বিগত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের একাধিক এলাকা। (Vegetables Price) বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে নদীগুলির জলস্তরে। অজয়নদ এবং কুনুরনদীর সংলগ্ন বিস্তীর্ণ চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। বৃষ্টির জল নদী উপচে মাঠে ঢুকে পড়ায় ধ্বংস হয়েছে সবজি চাষ। ক্ষতির মুখে পড়েছেন শত শত কৃষক। এখন তাঁরা উদ্বিগ্ন ভবিষ্যত নিয়ে(Vegetables Price)
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, অজয় ও কুনুর নদীর ধার ঘেঁষে বিস্তীর্ণ জমিতে লাউ, ঝিঙে, পুঁই, ঢেঁড়স, টম্যাটো, কুমড়ো সহ নানা রকম শাকসবজির চাষ করতেন তাঁরা। এমনিতেই বর্ষাকালে এই সব সবজির চাহিদা অনেক বেশি থাকে। কিন্তু হঠাৎ অতিবৃষ্টির ফলে জল ঢুকে পড়েছে চাষের জমিতে। ফলে গাছগুলি পচে যাচ্ছে, অনেক গাছ মাটির তলায় চলে গিয়েছে। জমিতে কাজ করার মত অবস্থাও নেই। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
বীরভূম জেলার এক চাষি মাধব ঘোষ জানালেন, “প্রায় ৪ বিঘা জমিতে ঢেঁড়স আর ঝিঙের চাষ করেছিলাম। গত সপ্তাহেই ফুল ধরেছিল গাছে। কিন্তু এখন সমস্ত জমি জলের তলায়। কিছুই বাঁচাতে পারিনি।” আরেক চাষি কৌশিক পাল বলেন, “এই চাষের উপরেই আমাদের পুরো পরিবারের রোজগার নির্ভর করে। এবার সব শেষ। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে বেশ কয়েক মাস লেগে যাবে।”
কৃষকদের এই বিপদের মধ্যেই অন্য এক আশঙ্কার মেঘ জমেছে বাজারে। যে পরিমাণ শাকসবজি নষ্ট হয়েছে, তাতে আগামী কয়েক সপ্তাহে সবজির জোগানে টান পড়তে পারে। ফলে দাম বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরাও। ইতিমধ্যেই কিছু এলাকায় সবজির দাম বেড়েছে। ১০ টাকায় পাওয়া ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকায়। পুঁইশাক, কুমড়ো, ঢেঁড়স, লাউ—সব কিছুর দামই ধীরে ধীরে বাড়ছে।
স্থানীয় এক সবজি ব্যবসায়ী বললেন, “বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত চাষিরা নিয়মিত বাজারে শাকসবজি এনে দিতেন। কিন্তু এখন চাষিই আসছেন না, আর যদি-বা কেউ আসছেন, তাও খুব অল্প পরিমাণে। ফলে জোগান কমে গিয়েছে। আর চাহিদা তো থেকেই যাচ্ছে। এই অবস্থায় দাম বাড়বেই।(Vegetables Price)
চাষিদের দাবি, সরকারের উচিত দ্রুত তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হোক, সেইসঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নতুন করে চাষের জন্য আর্থিক সহায়তা ও চারা সরবরাহ করুক কৃষি দপ্তর। কারণ শাকসবজি চাষে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে তুলতে একা কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়।
এদিকে, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী কয়েকদিনেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কৃষকদের রক্ষা করতে প্রয়োজন দ্রুত পদক্ষেপ। না হলে একদিকে চাষিরা পথে বসবেন, অন্যদিকে সাধারণ মানুষকেও পকেটে চাপ সামলাতে হবে। কৃষি, পরিবেশ ও বাজার—সব কিছুর উপরই পড়ছে এই অতিবৃষ্টির প্রভাব। তাই সময় থাকতেই সতর্কতা জরুরি।(Vegetables Price)