মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। এথিক্স কমিটির সুপারিশকে মান্যতা দিয়ে ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর)। সাংসদ পদ খোয়ানোর পরই সংসদের বাইরে বেরিয়ে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মহুয়ার পাশে দাঁড়ান কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। এছাড়া সমাজবাদী পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স পার্টি মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদ করে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, “দর্শন হিরানন্দানিকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়নি। আমার প্রাক্তন প্রেমিক জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে দোষী বানানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে টাকার বিনিময়ে সংসদে আমি প্রশ্ন করেছি। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর হলফনামায় বলা হয়েছে যে আমি নাকি ওনাকে চাপ দিয়েছিলাম নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এই প্রশ্ন করতে। দুই অভিযোগের মধ্যে দূর-দূরান্তে কোনও মিল নেই। এথিক্স কমিটি গভীরে তদন্ত না করেই আমায় ফাঁসিতে চড়িয়েছে। অভিযোগকারী ব্যবসায়ীর বয়ানই শুনতে চায়নি এথিক্স কমিটি। কোনও প্রমাণ নেই টাকা বা অন্য কোনও উপহার নেওয়ার।”
মহুয়া মৈত্র আরও বলেন, “আমি লোকসভার সংসদীয় ইমেইল আইডি ভাগ করে নিয়েছি, শুধু তার ভিত্তিতে আমাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু সংসদের নিয়মে ইমেইল আইডি নিয়ে কোনও নিয়ম নেই। যদি মোদী সরকার ভাবে আমার সংসদ পদ খারিজ করে আদানি ইস্যু নিয়ে চুপ করানো যাবে, তবে আমি বলছি শুনুন, এই ক্যাঙারু কোর্ট প্রমাণ করল, কীভাবে আইনের অপব্যবহার করা হল, আদানি আপনাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে একজন মহিলা সাংসদকে হেনস্থা করা হল। আগামিকাল আমার বাড়িতে সিবিআই পাঠানো হবে। ওরা আমায় ৬ মাস ধরে হেনস্থা করবে। কিন্তু আমি প্রশ্ন করছি, আদানির ১৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির কী হল, যা ইডি-সিবিআই এখনও তদন্ত করে উঠতে পারল না? আমি নাকি জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছি লগ ইন আইডি শেয়ার করে। আদানি আমাদের সমস্ত বন্দর, বিমানবন্দর কিনে নিচ্ছে। আদানির শেয়ারহোল্ডাররা সকলেই বিদেশি প্রতিষ্ঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাতে অনুমতি দিচ্ছে।”
মহুয়া বলেন, “সংখ্য়ালঘু ২৬ জন সাংসদের মধ্যে একমাত্র মুসলিম সাংসদ দানিশ আলি। বিজেপি ৩০০ সাংসদের মধ্যে একজনও মুসলিম সাংসদ নেই। রমেশ বিদুরী সংসদে উঠে তাঁকে বলেন, এই ভারওয়া, এই কাটওয়া…তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আপনারা সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করেন। মহিলাদের আক্রমণ করেন। নারীশক্তিকে সহ্য় করতে পারেন না। আমি ৪৯ বছর বয়স। আগামী ৩০ বছর আমি আপনাদের বিরুদ্ধে লড়ব। তোদের চিতায় তুলব। পঞ্জাব, সিন্ধু, দ্রাবিড়, উৎকল, বঙ্গ- পঞ্জাব আপনাদের নয়, সিন্ধু আমাদের নয়। উৎকল আপনাদের নয়, বঙ্গ আপনাদের নয়, তবে আমাদের কোথায় শাসন করবেন? কোথা থেকে পান এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা? এথিক্স কমিটির কোনও অধিকার নেই সাংসদ পদ খারিজ করার। এটাই আপনাদের বিনাশের শেষ। আমি আবার ফিরে আসব।”