Jaunpur Encounter: এনকাউন্টারে ‘নিহত’ বাহুবলী জীবিত হয়ে লোকসভা প্রার্থী

একজন মৃত মানুষও বেঁচে থাকতে পারে! আপনিও হয়তো ভাবছেন এটা কী বোকা প্রশ্ন । কিন্তু এটা ষোল আনা সত্য। এনকাউন্টারের (Jaunpur Encounter) পর ইউপি পুলিশ…

Dhananjay Singh

একজন মৃত মানুষও বেঁচে থাকতে পারে! আপনিও হয়তো ভাবছেন এটা কী বোকা প্রশ্ন । কিন্তু এটা ষোল আনা সত্য। এনকাউন্টারের (Jaunpur Encounter) পর ইউপি পুলিশ উদযাপন করেছে। লাড্ডু খাইয়ে একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান। অনেক সাধুবাদ পায় পুলিশ। যার এনকাউন্টার হয়েছিল, ঠিক তিন মাস পর তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এই ভুয়ো এনকাউন্টার মামলায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ২৫ বছর ধরে মামলা চলে। প্রমাণের অভাবে সবাই খালাস পান।

এখন সেই ধনঞ্জয় সিং, যার এনকাউন্টারের গল্প মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে, আবার খবরে এসেছে।  জৌনপুরের সাংসদ-বিধায়ক আদালত একজন ইঞ্জিনিয়ারকে অপহরণ এবং তার কাছ থেকে চাঁদা দাবির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এই সব ঘটেছে যখন তিনি আবার জৌনপুর থেকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছেন৷

আসলে, ধনঞ্জয় সিং-এর ভুয়ো এনকাউন্টারের এই গল্পটি বলা হচ্ছে , কারণ সেই এনকাউন্টারে যে ইউপি পুলিশ লাঞ্ছিত হয়েছিল, এখন অপহরণ ও তোলাবাজি মামলায় আদালতের আদেশের পরে, সেই ইউপি পুলিশ ধনঞ্জয় সিংয়ের বিরুদ্ধে ফাঁস শক্ত করতে পারে। এই ভুয়ো এনকাউন্টারের গল্প ১৭ অক্টোবর ১৯৯৮ এর। ভদোহি জেলা পুলিশ একটি গোয়েন্দা খবর পায়।

ভাদোহি-মির্জাপুর সীমান্তে একটি পেট্রোল পাম্পে ডাকাতি করতে যাচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রথমে সেখানে পৌঁছায় পুলিশের দল। পুলিশ পেট্রোল পাম্প ঘেরাও করে রাখে। দুর্বৃত্তদের দল আসতেই পুলিশ গুলি চালায়। এই সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়। পুলিশের দাবি, এই এনকাউন্টারে ধনঞ্জয় সিংও নিহত হয়েছেন। তখনকার দিনে ধনঞ্জয় সিংয়ের ওপর ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ছিল। লখনউ পুলিশ তাকে এই পুরস্কার দিয়েছে।

পুলিশ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার রেখেছিল
ব্যাপারটা ১৯৯৭ সালের। লখনউতে আম্বেদকর পার্ক তৈরি হচ্ছিল। ত খন মায়াবতী ইউপির মুখ্যমন্ত্রী। ধনঞ্জয় সিং লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা ছিলেন। পার্কের কাছে খুন হয়েছেন এক ইঞ্জিনিয়ার। খুনের অভিযুক্ত ছিলেন দেওরিয়ার বাসিন্দা রাজু পাহাড়ি। একই মামলায় ধনঞ্জয় সিংকেও আসামি করা হয়। তখন শৈলজা কান্ত মিশ্র লখনউয়ের এসএসপি ছিলেন। তার নির্দেশে ধনঞ্জয় সিং-এর উপর ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার রাখা হয়েছিল।

ধনঞ্জয় সিংয়ের জাল এনকাউন্টার কীভাবে ফাঁস হয়েছিল?
যেদিন ভাদোহিতে পুলিশ এনকাউন্টারে ধনঞ্জয় সিং নিহত হওয়ার দাবি করা হয়েছিল সেদিন গল্পে নতুন মোড় আসে। খোদ ভাদোহির এক ব্যক্তি সেখানকার এসপির কাছে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগে বলা হয়েছে যে ধনঞ্জয় সিং হিসাবে বর্ণনা করা ব্যক্তিটি তার ভাগ্নে। এ খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। শহরে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। তিনদিন ধরে চলে বিক্ষোভ। অনেক মানবাধিকার সংগঠনও প্রতিবাদে নামে। বিষয়টি লখনউ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এরপর ইউপি সরকার এই মামলার তদন্তভার সিবি-সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এনকাউন্টারে নিহত হওয়ার দাবি করে ধনঞ্জয় সিং আদালতে পৌঁছান
আরেকটি তারিখ ইউপি পুলিশ ফাঁস. একদিন যে ব্যক্তিকে এনকাউন্টারে নিহত বলে দাবি করা হয়েছিল সে আদালতে পৌঁছেছে। তারিখটি ছিল ১১ জানুয়ারী ১৯৯৯। বাহুবলী ধনঞ্জয় সিং সেই দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কথিত পুলিশ এনকাউন্টারের পর তিনি আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যান। ধনঞ্জয় সিং অপরাধের জগত ছেড়ে রাজনীতিতে ভাগ্য চেষ্টা করতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেন। কয়েক মাস জেলে ছিলেন। তারপর ২০০২ সালে নির্দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিধায়ক হন।