রাশিয়া সফরে বর্তমানে মস্কোতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ছিল রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন। সেখানেই আলোচনায় উঠে আসে রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গ। তখনই মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আর্জি জানান। তুলে ধরেন যে, যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও সমাধান মেলে না।
কী বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?
নৌশভোজের এক ফাঁকে পুতিনকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ভারত সর্বদা আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব সহ রাষ্ট্রসংঘের সনদকে সম্মান করার পক্ষে। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনও কিছুর সমাধান হয় না। আলোচনা এবং কূটনীতিই এগিয়ে যাওয়ার পথ।’
ওই একই আসরে বিদেশ ভ্রমণের নামে ভারতীয়দের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টিও উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী পুতিনকে জানিয়েছেন যে, কীভাবে কিছু অসাধু ট্রাভেল এজেন্ট ভারতীয়দের প্রতারণা করে রুশ সেনায় যোগদান করিয়েছিল। জানা গিয়েছে যে, এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ভারতীয়দের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
অভিযোগ, উচ্চ বেতনের চাকরি প্রাপ্তির অজুহাতে এজেন্টরা প্রায় দু’ডজন ভারতীয়কে প্রতারিত করে সেদেশে নিয়ে যায় এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাধ্য করে। এই বছরের শুরুর দিকে একটি ভাইরাল ভিডিওতে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার একদল ছেলেকে দেখান হয়। সেখানে দাবি করা হয় যে, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ওইসব ছেলেরা ইউক্রেনে যুদ্ধে লড়তে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। ওই ভিডিওতে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেন প্রতারিত যুবকরা।
গত মাসে তৃতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর রাশিতেই প্রথম বিদেশ সফর করলেন মোদী। এই সফর স্থির হওয়ার পর থেকেই ভারত রাশিয়ার সমন্ধে নিন্দা থেকে সরে এসেছে এবং মস্কোর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের সমালোচনামূলর প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছে।
ভারতের ভোটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জয়ের হ্যাটট্রিকের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলেছেন, ‘ফলাফল নিজেদের পক্ষে কথা বলে, অর্থনীতির দিক থেকে ভারত এখন বিশ্বব্যাপী তৃতীয় স্থানে রয়েছে।’
গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের মধ্যে এরকম বৈঠক হয়েছে ১৬ বার। ২০২২ সালে উজবেকিস্তানের সমরকন্দে সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনে তাঁদের শেষবার সাক্ষাৎ হয়েছিল। ২০২৯ সালে, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে রাশিয়ার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার, ‘অর্ডার অফ দ্য হোলি অ্যাপোস্টেল অ্যান্ড্রু দ্য ফার্স্ট’ দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল। ওই বছরই রাশিয়া-ইুক্রেন মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই প্রথম রাশিয়া সফর করলেন।
রাশিয়া সফর শেষে, প্রধানমন্ত্রী মোদী অস্ট্রিয়ায় যাবেন। যা ঐতিহাসিক সফর হতে চলেছে। কারণ, গত চার দশকে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সে দেশে যাননি।