বনধ সফলে মানিক ‘কনফিডেন্ট’, বঙ্গ বাম হাই তুলছে

নিউজ ডেস্ক: দুই বাংলাভাষী রাজ্যেই বামেরা ক্ষমতায় নেই। সরকারে না থাকলেও বঙ্গ বামেদের মতো ঝিমিয়ে যায়নি ত্রিপুরি বামেরা, তা রাজনৈতিক ভূমিকা থেকেই স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গ ও…

Manik sarkar

নিউজ ডেস্ক: দুই বাংলাভাষী রাজ্যেই বামেরা ক্ষমতায় নেই। সরকারে না থাকলেও বঙ্গ বামেদের মতো ঝিমিয়ে যায়নি ত্রিপুরি বামেরা, তা রাজনৈতিক ভূমিকা থেকেই স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা দুই রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি বনধ বিরোধী। তবুও যে কোনও ইস্যুতে বনধ পালনে কেন্দ্রীয় কমিটির খাতায় ত্রিপুরায় এখনও একশ তে একশ পান মানিক সরকার। আর বঙ্গ বামের কাছে আসে হতাশা।

সোমবার দেশজোড়া বনধ। কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বে চলা এনডিএ সরকারের কৃষি আইনের প্রতিবাদে যে কৃষক অবস্থান বিক্ষোভ চলছে তারই রেশ ধরে বনধ ও চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি নিয়েছে কৃষক সংঘর্ষ সমিতি। সর্বভারতীয় কৃষক আন্দোলনের অন্যতম সারা ভারত কৃষক সভা যা কিনা সিপিআইএম ও সিপিআইয়ের শাখা তারাও বনধ সমর্থন করেছে।

শুধু কৃষক সংগঠনগুলি নয়, সংঘ পরিবারের বিএমএস বাদে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলিও এই বনধকে সমর্থন করেছে। কংগ্রেস, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি, বিএসপি, আরজেডি ও বাম দলগুলি বনধের পক্ষে। ব্যাংক, বিমা, খনি, রেল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিক সংগঠনও সমর্থন করেছে।

বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, ছত্তিসগড়, কর্নাটক, কেরলে। বিহার, ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ, অসমে প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

উত্তর পূর্বে বনধের সর্বাধিক প্রভাব পড়তে চলেছে ত্রিপুরায়। রাজ্যের বিরোধী দল সিপিআইএম সরাসরি বনধ পালনে নামবে। ত্রিপুরায় বিরোধী আসনে থেকে বনধ সফল করালেও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা হারানোর পর বামেদের ডাকা বনধ কর্মসূচি একেবারেই ফ্লপ হয়। তবে বনধের সকালে কিছু রেষ থাকে ট্রেন চলাচলে। কলকাতা শহরতলী লাগোয়া স্টেশনে বনধ পালনকারীদের রোষ দেখা যায়।

কৃষক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য সরকার জানায়, বনধ পালন হবে না। অন্যদিকে ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার সরাসরি কৃষক আন্দোলনের বিরোধিতা করছে। কিন্তু বিরোধী দল সিপিআইএম বনধে অনড়। আশঙ্কা বনধ ঘিরে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়াতে পারে। সম্প্রতি যেভাবে রাজনৈতিক সংঘর্ষে জ্বলেছিল ত্রিপুরা, সেরকমই আশঙ্কা থাকছে।

তবে বঙ্গ বামেদের মতো হাই তোলা কর্মসূচি নেই ত্রিপুরার বামেদের। সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে মরিয়া বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। কলকাতায় তাঁর দলীয় সহকর্মীদের আক্ষেপ এমন নেতা কেন যে নেই এই ‘দু:সময়ে’।

বনধের দাবিগুলি একনজরে
★নয়া তিন কৃষি আইন বাতিল করো এবং বিদ্যুৎ বিল বাতিল করো।
★ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য গ্যারান্টি আইন চালু করো।
★ধান, আলু, পাট সহ সমস্ত কৃষি ফসল উৎপাদন খরচের দেড়গুণ দামে সরকারকে কিনতে হবে।
★গ্রামীণ মজুরদের বছরে ২০০ দিনের কাজ ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি দিতে হবে।
★আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গল থেকে উচ্ছেদ করা চলবে না।
★কৃষিপণ্যের মজুতদারী ও কালোবাজারী বন্ধ করো।
★কৃষককে কর্পোরেটদের গোলামে পরিণত করা চলবে না।
★শ্রমিকদের শ্রম আইনের অধিকার কেড়ে নিয়ে শ্রম কোড চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।
★পেট্রোল-ডিজেল সহ নিত্যপণ্যের মূলবৃদ্ধি কার স্বার্থে?
★দেশের সরকারী সম্পদ বেসরকারী করা চলবে না।