Bangla pokkho: করপোরেশনের পরীক্ষা বাংলায় করার দাবিতে রাজপথে প্রতিবাদ বাংলাপক্ষের

বাংলাপক্ষ (Bangla pokkho) মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের এর অফিস অভিযান করবে। এই অভিযান আগামী বুধবার ২৮ ডিসেম্বরে হবে। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের অফিস ১৪৯, আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বসু…

bangla-pokkho-protest-in-kolkata

বাংলাপক্ষ (Bangla pokkho) মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের এর অফিস অভিযান করবে। এই অভিযান আগামী বুধবার ২৮ ডিসেম্বরে হবে। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের অফিস ১৪৯, আচার্য্য জগদীশ চন্দ্র বসু রোডে হবে।

বাংলা পক্ষ দাবি করেছে যে, “বাংলায় মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের এর চাকরির পরীক্ষা শুধুমাত্র ইংরেজিতে হয়, বাংলায় হয় না। বাংলার মাটিতে রাজ্য সরকারি চাকরির পরীক্ষা বাংলা ভাষায় হয় না। বাংলায় ৮৬% মানুষ বাঙালি। বাংলা রাজ্য বাংলা ভাষার ভিত্তিতে তৈরি রাজ্য৷ কিন্তু বাংলায় সরকারি চাকরির পরীক্ষা বাংলায় দেওয়ার সুযোগ নেই। অদ্ভুত নিয়ম। অন্য কোনো রাজ্যে সম্ভব?

সব রাজ্যে রাজ্য সরকারি চাকরিতে সেই রাজ্যের ভাষার পেপার বাধ্যতামূলক থাকে। তাই, বাংলায় মিউনিসিপাল করপোরেশন এর সমস্ত চাকরির পরীক্ষা বাংলা ভাষায় নিতে হবে এবং বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।”

বাংলা নিয়ে লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ইংরেজি একটা ভাষা। শিক্ষার মাপকাঠি নয়। হ্যাঁ, বিশ্বায়নের কারণে ইংরেজি শিখতেই হবে আজকের দিনে। কিন্তু বাংলা হিন্দি, উর্দু বা ইংরেজিতে পড়াশুনো হল শিক্ষা আত্মস্থ করার একেকটা মাধ্যম, পড়াশুনোর নির্ধারক নয়। আমার যে বান্ধবী বাংলা মাধ্যম থেকে পড়ে আজ বিশ্বখ্যাত বিমান সংস্থায় বহু বছর ধরে বিমান সেবিকা, একশোর কাছাকাছি দেশ ঘোরা তার উজ্জ্বল কেরিয়ারে বাংলা মাধ্যম কখনো অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি। বিদেশী সেই বহুজাতিক উড়ান সংস্থা তাকে মাধ্যম দেখে বাতিল করেনি, নির্বাচন করেছিল তার যোগ্যতা দেখে। মাধ্যম বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি আমাদের বা আমাদের আগের প্রজন্মের কারুরই, যারা কর্পোরেট বা সরকারি চাকরিতে কিংবা ব্যবসাতে উচ্চপদে আজ প্রতিষ্ঠিত।

হরিনাথ দে’র মত কৃতী বাঙালি ৩৪টি ভাষা জানতেন। দেশের সর্বোচ্চ সরকারি চাকরি ইউপিএসসি তেও চাইলে বাংলায় গোটা পরীক্ষা দেওয়া যায়, এমনকি দিল্লীতে ইন্টারভিউও। দোভাষী দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে। সম্পূর্ণ বাংলায় লিখে ২০০৫ সালে ইউপিএসসি তে সর্বভারতীয় ২৪ র‍্যাংক করে IAS হয়েছিলেন তন্ময় চক্রবর্তী। এছাড়া অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, ডাক্তার বা অন্যান্য চাকরিরতদের লম্বা লিস্ট যদি ছেড়েও দিই, বাংলা মাধ্যমে পড়া যাদবপুরের প্রাক্তনী আমার এক বন্ধু বহুবছর ব্রিটেনে থাকে, সেখানে সে ব্যবসা করে। ব্রিটিশ ছাত্রছাত্রীদের সফট স্কিল শেখানোর ব্যবসা। রীতিমত নামকরা বিনিয়োগকারী সে। সুইজারল্যান্ড আর অস্ট্রিয়ার মাঝে লিকটেনস্টাইন বলে একটা ছোট্ট দেশে দেখেছিলাম, বারাসাতের এক উচ্চমাধ্যমিক পাশ বঙ্গতনয় রমরমিয়ে চালাচ্ছেন রেস্তোরাঁ। আবার উল্টোদিকে কনভেন্টে পড়া, শৈশবে সেভাবে বাংলা পড়তে না জানা লীলা মজুমদার হয়েছেন বিখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক। এই তালিকা সুদীর্ঘ এবং অনন্ত। ইংরেজি কোন আভিজাত্যের স্টেটাস নয়, সাফল্য মানেই গড়গড়িয়ে ইংরেজি বলতে পারা নয়। শিক্ষা মানেই সপ্রতিভ সফট স্কিল নয়, বিশেষ কোন একটি বিদেশী ভাষায় তুখোড় কথা বলা নয়। ভাষায় সাবলীলতা হল অভ্যাস। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার সঙ্গে ইংরেজিতে ভাল হওয়ার সম্পর্ক নেই। আর অনেক উন্নত দেশে তাদের নিজস্ব ভাষাই প্রধান ভাষা।

দুশো বছরের ব্রিটিশ শাসন ও ঔপনিবেশিকতার পদলেহনকারী আমরা আত্মঘাতী বাঙালিরা এগুলো কবে বুঝব? কবে কাটবে আমাদের এই কলোনিয়াল হ্যাংওভার?”