও কংগ্রেসের দাবি তদন্ত দ্রুত শেষ করুক ইডি। চুনোপুঁটি না ধরে দুর্নীতির দুই মাথাকে গ্রেফতার করুক দ্রুত। তাঁদের দাবি, কালীঘাটেই আছে দুর্নীতির মাথা।