Meghalaya Police: মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের চেষ্টায় ধৃতদের অধিকাংশ তৃণমূল-বিজেপি সমর্থক

মেঘালয় (Meghalaya) মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে ঘেরাও করে ভয়াবহ হামলার পর সে রাজ্যের পুলিশের দাবি হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, হামলাকারী হিসেবে ধৃতদের বেশিরভাগই তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক।

মেঘালয় (Meghalaya) মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে ঘেরাও করে ভয়াবহ হামলার পর সে রাজ্যের পুলিশের দাবি হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, হামলাকারী হিসেবে ধৃতদের বেশিরভাগই তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক। মেঘালয় পুলিশের এমন দাবিতে বিতর্ক বাড়ছে। তৃ়ণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল।

সোমবার সরকারি বৈঠকে গিয়ে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন। তুরা শহরে মুখ্যমন্ত্রী যে সরকারি ভবনে বৈঠক করছিলেন সেই ভবনে শতাধিক জনতা ঘিরে নেয়। শুরু হয় পাথর মারা। মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে রাখা রক্ষীরা জখম হন। তারা যে কোনওরকম হামলার জবাব দিতে ছিল তৈরি। প্রয়োজনে তারা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতেও প্রস্তুত ছিল।

বিক্ষোভে জ্বলতে থাকে মেঘালয়ের তুরা শহর। মুখ্যমন্ত্রী জনতার ঘেরাটোপে বন্দি হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। সেই ঘটনা সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করলেন মেঘালয়ের ডিজিপি এল আর বিষ্ণোই। তিনি দাবি করেন, হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করাই উদ্দেশ্য ছিল। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যা করারও পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলেই দাবি করেন তিনি।

রাজধানী শিলংয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মেঘালয়ের ডিজিপি এল আর বিষ্ণোই আরও জানান,”তদন্ত করে জানা গিয়েছে যে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যা করার এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। প্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে ২৩ জুলাই কিছু যুবককে হিংসা ছড়ানোর জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ২৩ জুলাই যুবকদেরকে অনেক পরিমাণে মদ বিতরণ করা হয় এবং অনেক যুবক প্লাস্টিক জারিকেন ভর্তি কেরোসিন নিয়ে আসে। ওদের কাছে ছিল দেশলাই বাক্স, লাইটার। ঘটনাস্থলেই তারা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বিরুপ মন্তব্য রাখছিল। তারা উপস্থিত সকলকে প্ররোচনা দিয়ে খুন অবধি করতে বলে।“

মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, তুরা শহরে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে হামলার ঘটনার জন্য এখনও অবধি ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ১৮ জনের মধ্যে ১১ জনই তৃণমূল কংগ্রেসের এবং ৭ জন বিজেপির এবং বিরোধী দলগুলির সমর্থক। ডিজিপি জানিয়েছেন যে ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন মেঘালয় পুলিসের,৭ জন সিআরপিএফ-এর এবং একজন হোমগার্ড। ২১ টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে, তার মধ্যে ৪টে গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং ১৭ টি ইঁট-পাথর ছুঁড়ে ধ্বংস করে ফেলা হয়। বিশাল বাহিনী মোতায়েন রয়েছে গতকাল রাত থেকে। নাইট কার্ফিউ জারে থাকবে পরবর্তী নির্দেশ আসা পর্যন্ত।

মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা মেঘালয়ের শীতকালীন রাজধানী হিসাবে তুরাকে মনোনীত করা এবং ৫১ বছর বয়সী চাকরি সংরক্ষণ নীতির যথাযথ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশদ আলোচনার জন্য আমন্ত্রিত কিছু স্থানীয় সংস্থার নেতাদের সাথে সোমবার বৈঠক করছিলেন। সেই বৈঠক চলাকালীন শত শত জনতা সিএমওর বাইরে জড়ো হয়ে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘেরাওকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।

নিরাপত্তা রক্ষীরা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালায় বলেই জানা যাচ্ছে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। বারবার সন্ত্রাসবাদে রক্তাক্ত হলেও এমন পরিস্থিতি মেঘালয়ে আগে হয়নি। উত্তরপূর্বাঞ্চলের রক্তাক্ত জাতিগত সংঘর্ষে মণিপুর যখম বিতর্কের কেন্দ্র তখন মেঘালয়ের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি গরম।

জনতার হামলায় ভবনের কিছু জানালার কাঁচ ভেঙে গেলে পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সাংমা বলেছেন ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে। যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। যারা প্ররোচিত করেছে তাদের সম্পূর্ণ ভিডিও রেকর্ডিং আছে। আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতা লাবেন চ বলেছেন সিএমওর বাইরে জড়ো হওয়া আগ্রাসী জনতা তাদের আন্দোলনের অংশ নয়। গত কয়েকদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ অনশনের আয়োজন করে আসছি। স্লোগান দেওয়া এবং পাথর ছোড়া শুরু যারা করেছে তাদের আগে কখনও দেখিনি।