Draupadi Murmu: কলিঙ্গ যুদ্ধ! জঙ্গল সন্তানদের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ দেখেও নীরব ছিলেন ‘আদিবাসী রাষ্ট্রপতি’

দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu) দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেবেন। তিনি দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি। বিশ্বে কোনও আদিবাসী তাও আবার মহিলা কোনও দেশের…

Draupadi murmu and 2006 kalinganagar tribal killing controversy

দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu) দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেবেন। তিনি দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি। বিশ্বে কোনও আদিবাসী তাও আবার মহিলা কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন কিনা সেরকম তথ্য মিলছে না বলেই আলোচিত। আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করার পর এনডিএ শিবির তথা বিজেপির দাবি, এতে দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হলো। বিজেপির আগে এমন ভাবনা কেউ ভাবতে পারেনি।

একেবারেই আদিবাসী পরিবারের কন্যা দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে। পরবর্তী সময়ে বিজেপির রাজনীতিতে আসেন। ওড়িশায় বিজেপি এবং বিজু জনতা দলের (বিজেডি) জোট সরকারের সময় দ্রৌপদী ২০০০- ২০০২ পর্যন্ত বাণিজ্য ও পরিবহণ ও পরে ২০০২- ২০০৪ পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উন্নণের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

আর ২০০৬ সালে ওড়িশায় জঙ্গলের মানুষদের প্রতিবাদ আন্দোলনে পুলিশের গুলি চলে। ভয়াবহ সেই ঘটা একুশ শতকের কলিঙ্গযুদ্ধ নামে বিশেষ আলোচিত। কারণ গুলিবিদ্ধ হয়ে আদিবাসীদের মৃত্যু হয়েছিল কলিঙ্গ নগর জেলায়। এই ঘটনার পর নীরব থাকার অভিযোগ বারবার তাড়া করেছে দ্রৌপদী মুর্মুকে। এমনকি তিনি যখন ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল তখনও সেখানকার আদিবাসী জনজীবনে কলিঙ্গ নগর সংঘর্ষের পর দ্রৌপদীর নীরবতা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল। ঝাড়খন্ডের তৎকালীন বিজেপি সরকার সেই ক্ষোভ চাপা দেয়।

tribal killing controversy

সেই কলিঙ্গ যুদ্ধ: একুশ শতকের রক্তাক্ত কলিঙ্গ নগর
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে কলিঙ্গ যুদ্ধ বহুল আলোচিত। এই যুদ্ধে অগনিত মানুষের মৃত্যুর জেরে মৌর্য সম্রাট অশোকের আমুল পরিবর্তন হয়। আর একুশ শতকের কলিঙ্গ নগরে আদিবাসীদের রক্তাক্ত দেহ দেখে নীরব থেকে যান আদিবাসী বিজেপি রাজনীতিক দ্রৌপদী মুর্মু।

এই কলিঙ্গ নগরে ‘আদিবাসী গণহত্যা’র পিছনে আছে শিল্পের জন্য জমি নেওয়া ও তার প্রতিবাদে বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতৃত্বে আদিবাসীদের প্রতিবাদ। ওড়িশা সরকার টাটা সংস্থার জন্য শিল্পের জমি নির্দিষ্ট করে। ২০০৬ সালে সালের ২রা জানুয়ারি টাটা সংস্থার প্রতিনিধিরা পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে জমির অধিগ্রহণ করতে এলেই সংঘর্ষ ছড়ায়। ১৫ টি গ্রামের চারশোর বেশি আদিবাসী মানুষ তীর ধনুক নিয়ে রুখে দাঁড়ান। পুলিশ গুলি চালায়। কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। আদিবাসী বিদ্রোহে জ্বলছিল কলিঙ্গ নগর।

কলিঙ্গ নগর সংঘর্ষের ঘটনায় তীব্র বিতর্কে জড়ায় ওড়িশার বিজেডি-বিজেপি জোট সরকার। কেন দ্রৌপদী মুর্মু নীরব সেই প্রশ্নে বিতর্ক উস্কে ওঠে। তবে তিনি নীরবই থেকে যান। ২৫ জুলাই তিনি দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে বসবেন দ্রৌপদী। কলিঙ্গ নগর সংঘর্ষ তাঁকে নীরবেই তাড়া করবে।