চেন্নাই এবং তামিলনাড়ুর বেশ কিছু এলাকা এখন উচ্চ সতর্কতা অবস্থায় রয়েছে, কারণ দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন(Weather Update) ব্যবস্থার তীব্রতা বাড়ছে। বর্তমানে এটি ত্রিঙ্কোমালি, শ্রীলঙ্কার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্বে ১২০ কিলোমিটার এবং চেন্নাই থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে। এই গভীর নিম্নচাপটি(Weather Update) শীঘ্রই সাইক্লোন (Weather Update) স্টর্মে পরিণত হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।
এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রতি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং শ্রীলঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে ৩০ নভেম্বর চেন্নাই এবং কুদালোরের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে।
এই সাইক্লোনের (Weather Update) ফলে তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির বিভিন্ন অঞ্চলে (Weather Update) প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ভারী বৃষ্টি হতে পারে, সাথে থাকবে ঝোড়ো হাওয়া এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনা। চেন্নাই শহরের বাসিন্দাদের জন্য ২৭ এবং ২৮ নভেম্বর পাঁচ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার পূর্বাভাস রয়েছে, কারণ ওই সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলবে। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, যদি সম্ভব হয় তবে বিদ্যুৎ যত দ্রুত সম্ভব পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছে, কারণ সাইক্লোনের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি অন্যান্য পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তামিলনাড়ুর বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে চেন্নাই, কারাইকল এবং পুদুচেরি, স্কুল-কলেজের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বাড়িতে থাকার পরামর্শ পেয়েছেন।
এদিকে, ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) সতর্ক করে দিয়েছে যে, উপকূলীয় এলাকাগুলিতে সমুদ্রের পরিস্থিতি খুবই খারাপ থাকবে। সামুদ্রিক অঞ্চলগুলোতে মৎসজীবীদের জন্য সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি শুধু ঝোড়ো হাওয়া নয়, বরং ব্যাপক বৃষ্টিপাতও হতে পারে, যা তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলবে।
চেন্নাই শহরের জন্য যে সমস্যাগুলি হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে রাস্তার জলমগ্ন হওয়া, উড়ে যাওয়া গাছপালা, এবং ভবনগুলির ক্ষতি হওয়া। চেন্নাই শহরের নিকটবর্তী উপকূলীয় এলাকা যেমন মাদুরাই, কুম্ভকোনম, এবং রামেশ্বরমের মতো স্থানগুলিতেও এই সাইক্লোনের প্রভাব পড়তে পারে।
তবে, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শহর এবং জেলা পর্যায়ে বিপর্যয় মোকাবেলা দলের সদস্যরা এলাকা ত্যাগ করেছেন এবং উদ্ধারকাজের জন্য বিভিন্ন সংকেত সিস্টেম এবং মোবাইল টিমও প্রস্তুত রয়েছে। বিপদাপন্ন অঞ্চলে আশ্রয় কেন্দ্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে যাতে কোনো প্রয়োজনে মানুষ সেখানে যেতে পারেন। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন তারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যান এবং জরুরি অবস্থা হলে নিরাপদ স্থানে চলে যান।
এছাড়াও, চেন্নাই শহরে অবস্থিত রেলস্টেশন এবং বিমানবন্দরেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিছু ট্রেনের চলাচল বাতিল বা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে এবং বিমানবন্দরেও ল্যান্ডিং ও টেকঅফের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পরিবর্তন আনা হতে পারে। প্রশাসন জনসাধারণকে এই বিষয়ে আগে থেকেই অবহিত করার চেষ্টা করছে এবং যাত্রীদের নির্ধারিত সময়ের আগে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
তামিলনাড়ু সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়ে ওঠে, তাহলে শিগগিরই জরুরি অবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, স্থানীয় আবহাওয়া পরিবর্তনের দিকে নজর রেখে পুরো পরিস্থিতি তদারকি করা হচ্ছে এবং এটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিশেষভাবে সতর্কতামূলক প্রস্তাবনা প্রদান করা হচ্ছে।