ভারতের জাতীয় পতাকার অসম্মানে বিস্ফোরক তসলিমা

সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক ভিডিও ভাইরাল। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করছে। এই ঘটনায় দেশের দুই প্রান্তে…

Taslima Nasrin on flag controversy

সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক ভিডিও ভাইরাল। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করছে। এই ঘটনায় দেশের দুই প্রান্তে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)।

বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনার সমালোচনা করে তসলিমা নাসরিন এক দীর্ঘ পোস্টে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, “বিশ্বের কোনও পতাকাকে কোনও সুস্থ মস্তিস্কসম্পন্ন মানুষ অবমাননা করে না। আমি বিশ্বের প্রতিটি পতাকাকে সম্মান করি। প্রতিটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতকে সম্মান জানাতে আমি উঠে দাঁড়াই।”

   

পতাকা অবমাননার প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং ভারতের বিরোধিতার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কিছু ছাত্রছাত্রীকে ভারতের জাতীয় পতাকার উপর দিয়ে হাঁটতে দেখা যায়। এই কর্মকাণ্ড ভারতের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে চরম অপমানজনক বলে প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। এমনকি, এর জেরে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর ঘটনাও ঘটেছে।

তসলিমার কড়া বার্তা
তসলিমা নাসরিন এসব কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান যে এত আমাদের শত্রু দেশ, আমি পাকিস্তানের পতাকাকেও পোড়াবো না, পায়ে মাড়াবো না।” তাঁর মতে, কোনও দেশের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করা মানেই সেই জাতির প্রতি অসুস্থ মানসিকতার প্রকাশ।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীরা ভারতের পতাকাকে পায়ে মাড়িয়ে যে সুখ পাচ্ছে, সে সুখ বিকৃত সুখ।” তসলিমার বক্তব্যে স্পষ্ট, জাতীয় পতাকা প্রতিটি দেশের সম্মানের প্রতীক এবং তা অবমাননার কোনও ন্যায্যতা নেই।

“অশিক্ষিত ও অসুস্থ মানসিকতা”
তসলিমা পোস্টে আরও যোগ করেন, “যে মস্তিস্কে ঘৃণা থিকথিক করে, সে মস্তিস্ক অসুস্থ মস্তিস্ক।” তাঁর মতে, একটি দেশের পতাকা পোড়ানো বা অবমাননা করা কেবলমাত্র সেই দেশের জনগণের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ প্রদর্শন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন এই বলে যে, “বাংলাদেশ নামের দেশটি অসুস্থ, অশিক্ষিত, অপ্রকৃতিস্থ লোকের দেশ হয়ে উঠছে।”

দুই দেশের সম্পর্কের প্রভাব
তসলিমার পোস্ট দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এমন সময়ে যখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, তখন এই ধরনের ঘটনা সেই সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তসলিমার পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ তাঁর বক্তব্যের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ কেউ তাঁর মন্তব্যকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র বলে মনে করেছেন।

জাতীয় পতাকা একটি দেশের গৌরব ও পরিচয়ের প্রতীক। তসলিমা নাসরিনের বক্তব্য শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ঘটনার সমালোচনা নয়, বরং এটি একটি শিক্ষা। দেশের পতাকা বা জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা না করার মানসিকতা তৈরি করা উচিত প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে। কারণ, ঘৃণা ও বিদ্বেষ কখনও সুস্থ সমাজ গঠনে সাহায্য করে না।