মোদীর ইউক্রেন সফর, ‘ভারসাম্যে’ই কী ‘ভাবমূর্তি’ পুণরুদ্ধারের চেষ্টা?

পোল্যান্ড হয়ে ইউক্রেনে (Ukraine) পা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে শোরগোল কূটনৈতিকমহলে। কারণ ২০২২ সালে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু…

Narendra Modi first visit to ukraine diplomatic balance between west and russia

পোল্যান্ড হয়ে ইউক্রেনে (Ukraine) পা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর নিয়ে শোরগোল কূটনৈতিকমহলে। কারণ ২০২২ সালে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বহু অনুরোধ সত্বেও সেদেশে পা রাখেননি মোদী (Narendra Modi)। কিন্তু দুবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন মস্কোতে। যা নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছিলেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সস্কি। তিনি বলেন, ”বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী একজন যুদ্ধাপরাধীকে আলিঙ্গন করছেন। শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে এটা বড় ধাক্কা।” তারপরই অবশ্য জানা গেছিল, ইউক্রেনে যাবেন মোদী।

বামেরা এগিয়ে, তাই লোক দেখানো আন্দোলন নয়, সুকান্তদের কড়া বার্তা দিল্লির

   

বিগত দুবছরে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জেরে ইউক্রেনের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক রীতিমতো তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল আমদানি নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন সেদেশের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা। ইউক্রেনীয়দের রক্তের বিনিময় তেল নিচ্ছে ভারত। গতবছর জি-২০ সম্মেলনেও দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি জেলেন্সস্কিকে। যা নিয়েও আমেরিকাসহ পশ্চিমীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল নয়াদিল্লিকে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই গোটা বিশ্বে নিজেদের পক্ষে দল ভারী করতে ‘কূটনৈতিক মেরুকরণে’র চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল আমেরিকা ও পশ্চিমী জোট।

টানা সিবিআই জেরা, ভয়ে কুঁকড়ে ডাঃ সন্দীপ, তার মাঝেই হাইকোর্টের রায়ে মিলল সামান্য স্বস্তি

সেইসময় থেকেই লাগাতার ইউক্রেনের পক্ষ নেওয়ার জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়িয়ে গিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি। রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্কের জেরে মস্কোর পাশে দাঁড়িয়েছিল নয়াদিল্লি। আর তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিল আমেরিকা সহ পশ্চিমী জোট। কূটনৈতিক মহল সূত্রে জানা যায়, ভারতের ওপর নানান কৌশলে চাপ বাড়ানোর চেষ্টাও করেছে হোয়াইট হাউজ।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের ‘ঘনিষ্ট সহযোগী’ শেখ হাসিনার পতনের পেছনেও আমেরিকার হাত রয়েছে বলেও ধারনা কূটনৈতিকমহলের। শেখ হাসিনা নিজেও সেকথা স্বীকার করেছেন। কারণ বাংলাদেশে মার্কিন সহযোগী সরকার থাকলে ভারতের পাশাপাশি বঙ্গোপসাগর অঞ্চল ও চিনের ওপরও নজরদারি চালাতে পারবে আমেরিকা। সেই অভিসন্ধি রয়েছে গোটা ‘চিত্রনাট্যে’র পেছনে। আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা নির্বাচনেও আমেরিকা প্রভাব খাটাতে পারে বলেই মনে করছে কূটনীতিকরা। যা কার্যত চারদিকে ভারতকে ঘেরার চেষ্টা।

সিবিআই-সিটে রক্ষে নেই, এবার প্রাক্তন অধ্যক্ষের দুর্নীতির তদন্তে ইডি?

এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে পশ্চিমীদের কাছে হারানো ভাবমূর্তি পুণরুদ্ধারে মোদীর এই ইউক্রেন সফর বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। তবে মোদীর ইউক্রেন সফর সফল হলে দুই দেশের সম্পর্ক যেমন মজবুত হবে, একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিরও অবসান ঘটতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ মোদীর ইউক্রেন সফরে নজর রাখছে মস্কোও। সুতরাং পুরনো মিত্রের ‘বিশ্বাস’ ভাঙে এমন কিছু হয়তো এই মুহুর্তে হয়তো করতে চাইবে না রাশিয়া। কারণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে মস্কোর কাছে চিনের মতোই ভারতের গুরুত্ব এখন অপরিসীম। অর্থ্যাত্ ইউক্রেন সফর ‘কোনঠাসা’ মোদীর ভাবমূর্তি উদ্ধারে একটি পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছে কূটনৈতিকমহল।