Dilip Ghosh: খাতায় কলমে মোদী-শাহর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ‘দিলুদা’ এখন নি:সঙ্গ

রাজনৈতিক কৌশলে বিশ্বাসী সংঘ পরিবারের (RSS Family) ‘সংগঠক’ বলে সুপরিচিত দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) এবার বিজেপির তার সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ থেকে সরাল।

amit shah dilip ghosh

সংগঠনই শেষ কথা। সংগঠন ছাড়া দল অচল। এই রাজনৈতিক কৌশলে বিশ্বাসী সংঘ পরিবারের (RSS Family) ‘সংগঠক’ বলে সুপরিচিত দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) এবার বিজেপির তার সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ থেকে সরাল। বিজেপির (BJP) অন্দরে উঁকি মারলে দেখা যাবে এই ‘সর্বভারতীয় সহ সভাপতি’ পদ আসলে আলঙ্কারিক। এর তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। তবে পদের ভারত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির ঠিক পরের পদটি ছিল দিলীপ ঘোষের দখলে। খাতায় কলমে তিনি ছিলেন মোদী, শাহর থেকেও উচ্চাসনে! রাফ-টাফ দিলীপ ঘোষের সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি আড়ে বহরে বেড়ে এখন রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল। যা বিজেপির রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যতম রাজনৈতিক সাফল্য। তবে বিজেপির আদিপুরুষ বলে চিহ্নিত বিলুপ্ত জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এখনও পদ্মফুলের সরকার গঠন হয়নি।

আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পদ থেকে দিলীপকে ছাঁটল বিজেপি

সংঘ মদতে বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষ্ঠিত করতে আদা-জল খেয়ে নেমেছিলেন দিলীপ ঘোষ। পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ সময় কমিউনিস্ট নামধারী বামপন্থী সরকার থাকার সুবাদে বিজেপি ছিল ক্ষয়িষ্ণু। সেই বাম সরকার পতনের পর তৃণমূল কংগ্রেস আমলে গোটা রাজ্য জুড়ে বিজেপি ও সংঘের শাখা ছড়িয়ে পড়ে। বাম শিবিরের বিশ্লেষকরা বলেন, রাজ্যে বিজেপি ও সংঘের প্রসারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা আছে। কারন তিনি সংঘের নজরে ‘দেবী দুর্গা’।

পশ্চিমবঙ্গে সংঘের দায়িত্ব নিয়ে এই মমতা সরকারের আমলেই দিলীপ ঘোষ তাঁর সাংগঠনিক তৎপরতা দেখিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে দলীয় সাংগঠনিক পদ সরানোর কারণ নিয়ে তীব্র শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। মনে করা হচ্ছে, দিলীপ ঘোষকে ভোট প্রচারে বেশি করে নামাতে মরিয়া বিজেপি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কাজটি তাঁর সর্বভারতীয় পদটি রেখেও করতে পারত বিজেপি। এক্ষেত্রে বিজেপি গোটা দেশজুড়ে আর একজন অবাঙালি মুখ আনতে চলেছে। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার নির্দেশে দিলীপ ঘোষের পদ চলে গেছে। তিনি এখন শুধুমাত্র একজন বিজেপি সাংসদ।

বিজেপির রাফ-টাফ নেতা দিলীপ ঘোষ গত বাম জমানায় রাজ্যে তেমন পরিচিত ছিলেন না। তাঁর উত্থান হয় বাম জমানার পতনের পর। তৃণমূল কংগ্রেস আমলে বিজেপির দলীয় সংগঠন ও আরএসএসের মতাদর্শ নিয়ে দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে আসেন। তাঁকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল। দায়িত্ব নিয়েই তিনি বিজেপির খুঁটি মজবুত করেন। তবে গত বিধানসভা ভোটে সরকার গঠনের তীব্র বার্তা দিয়েও বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। তারা হয় প্রধান বিরোধী দল। এর পর দিলীপ ঘোষ সংগঠনে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তাঁর বদলে নরমপন্থী বলে পরিচিত সুকাম্ত মজুমদারকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি করা হয়। সেই শুরু দিলীপের সাংগঠনিক ডানা ছাঁটা। দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ দেওয়া হলেও তাঁর কোনও কাজ ছিলনা। এবার সেই পদটিও চলে গেল।