ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে উত্তরাখণ্ড ও কেরলে

নিউজ ডেস্ক: ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে উত্তরাখণ্ড ও কেরল মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৯। এখনো ১৭…

landslides, Uttarakhand

নিউজ ডেস্ক: ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে উত্তরাখণ্ড ও কেরল মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৯। এখনো ১৭ জনের বেশি মানুষের কোনও খোঁজ মিলছে না। আহতের সংখ্যাও প্রায় ৪০। দ্রুত উদ্ধার কাজ চলছে।

পাশাপাশি কেরলেও বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮। এই এ রাজ্যেও বহু ঘরবাড়ি জলের স্রোতে সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের কোন খোঁজ নেই।

গত কয়েক দিনের তুলনায় উত্তরাখণ্ডে অবশ্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমেছে। বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আকাশপথে দেবভূমি পরিদর্শন করেন। এবারের বন্যায় উত্তরাখণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৭ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গাতেই রাস্তাঘাট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও বেশিরভাগ জায়গাতেই বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বহু জায়গাতেই পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজ ১৭ জন পর্যটকের মধ্যে ৯ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। মৃতদের মধ্যে পাঁচজন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।

floods, landslides, Uttarakhand, Kerala

অন্যদিকে কেরলের ইদুক্কি, কোট্টায়াম পাত্থানমিট্টা, আলাপ্পুঝা, এর্নাকুলাম সহ ৭ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। এই সব জেলায় নতুন করে হলুদ সর্তকতা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি এই রাজ্যে বন্যার জল কিছুটা নামতেই একাধিক স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়। যে কারণে ওই সমস্ত জেলাগুলিতে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলি ফের জলের তলায় চলে গিয়েছে। মৌসম ভবন শুক্রবারও কেরলের জন্য কোনও আশার খবর শোনাতে পারেননি। বরং মৌসম ভবন এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘন্টা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে কেরলে।

এবারের বন্যায় উত্তরাখণ্ডে পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। এই মুহূর্তে পর্যটনের ভরা মৌসুম চলছে উত্তরাখণ্ডে। উৎসবের মরসুমে বহু মানুষ সেখানে বেড়াতে গিয়েছেন। অনেকে গিয়েছিলেন ট্রেকিংয়ের জন্য। এই সমস্ত পর্যটকরা বন্যায় সবচেয়ে বেশি নাকাল হয়েছেন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ট্রেকার প্রাণ হারিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ইতিমধ্যেই মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন স্থানীয় প্রশাসনকে দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরাখণ্ড ও কেরল দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। বন্যা কবলিত দুই রাজ্যের পুনর্গঠনে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন মোদি। দুই রাজ্যের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কত তা এখনও জানা যায়নি। বন্যার জল সম্পূর্ণ নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।