INS Nistar: ভারতীয় নৌবাহিনী সম্প্রতি তাদের নৌবহরে “আইএনএস নিস্তার” নামে একটি অত্যাধুনিক ডাইভিং সাপোর্ট ভেসেল (ডিএসভি) অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই জাহাজটি ৮০% দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এবং ৬৫০ মিটার পর্যন্ত গভীরতায় আটকে পড়া সাবমেরিনগুলিকে উদ্ধার করতে পারে।
এটি ভারতের সাবমেরিন প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকেও উৎসাহিত করবে। এটি কেবল একটি সহায়ক জাহাজ নয় বরং একটি নীরব ঘাতক যা সমুদ্রের গভীরে শত্রুর যেকোনো পদক্ষেপকে ব্যর্থ করতে পারে।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সাথে সংযোগ
আইএনএস নিস্তারের নাম শুনলেই ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যায়। সেই যুদ্ধে, পাকিস্তান আইএনএস বিক্রান্তকে লক্ষ্য করে তাদের সবচেয়ে মারাত্মক সাবমেরিন পিএনএস গাজী পাঠিয়েছিল। কিন্তু, ভারতীয় নৌবাহিনীর চতুরতার কারণে, গাজী বিশাখাপত্তনমের কাছে সমুদ্রের গভীরে ধ্বংস হয়ে যায়। সেই অভিযানে ব্যবহৃত ডাইভিং টেন্ডারের নাম ছিল আইএনএস নিস্তার। এখন সেই ঐতিহ্যকে নতুন করে প্রাণ দিয়ে, ভারত আইএনএস নিস্তারকে আরও আধুনিক আকারে প্রস্তুত করেছে।
আইএনএস নিস্তার কেন বিশেষ?
- আইএনএস নিস্তার ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রথম ডেডিকেটেড ডাইভিং সাপোর্ট ভেসেল (ডিএসভি), যা জরুরি পরিস্থিতিতে যেকোনো সাবমেরিন উদ্ধারে ব্যবহার করা হবে।
- এই জাহাজটি প্রায় ৮০ শতাংশ দেশীয় প্রযুক্তি এবং উপকরণ দিয়ে তৈরি।
- এর ওজন ৯৩৫০ টন এবং লম্বা ১২০ মিটার।
- আইএনএস নিস্তার ২০০ জনেরও বেশি নৌকর্মীকে ধারণ করতে পারে এবং বন্দরে ফিরে না গিয়ে ৬০ দিন পর্যন্ত সমুদ্রে কাজ করতে পারে।
- এতে একটি ডিপ সাবমারজেন্স রেসকিউ ভেহিকেল (DSRV) লাগানো আছে, যা সমুদ্রের ৬৫০ মিটার গভীরতায় যেতে পারে এবং যেকোনো আটকে পড়া সাবমেরিনের সেনাদের উদ্ধার করতে পারে।
- এতে হেলিকপ্টার পরিচালনার সুবিধাও রয়েছে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করা যায়।
এতদিন পর্যন্ত, সাবমেরিন দুর্ঘটনা বা উদ্ধার অভিযানের ক্ষেত্রে ভারতীয় নৌবাহিনীকে ONGC বা বেসরকারি কোম্পানিগুলির উপর নির্ভর করতে হত। কিন্তু INS Nistar এবং এর যমজ জাহাজ INS Nipun আসার সাথে সাথে, ভারত সম্পূর্ণরূপে স্বনির্ভর হয়ে উঠবে।
আইএনএস নিস্তার পূর্ব উপকূলে মোতায়েন করা হবে, আর আইএনএস নিপুণ পশ্চিম উপকূলে মোতায়েন করা হবে। এর ফলে যেকোনো কোণে সাবমেরিন দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক সাহায্য পাওয়া যাবে।