উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সম্ভলের শাহি জামা মসজিদে (Jama Masjid) সমীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় নিম্ন আদালত আর কোনও নতুন নির্দেশ জারি করতে পারবে না। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। এই রায়ের মাধ্যমে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত মসজিদ চত্বরে কোনও নতুন সমীক্ষার কাজ স্থগিত রাখার কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে হিন্দুরা চরম বিপদে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সরব ব্রিটিশ এমপি ব্ল্যাকম্যান
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে, শাহি জামা মসজিদ কমিটিকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে এই বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন করতে হবে। আদালতের বক্তব্য অনুযায়ী, মসজিদ সংক্রান্ত সমীক্ষার বিষয়ে যেসব তথ্য ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলো মুখবন্ধ খামে জমা দিতে হবে। এই নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে শীর্ষ আদালত পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা এড়াতে চেয়েছে।
সম্প্রতি শাহি জামা মসজিদে সমীক্ষার কাজ নিয়ে স্থানীয় আদালতের নির্দেশ বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল। মসজিদ চত্বরে কীভাবে এবং কতটা সমীক্ষার কাজ হবে, তা নিয়ে মসজিদ কমিটি এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়। মসজিদ কমিটি দাবি করে যে, এই ধরনের সমীক্ষা মসজিদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানতে পারে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
স্থানীয় নিম্ন আদালত আগের নির্দেশ অনুযায়ী সমীক্ষার অনুমতি দিলেও সুপ্রিম কোর্ট সেই কাজ আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। শীর্ষ আদালতের মতে, এই সমীক্ষার কাজ যতদিন পর্যন্ত হাই কোর্টের রায় না আসে, ততদিন পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় মহিলা এসপিজি কমান্ডোর ছবি নিয়ে আলোড়ন
মসজিদ কমিটি সুপ্রিম কোর্টে তাদের আপত্তি জানায় এবং এই সমীক্ষার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের বক্তব্য, মসজিদের মতো ধর্মীয় স্থানে এই ধরনের কার্যকলাপ মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
মসজিদ কমিটি আরও জানায়, এই বিষয়টি ইলাহাবাদ হাই কোর্টে তোলার জন্য তারা প্রস্তুত। হাই কোর্টে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করার জন্য তারা প্রয়োজনীয় নথি ও প্রমাণ সংগ্রহ করছে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মুখবন্ধ খামে সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে, আগের সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য আদালতের কাছে সংরক্ষিত থাকবে এবং তাতে কারও অবৈধ হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা থাকবে না।
বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, সমীক্ষার রিপোর্ট ইলাহাবাদ হাই কোর্টে পরবর্তী শুনানির জন্য জমা থাকবে এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দূষণের সঙ্গে মোকাবিলা, ইলেকট্রিক ভেহিকল পলিসির মেয়াদ বাড়াল দিল্লি
এই রায়ের পর শাহি জামা মসজিদ সংক্রান্ত বিতর্ক আপাতত স্থগিত থাকলেও, ইলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ের ওপর নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ। মসজিদ কমিটিকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন জানাতে হবে এবং নিজেদের বক্তব্য বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
এই ঘটনাটি ধর্মীয় স্থানের অধিকার ও সংবিধানের ধারাগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্বকে সামনে এনেছে। আদালতের সিদ্ধান্ত যে কোনও ধর্মীয় স্থানের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ ও ন্যায়বিচার প্রদানের উদাহরণ হতে পারে।