তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে অবস্থিত হাম্পি (Hampi), ভারতের স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য সাক্ষী। এই প্রাচীন শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজয় বিট্ঠল মন্দির, যা তার অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এই মন্দিরে অবস্থিত ‘সুরমণ্ডপ’ শুধু স্থাপত্যের নয়, সঙ্গীতেরও এক বিস্ময়। মন্দিরের পাথরের স্তম্ভে সামান্য আঘাত করলেই সরগম বেজে ওঠে, এবং সেই সুর পুরো মন্দির চত্বরে ধ্বনিত হয়।
মাওবাদী সরতেই প্রথম আলোর মুখ দেখল ছত্তিশগড়ের ছোট্ট গ্রাম, বইয়ের পাতা উল্টোলো কচিকাঁচারা
এবার এই ঐতিহাসিক এবং সঙ্গীতমণ্ডিত স্থাপত্য উপভোগ করার জন্য নতুন এক উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (ASI)। সুরেলা স্তম্ভের ধ্বনি এবং মন্দিরের ইতিহাস পর্যটকদের কাছে সহজলভ্য করার জন্য মন্দিরে কিউআর কোডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পর্যটকরা মন্দির চত্বরে স্থাপন করা কিউআর কোড স্ক্যান করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মোবাইল স্ক্রিনে মন্দিরের ইতিহাস, ভাস্কর্য এবং স্থাপত্যশৈলীর একটি সংক্ষিপ্তসার ফুটে উঠবে। পাশাপাশি সুরেলা স্তম্ভগুলোর সরগমও তাঁরা শুনতে পারবেন। এই প্রযুক্তি পর্যটকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করবে, যেখানে তারা একদিকে ঐতিহাসিক তথ্য জানার সুযোগ পাবেন এবং অন্যদিকে মন্দিরের সুরেলা স্তম্ভের ধ্বনি উপভোগ করতে পারবেন।
এই উদ্যোগ পর্যটকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রবল উৎসাহ জাগিয়েছে। হাম্পি পরিদর্শনে আসা এক পর্যটক বলেন, “বিজয় বিট্ঠল মন্দিরের সুরমণ্ডপ দেখার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। কিউআর কোডের মাধ্যমে মন্দিরের ইতিহাস জানা এবং সেই সঙ্গে সুর শোনা যেন এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।”
মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে জটিলতা অব্যাহত, শিন্ডের চাপে মহারাষ্ট্রে বেকায়দায় বিজেপি
আরেকজন পর্যটক জানান, “আগে শুধু স্তম্ভগুলো দেখতাম। কিন্তু এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে মন্দিরের পুরো কাহিনি এবং সঙ্গীতের অনুভূতি পাওয়া যাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি দারুণ উদ্যোগ।”
বিজয় বিট্ঠল মন্দিরটি ১৫শ শতাব্দীতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শাসনকালে নির্মিত হয়। মন্দিরটি তার জটিল খোদাই, অপরূপ ভাস্কর্য এবং সুরেলা স্তম্ভের জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। প্রতিটি স্তম্ভে অনবদ্য কারুকাজ দেখা যায়, যা মন্দির নির্মাণের সময়ের শিল্প এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার পরিচয় বহন করে।
সেরিব্রাল অ্যাটাক, বারানসীতে প্রয়াত প্রাক্তণ আইপিএস পঙ্কজ দত্ত
‘সুরমণ্ডপ’ মন্দিরটির অন্যতম আকর্ষণ। এই মণ্ডপের স্তম্ভগুলো এমনভাবে নির্মিত যে, এগুলোতে সামান্য আঘাত করলেই সরগমের মতো সুর ধ্বনিত হয়। এটি শুধুমাত্র স্থাপত্যের কৃতিত্ব নয়, সঙ্গীত এবং বিজ্ঞানের এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ।
কিউআর কোডের মতো প্রযুক্তির সংযোজন মন্দিরটি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াবে এবং নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্য সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।