পাকিস্তানের (Pakistan) হাতে দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্নপূর্ণ তথ্য? যে ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে তো তেমনই আশঙ্কা। জানা গিয়েছে হায়দরাবাদে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন গবেষণাগারের (ডিআরডিএল) একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীকে হানিট্র্যাপে (honeytrap) ফেলে এক পাকিস্তানি এজেন্ট। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানের একজন আইএসআই অপারেটিভকে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের গোপন প্রতিরক্ষা তথ্য দেওয়ার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই কর্মচারীকে। ২৯ বছর বয়সী ওই অভিযুক্তের নাম ডুক্কা মল্লিকার্জুন রেড্ডি ওরফে অর্জুন বিট্টু।
১৭ জুন অর্থাৎ শুক্রবার হায়দরাবাদের বালাপুরের ত্রিবেণী নগরে অর্জুনকে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে রাচাকোন্ডার এলবি নগর জোন পুলিশের স্পেশাল অপারেশন টিম ও বালাপুর পুলিশ। রাচাকোন্ডা পুলিশ কমিশনার মহেশ এম ভাগবত, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জি সুধীর বাবু, এলবি নগরের ডিসিপি সানপ্রীত সিং, ডিসিপি (এসওটি) কে মুরলীধর এবং পুলিশের ডেপুটি কমিশনার, বিশেষ অপারেশন টিম, রাচাকোন্ডার তত্ত্বাবধানে গ্রেপ্তার করা হয় অর্জুনকে।
পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে রাচাকোন্ডার এলবি নগর জোন পুলিশের স্পেশাল অপারেশন টিম ও বালাপুর পুলিশ যৌথ অভিযানে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি (ডিআরডিএল) এর চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি অত্যন্ত গোপন ও সুরক্ষিত তথ্য ওই পাকিস্তানি এজেন্টের হাতে তুলে দিয়েছেন। ডিআরডিএল-আরসিআই কমপ্লেক্সের গোপন তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একজন সন্দেহভাজন আইএসআই মহিলা হ্যান্ডলারের কাছে তুলে দেওয়ার ফলে জাতীয় অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
রেড্ডির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৪০৯ ধারা এবং রাচাকোন্ডা পুলিশ কমিশনারেটের বালাপুর থানায় অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট-১৯২৩-এর ৩ (১) (সি), ৫ (৩), ৫ (১) (এ) ধারায় মামলা করা হয়েছে। তার দুটি মোবাইল ফোন, একটি সিমকার্ড ও একটি ল্যাপটপও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশের স্পেশাল টিম।
পুলিশ সূত্রে খবর বিয়ের অজুহাতে হায়দরাবাদ ডিআরডিএল কর্মীকে ফাঁদে ফেলে পাকিস্তানের ওই আইএসআই অপারেটিভ। রিপোর্ট অনুসারে, অর্জুন হায়দরাবাদের বালাপুরে ডিফেন্স ল্যাবের আরসিআই কমপ্লেক্সে একটি নেভি প্রোগ্রামে কাজ করছিলেন। তিনি ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ফেসবুকে DRDL-এর সাথে তার চাকরির স্ট্যাটাস আপডেট করেন। দুই বছর পরে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে নাতাশা রাও নামটি ব্যবহারকারী পাকিস্তানের একজন ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স হ্যান্ডলারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তিনি নিজেকে ইউকে ডিফেন্স জার্নালের কর্মচারী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন। ওই নাতাশার বাবা নাকি যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার আগে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে কাজ করেছিলেন।
নাতাশা রাও ওরফে সিমরান চোপড়া ওরফে ওমিশা আডি সোশ্যাল মিডিয়ায় রেড্ডির সাথে বন্ধুত্ব করে এবং তারপর তাকে প্রেম ও বিয়ের অজুহাতে হানিট্র্যাপে ফেলে। এরপরেই ডিআরডিএল-আরসিআই কমপ্লেক্স সম্পর্কে গোপন তথ্য ফাঁস করতে বলে।
রিপোর্ট অনুসারে, অর্জুন রেড্ডি গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আইএসআই হ্যান্ডলারের কাছে গোপন প্রতিরক্ষা বিবরণ দেন। কিন্তু নাতাশা যখন তার ফেসবুক প্রোফাইল নাম পরিবর্তন করে সিমরান চোপড়া করে এবং তার সাথে চ্যাট করা বন্ধ করে তখন অর্জুনের সন্দেহ জাগে। তদন্তের সময়, পুলিশ নাতাশা রেড্ডির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদও চায়, কিন্তু সে অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তর করেছে কিনা তা তারা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি।