Bangladesh 50: গণহত্যার কেন্দ্র মিরপুর যেন ‘মিনি পাকিস্তান’, উল্লাসে উড়ছে পাক পতাকা

News Desk: মুক্তিযুদ্ধ অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যে রক্তাক্ত সংগ্রাম চলেছিল টানা ৯ মাস ধরে, তার চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগেই বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তান…

Pakistan flag with Bangladeshi Suporters cheering when their country loosing match

News Desk: মুক্তিযুদ্ধ অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যে রক্তাক্ত সংগ্রাম চলেছিল টানা ৯ মাস ধরে, তার চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক আগেই বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তান সরকার ও তাদের সেনাবাহিনী। গণহত্যার সেই কেন্দ্র ঢাকার মিরপুর। সেখানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তিতে পাকিস্তানের পতাকা নিয়েই উল্লসিত বহু বাংলাদেশি!

বিখ্যাত মিরপুর স্টেডিয়াম জুড়ে পাকিস্তানের পতাকা উড়িয়ে আনন্দ প্রকাশ করছেন বহু বাংলাদেশি। এমনকি পাকিস্তানের নামে চলছে বিজয়ধ্বনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে তৈরি করেছে তীব্র আলোড়ন। এননকি পাকিস্তানের রাজনীতিতেও ফেলেছে শোরগোল। সেইসঙ্গে ভারতেও শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা।

ঘটনার কেন্দ্রে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ক্রিকেট সিরিজ। এই সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে পাকিস্তান দল। ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে এত বাংলাদেশি পাকপন্থী সমর্থক দেখে হতবাক পাক ক্রিকেটাররা। তাদের দেশেরই জাতীয় পতাকা নিয়ে বাংলাদেশি ‘পাকপন্থীদের’ উল্লাস এতটাই যে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের অনেকেই বলছেন, মনে হচ্ছে করাচি, লাহোর বা নিজের দেশের কোথাও ম্যাচ চলছে।

Pakistan flag with Bangladeshi Suporters cheering when their country loosing match

এদিকে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের কাছে পরপর পরাজয় হয়েছে বাংলাদেশের। বিবিসি ও ঢাকার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, যতবার বাংলাদেশের ক্রিকেটার আউট হচ্ছে, ততবারই মিরপুর জুড়ে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান’ বলে উল্লাস শুরু। বাংলাদেশের পরাজয় ঘোষণা হতেই দর্শকদের একাংশ পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে বিজয় উল্লাস করছেন।

বিতর্ক এখানেই প্রবল। পাকিস্তান দ্বিখণ্ডিত হয়ে বাংলাদেশ জন্ম নেয়। ১৯৭১ পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক ততটা বাড়েনি যতটা গত কয়েকবছরে বেড়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশ পালন করছে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ অভিযানে ঢাকাতেই পাকিস্তানি সেনা ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণ করেছিল ১৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের সেই দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার এবারে বিশেষ উদযাপন করবে। তার আগে পাকিস্তানের প্রতি এমন সমর্থন বাড়ছে দেখে চিন্তিত মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ও বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীদের বেশিরভাগ।

নিজের দেশ হারছে আর মিরপুর স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে বাংলাদেশি দর্শকদের একাংশের বিজয় পালনের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দেশটির প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তাজা।

মাশরাফি ফেসবুকে লিখেছেন,”দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, মিরপুরের গ্যালারিতে পাকিস্তানি দর্শকদের পাশাপাশি বাংলাদেশি দর্শকদের হাতেও পাকিস্তানি পতাকা দেখা গেছে। এই দৃশ্য দেখে কোটি কোটি বাঙালির মতো মাশরাফি বিন মর্তুজার হৃদয়েও রক্তক্ষরণ হয়েছে। খেলার সঙ্গে কোনো কিছু মেলানো যায় না এটা ঠিক, কিন্তু খেলাটা যখন আমাদের দেশে আর খেলছে আমাদের দেশ, সেখানে অন্য যে দেশই খেলুক না কেন, তাদের পতাকা তাদের দেশের মানুষ ছাড়া আমাদের দেশের মানুষ উড়াবে, এটা দেখে সত্যি কষ্ট লাগে। যে যাই বলুক, ভাই দেশটা কিন্তু আপনার। আজ হয়নি তো কাল হবে, না হলে পরশু হবে। আপনারা পাশে না থাকলে আর হবেই না। হারি বা জিতি স্টেডিয়ামে আমাদের দেশের পতাকা উড়ুক চিৎকার হোক বাংলাদেশ।”