২১ জুলাইয়ের আগে বোমা মেরে খুন তৃণমূল নেতাকে, আতঙ্কে গ্রামবাসী

বীরভূম: ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের সমাবেশের আগে রক্তাক্ত হল বীরভূম। শনিবার রাতে মল্লারপুর থানার বিষিয়াগ্রামে এক তৃণমূল নেতাকে (TMC Leader) বোমা মেরে খুন করা হয়েছে।…

TMC MPs clash

বীরভূম: ২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের সমাবেশের আগে রক্তাক্ত হল বীরভূম। শনিবার রাতে মল্লারপুর থানার বিষিয়াগ্রামে এক তৃণমূল নেতাকে (TMC Leader) বোমা মেরে খুন করা হয়েছে। মৃত তৃণমূল নেতার নাম বাইতুল্লা শেখ (৪০)। তিনি ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ। তাঁর এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইতুল্লা শেখ রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন এবং তিনিও এলাকায় রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এক মুখ। শনিবার রাত আটটা নাগাদ বিষিয়াগ্রামের একটি চায়ের দোকানে তিনি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। সেই সময় আচমকাই ঘটনাস্থলে হাজির হয় একদল দুষ্কৃতী।

   

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাইতুল্লা শেখকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি বোমা ছোড়া হয়। বিস্ফোরণের শব্দে গোটা গ্রাম কেঁপে ওঠে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন আতঙ্কে ছুটে পালাতে থাকেন। দুষ্কৃতীরা অন্ধকারের সুযোগে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় বাইতুল্লা শেখকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকা ঘিরে ফেলে। চলছে তল্লাশি ও তদন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক শত্রুতা থাকতে পারে। এলাকার রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

প্রসঙ্গত, মাত্র পাঁচদিন আগেই সাইথিয়া থানা এলাকার আর এক তৃণমূল নেতা পীযূষ ঘোষ খুন হন। এক সপ্তাহের মধ্যে জেলায় দুই তৃণমূল নেতার খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। দলীয় নেতারা অভিযোগ করছেন, পরিকল্পিতভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে টার্গেট করা হচ্ছে।

ময়ূরেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক অভিজিৎ রায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “এই কাজ হার্মাদ বাহিনীর। সিপিএম আবার মাথা তুলছে। যারা এই নৃশংস কাজ করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।” তিনি আরও জানান, ২১ জুলাইয়ের আগে এই ধরনের হামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

Advertisements

তবে স্থানীয় সিপিএম নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। সিপিএম বা হার্মাদের কোনও ভূমিকা নেই।”

এদিকে, ঘটনার পর থেকেই বিষিয়াগ্রামে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। গ্রামে প্রবেশ ও বাহিরের পথগুলিতে বসানো হয়েছে নজরদারি। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

২১ জুলাইয়ের আগে এমন ঘটনা তৃণমূলের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাইতুল্লা শেখের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সহ বহু সাধারণ মানুষ। তাঁরা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন।