বুলডোজারে আক্রান্ত সম্প্রীতি ও সংবিধান তবু মোদী নীরব, চিঠি শতাধিক আমলার

দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে। ভয়ঙ্করভাবে বিদ্বেষ ও বিভাজন ছড়াচ্ছে। অথচ সব দেখেও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে…

communal violence india

দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে। ভয়ঙ্করভাবে বিদ্বেষ ও বিভাজন ছড়াচ্ছে। অথচ সব দেখেও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিলেন ১০৮ জন অবসরপ্রাপ্ত আমলা। যার মধ্যে আইএএস, আইআরএস ও আইএফএস অফিসাররা আছেন।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী আমলাদের মধ্যে আছেন প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, প্রাক্তন বিদেশ সচিব সুজাতা সিং, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র সচিব জিকে পিল্লাই, দিল্লির প্রাক্তন উপ-রাজ্যপাল নাজিব জং, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি টিকে নায়ার প্রমুখ।

প্রাক্তন আমলারা তাঁদের চিঠিতে লিখেছেন, গোটা দেশ ঘৃণা ও বিদ্বেষে ভরে গিয়েছে। দেশের সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতার যে অধিকার দিয়েছে তা আজ পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরেই যে অত্যাচার হচ্ছে তা নয়। দেশের সংবিধানও আজ বিপন্ন। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে ঘটা সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলিও মানা হচ্ছে না। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেও কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা আমাদের অবাক করেছে।

ওই চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, দেশের স্বাধীনতার অমৃতমহোৎসবে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। দয়া করে তার অবসান ঘটান।
কেন কেন্দ্রের মোদী সরকারকে এধরনের চিঠি লিখলেন প্রাক্তন আমলারা তার জবাবও তাঁরা দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, প্রাক্তন সরকারি কর্মী হিসেবে কোনও বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ্যে জানানো সাধারণভাবে তাঁদের অভ্যাস নয়। কিন্তু বর্তমানে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর উপর যেভাবে একের পর এক আঘাত আসছে তা দেখেই তাঁরা মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। কাউকে দোষারোপ করার জন্য তাঁরা এই চিঠি লিখছেন না। সাংবিধানিক কাঠামোর উপর যেভাবে একের পর এক আঘাত হচ্ছে সেটা তাঁদের ক্ষোভ ও যন্ত্রণাকে প্রকাশ করতে বাধ্য করেছে।

চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা বুলডোজার শব্দটি উল্লেখ করেছেন। কারণ সম্প্রতি দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরী৷ গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশের মত কয়েকটি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরে বুলডোজার চালিয়ে বহু নির্মাণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রাক্তন আমলারা।
ওই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিযোগ, সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর রাজনৈতিক অভিসন্ধি থেকেই এ ধরনের কাজ করা হয়েছে।

চিঠিতে প্রাক্তন আমলারা এ বিষয়ে বলেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠদের অত্যাচারের হাতিয়ার হিসেবে বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছে।