Pulwama: সহযোদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন অভিশপ্ত সেই বাসের চালক

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। টিভির পর্দায় ব্রেকিং নিউজ। ভেসে উঠেছিল গায়ে কাঁটা দেওয়া কিছু ছবি, কিছু ভিডিও। ভূস্বর্গ কাশ্মীর যেন সাক্ষাত মৃত্যুপুরী। শিরোনামে পুলওয়ামা (Pulwama)। ৪০…

Pulwama

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। টিভির পর্দায় ব্রেকিং নিউজ। ভেসে উঠেছিল গায়ে কাঁটা দেওয়া কিছু ছবি, কিছু ভিডিও। ভূস্বর্গ কাশ্মীর যেন সাক্ষাত মৃত্যুপুরী। শিরোনামে পুলওয়ামা (Pulwama)। ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু। 

সে’দিন ঠিক কী ঘটেছিল সে ব্যাপারে এখনও বহু প্রশ্ন রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। আলোচনা স্থিমিত হয়েছে আগের থেকে। কিন্তু মুছে যায়নি মন থেকে। পুলওয়ামা ঘটনার স্মৃতিচারণ এবং বহু তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বই লিখেছেন আইপিএস অফিসার দানেশ রানা। 

‘As Far as the Saffron Fields’ বইয়ে আইপিএস অফিসার ঘটনার আদ্যপান্ত তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন―

চেকিংয়ের পর একে একে বাসে ওঠার পালা। জওয়ানরা বসছেন নিজের আসনে। বাইরে ঝাপটা মারছিল ঠাণ্ডা হাওয়া। জানলার অল্প ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করছিল হিমেল স্রোত। কেউ কেউ হাত ঢুকিয়ে রেখেছিলেন জ্যাকেটের পকেটে। পাশে রাখা জলের বোতল। কিছু শুকনো খাবার, বিস্কুট ইত্যাদি সঙ্গে ছিল জওয়ানদের। বাসে সবার শেষে উঠেছিলেন হেড কনস্টেবল জামাল সিং। তিনিই বাসের চালক। 

জামালের যাওয়ার কথা ছিল না সে যাত্রায়। হেড কনস্টেবল কৃপাল সিংয়ের যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর মেয়ের বিয়ে ছিল সামনে। ছুটি আবেদন করেছিলেন। মঞ্জুর হয়েছিল সেই ছুটি। তাই কৃপালের বদলে বাস নম্বর HR49F-0637’র সফর সঙ্গী জামাল। 

গত কয়েক দিন খারাপ আবহাওয়ার কারণে বন্ধ ছিল রাস্তা। আরও বৃষ্টি, তুষারপাতের সতর্কতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর। রাস্তার অবস্থা আঁচ করে জামাল একটু চিন্তায় ছিলেন। 

১৩ ফেব্রুয়ারির রাতে স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন জামাল। শেষ মুহূর্তে কাজ পড়েছিল তাই বাড়িতে জানিয়ে রাখা দরকার। রাস্তা যতই খারাপ হোক জামালের কাছে তা নস্যি। হাইওয়ে ৪৪- এর নাড়ি-নিক্ষত্র তাঁর নখদর্পণে। 

বাসের চাকা গড়ানোর আগে হাসি ফুটল এক জওয়ানের মুখে। কনস্টেবল থাকা বেলকরের ছুটি মঞ্জুর রয়েছে। সামনেই তাঁর বিয়ে ছিল। ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন। বাসে ওঠার পর খবর পেলেন ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। বাড়ি মহারাষ্ট্রে। খবরটা পাওয়া মাত্র বাস থেকে নেমে পড়েছিলেন থাকার। সঙ্গীদের হাত নেড়ে জানিয়েছিলেন বিদায়। 

জওয়ানদের বাস ছাড়াও মোট ৭৮ টি গাড়ি ছিল কনভয়ে। যার মধ্যে ১৭ টি লরি, তিনটি বাস। একটি বাস অতিরিক্ত। ছিল রিকভারি ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স। কনভয় চলেছিল ভূস্বর্গর দিকে। 

পুলওয়ামা ঘটনার পর তদন্তে নেমেছিল এনআইএ। ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটেও তদন্তকারীরা বুঝতে পারছিলেন না কারা ছিল এই হামলার পিছনে। হাল প্রায় ছেড়েই দেওয়া হয়েছিল। এমন সময় মিলল ক্লু। গুলির লড়াইয়ের পর যেখানে জঙ্গিদের (জৈশ ই মহম্মদ) দেহ পরে ছিল, সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটা সূত্র। নতুন উদ্যমে আবার শুরু হল তদন্ত। একটা ভাঙা ফোন পাওয়া গিয়েছিল। সেখান থেকেই হাতে এসেছিল একের পর এক তথ্য। পুলওয়ামা কেসের তল পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা।