বাম জমানায় আমলাশোলে ‘দুর্ভিক্ষ’ ছড়ানো দামী পিঁপড়ের ডিম পেল GI Tag

সেই ‘ভুয়ো খবরের’ পিঁপড়ে খাদ্য-কুরকুট এখন GI Tag তালিকাভুক্ত। বাম জমানায় ২০০৪ সালে রাজ্যবাসীর কাছে আমলাশোল গ্রামের অভুক্ত মানুষ পিঁপড়ে খাচ্ছে এমন ‘ভুয়ো’ খবরটি পৌঁছে…

সেই ‘ভুয়ো খবরের’ পিঁপড়ে খাদ্য-কুরকুট এখন GI Tag তালিকাভুক্ত। বাম জমানায় ২০০৪ সালে রাজ্যবাসীর কাছে আমলাশোল গ্রামের অভুক্ত মানুষ পিঁপড়ে খাচ্ছে এমন ‘ভুয়ো’ খবরটি পৌঁছে দিয়েছিল দুই বৃহত্তর সংবাদ প্রতিষ্ঠান। তাদের খবরে রাজ্যবাসী শিহরিত হয়েছিলেন। পরে তৎকালীন রাজ্য সরকার দাবি করেছিল খাদ্যাভাব নয়, পিঁপড়ের ডিম অতি সুস্বাদু ও পুষ্টিতে ভরপুর জঙ্গলমহলের গ্রামীণ খাবার। পরে পরিবেশ ও পুষ্টি বিজ্ঞানীরা সেই দাবির সমর্থন করেন। বিতর্ক ধুঁকে ধুঁকে থেকে গেছে। দু দশকের পুরনো সেই পিঁপড়ে বিতর্কে এবার জিআই সংযোজন!

জিআই ট্যাগ পেল ওড়িশার লাল পিঁপড়ের চাটনি (Red Ant Chutney)। এই অদ্ভুত চাটনি খান ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ (Mayurbhanj) জেলার আদিবাসীরা। এই একই খাবার ওড়িশা সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে কুরকুট বলে পরিচিত। এটি মূলত জংলি লাল পিঁপড়ের ডিম। ওড়িশায় বলা হয় কাই চাটনি।

বহু বছর ধরেই ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের আদিবাসীরা লাল পিঁপড়ে খান। লাল পিপড়ে কিন্তু পুষ্টির অন্যতম উৎস। এই আদিবাসীদের প্রত্যন্ত জায়গা হওয়ায় এবং আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণেই এই পিঁপড়ে হয়ে ওঠে পুষ্টির খাবার। এই পিঁপড়ে দিয়ে তৈরি অন্যতম জনপ্রিয় পদ হল লাল পিপড়ের চাটনি। নতুন বছরেই এসেছে এই স্বীকৃতি। গত ৪ জানুয়ারি ‘সিমলিপাল কাই চাটনি’-কে সরকারের তরফে জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন ট্যাগ দেওয়া হয়। জানা যাচ্ছে, ২০২০ সালে ময়ূরভঞ্জ কাই সোশ্যাইটি লিমিটেডের তরফে লাল পিঁপড়ের চাটনি বা সিমলিপাল কাই চাটনিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল।

এই স্বাদে-পুষ্টিতে অনন্য পদটি কীভাবে বানায় জানেন? ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের জঙ্গল জুড়ে পাওয়া যায় এই লাল পিঁপড়ে। প্রকৃতির অনেক রূপ, তারই এক এই পিঁপড়ে। গাছ থেকে ঝরে পড়া পাতা দিয়েই বাসা তৈরি করে এই পিপড়েরা। এই পিঁপড়েকে স্থানীয় ভাষায় ‘কাই পিমপুডি’ বলে। এই লাল পিঁপড়েকে ধরে তার সঙ্গে নানান মশলা মিশিয়ে বেটে চাটনি হিসাবে খান আদিবাসীরা।

অত্যন্ত পুষ্টিকর এই পিঁপড়ে বলেই মনে করা হয়। এই পিঁপড়েতে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন বি-১২, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও কপার রয়েছে। এই পিঁপড়ের মধ্যে ক্ষতস্থান পূরণ করারও গুণ রয়েছে।