অবাধে দেহব্যবসা চালানোর জন্য ‘রক্ষাকবচ’ চেয়ে আদালতে ‘আবদার’ আইনজীবীর!

দেহ ব্যবসা চালাবেন এক ব্যক্তি, আর সেজন্যই আদালতের থেকে বিশেষ সুরক্ষা চেয়েছেন তিনি (Chennai)। এই ব্যক্তি আবার নিজেই আইনজীবী (Chennai)! যা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র…

দেহ ব্যবসা চালাবেন এক ব্যক্তি, আর সেজন্যই আদালতের থেকে বিশেষ সুরক্ষা চেয়েছেন তিনি (Chennai)। এই ব্যক্তি আবার নিজেই আইনজীবী (Chennai)! যা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র চাঞ্চল্য (Chennai)। খোদ বিচারপতিও এমন মামলা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন।

ঘটনাটি মাদ্রাজ হাইকোর্টের। আবেদনকারীর নাম আডভোকেট রাজা মুরুগান। তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে একটি পতিতালয় চালাবার অভিযোগে পুলিশ তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি এফআইআর করেছে। সেই এফআইআর তুলে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা করেছেন মুরুগান। তিনি আরও দাবি জানিয়েছেন যে, তার এই ব্যবসায় যেন কোনোভাবেই পুলিশি কোন হস্তক্ষেপ বা বাধার সৃষ্টি ভবিষ্যতে না হয়।

   

মামলাকারীর এহেন আবেদন দেখে রীতিমতন চক্ষু চরক গাছ বিচারপতি বি পুগালেন্দির। মুরুগান তার দাবির স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন। মুরুগানের বক্তব্য, প্রাপ্তবয়স্ক সকল নাগরিকেরই যৌনতার অধিকার আছে। সেই অধিকারের ভিত্তিতে তাকে পতিতালয় চালাবার অনুমতি দেওয়া হোক।

ববিকে বরখাস্তের দাবিতে গীতা হাতে পথে শুভেন্দু! বয়কটে প্রবল চাপে ফিরহাদ?

যদিও আদালত মুরুগানের এই আজব দাবিতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত না করে মামলাটি সটান খারিজ করে দিয়েছে। আদালতে মুরুগান তার দাবির স্বপক্ষে একটি পুরনো মামলার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। সেটিও কার্যত নাকচ করে দিয়েছেন বিচারপতি। বিচারপতির বক্তব্য যে মামলার কথা মুরুগান বলছেন, তাতে পতিতালয়ের যৌন অত্যাচার থেকে নারীদের স্বাধীনতা এবং উদ্ধার করে সমাজজীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ ছিল। উল্টে আদালতের দাবি, গরীব মহিলাদের সমস্যার সুযোগ নিয়ে মুরুগান তাদেরকে ব্যবহার করছেন নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।

সেই সঙ্গে বিচারপতি পুগালেন্দি, অভিযুক্ত রাজা মুরুগানের আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। নিজেকে বার কাউন্সিলের সদস্য বলে দাবি করেছিলেন মুরুগান। তাই বার কাউন্সিলকে মুরুগানের শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয় তদন্ত করে দেখার কথাও বলেছেন বিচারপতি। যদিও বার কাউন্সিল জানিয়েছে যে এই বিষয়টি তাঁদের হাতে নেই। গোটা বিষয়ে বার কাউন্সিল তাদের অপারগতার কথা জানিয়েছে বিচারপতির সামনে।

তামিলনাড়ুতে অসংখ্য ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি আইনশিক্ষার প্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। বিচারপতি সেই নিয়েও এজেলাসে বসেই সরব হন। এমনকি বার কাউন্সিলকে মেম্বারশিপ দেওয়ার আগেই শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশ্বস্ততা নিয়ে খতিয়ে দেখতেও অনুরোধ করেছেন বিচারপতি। মুরুগানের মত লোকজন যাতে কোনভাবেই প্র্যাকটিস না করতে পারে সেদিকে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটার জানান যে আদতে বিটেক পাস মুরুগানের বার কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্তির শংসাপত্র রয়েছে। কিন্তু তিনি সত্যি সত্যিই ঠিকঠাক মতো আইন পড়েছেন কিনা তা নিয়ে কোন প্রামাণ্য নথি তাঁদের কাছে নেই। এরই ভিত্তিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অখ্যাত অনামি প্রতিষ্ঠান থেকে এইভাবে পাস করে সরাসরি বার কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্তি মেনে নেওয়া যায় না। এতে আদালত, বার কাউন্সিল এবং সমগ্র আইন ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গরিমা উভয়ই নষ্ট হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন কাউন্সিলের সদস্যপথ দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সুনামের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।

Mamata Banerjee: ‘আমাকে শেখাবেন না’, বলে উঠলেন ক্ষুব্ধ মমতা! হঠাৎ হল কী?

তবে এত কিছুর পরেও অভিযুক্ত আইনজীবী মুরুগান কিন্তু তাঁর দাবিতে অনড়। তার আরও দাবি, শুধুমাত্র যৌনতাই নয়, থেরাপিউটিক ম্যাসাজ এবং মেন্টাল কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও আছে তার এই পতিতালয়ে। যদিও আপাতত পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে এই পতিতালয়ের দরজায় তালা পড়েছে। হাইকোর্টে ব্যর্থ হয়েছেন মুরুগান। এবার নিজের সাধের পতিতালয়ের দরজার তালা খুলবার জন্য কী সুপ্রিম কোর্টের দরজায় হাজির হবেন তিনি? মাদ্রাজ হাইকোর্টের আইনজীবী মহলে এই নিয়ে ইতিমধ্যেই কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছে।