News Desk: একদিকে প্রবল ভয় অন্যদিকে ভোট রাজনীতি, এই দুই কারণে হঠাৎ করে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বলা যেতে পারে মন থেকে নয়, প্রবল ভয় ও আতঙ্কের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
গত রবিবার ১৩ টি রাজ্যের ২৯টি বিধানসভা কেন্দ্র ও তিনটি লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, বিজেপি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। দলের এই হতাশজনক ফলাফল ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এবং আগামী বছরের শুরুতেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে যে বিরূপ প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যায় নরেন্দ্র মোদি সরকার। সে কারণেই তড়িঘড়ি পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু কেন্দ্র নয়, বিজেপি যে ১০টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে সেই রাজ্যগুলিও পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেশ কিছুটা কমিয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই প্রতিদিনই দেশে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ছিল। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। এই মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কংগ্রেস-সহ দেশের প্রায় সবকটি বিরোধীদল। উৎসবের মরসুম শেষ হলেই চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই দেশজুড়ে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা করেছিল কংগ্রেস। উপনির্বাচনের ফলাফল এবং আর এক মাস দুই-তিনের মধ্যেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই মোদি সরকার তড়িঘড়ি পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমিয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানোর পর বিরোধীরা আর আন্দোলন করবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দাম কমার পর এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে বলেন, মোদি সরকার মন থেকে নয় আতঙ্কের কারণে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই লুটেরা সরকারকে আগামী নির্বাচনে উপযুক্ত জবাব দিতে হবে। এজন্য মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রিয়াঙ্কা। পাশাপাশি কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, চলতি বছরে মোদি সরকার প্রতি লিটার পেট্রোলে ২৮ টাকা এবং ডিজেলে ২৬ টাকা দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু বুধবার পেট্রোল ৫ টাকা এবং ডিজেলে ১০ টাকা দাম কমিয়ে মোদি সরকার বলছে, এটা তাদের তরফ থেকে মানুষকে দেওয়া দীপাবলীর উপহার। আসলে এটা আরও একটা বড় জুমলা।
অন্যদিকে আরজেডি নেতা তথা দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব দাম কমানোর এই সিদ্ধান্তকে মোদির নাটক বলে কটাক্ষ করেছেন। লালুর দাবি, কেন্দ্রের উচিত ছিল প্রতি লিটার পেট্রোল ও ডিজেলে ৫০ টাকা করে দাম কমানো। মোদি সরকার দাম এতটাই বাড়িয়েছে যেটা মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। দেখা যাবে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন মিটে গেলে ফের দাম বাড়াবেন মোদি। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা যশবন্ত সিনহা বলেছেন, পেট্রোল-ডিজেলের মাধ্যমে মোদি কোটি কোটি টাকা লুট করেছেন। মোদিজি খুব দয়াবান তাই মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পেট্রোল-ডিজেলে যৎসামান্য দাম কমিয়েছেন। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দেশের বাজারে পেট্রোল-ডিজেলের দামের কী অবস্থা হয় এখন সেটাই দেখার।