কলকাতা: কসবাকাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শনিবার বিকেলে লালবাজারের সামনে বিজেপির অবস্থান-বিক্ষোভ চলাকালীন আটক করা হল বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ (Sajal Ghosh), মীনা দেবী পুরোহিত এবং বিজয় ওঝাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুলিশ কার্যত টেনে-হিঁচড়ে তাঁদের প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল সহ বহু পুলিশ আধিকারিক।
প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সজল ঘোষ (Sajal Ghosh)। তিনি বলেন, “আমাদের গরু-ছাগলের মতো গাড়িতে তোলো, সারা শহর ঘোরাও, গাড়ি বদলাও, ঠিক কিডন্যাপারদের মতো করে পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি (Sajal Ghosh) আরও জানান, “মীনাজি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে বাথরুমে যাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। রাস্তাতেই কাকুতি-মিনতি করেছেন। অথচ পুলিশ কোনও কথা শোনেনি।”
থানার দিকে নিয়ে যাওয়া:
প্রথমে মনে করা হয়েছিল, ধৃতদের লালবাজারেই রাখা হবে। পরে ধারণা করা হয় হেস্টিংস থানায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে। কিন্তু পরে তাঁদের মুচিপাড়া থানার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর।
সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) বক্তব্য অনুযায়ী, “বউবাজার থেকে গাড়ি বদল করে আমাদের মুচিপাড়া থানার সামনে এনে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সুকান্ত মজুমদার এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। তাঁরা খোঁজ নিচ্ছেন। আমরা পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষা করব।”
১৪৪ ধারার নিয়ম লঙ্ঘন প্রসঙ্গে বিজেপির প্রশ্ন:
বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা জানান, “১৪৪ ধারা অনুযায়ী পাঁচজন বা তার বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ। অথচ আমরা তিনজন ছিলাম। তাহলে আমাদের কেন আটক করা হল? এটা পুলিশ বলতে পারবে।”
সজল ঘোষও (Sajal Ghosh) একই প্রশ্ন তুলে বলেন,”তিনজন মানুষ একত্রে থাকলেই যদি পুলিশ এভাবে তুলে নিয়ে যায়, তাহলে বাকিদের সঙ্গে কী হবে?”
লালবাজারের পরিস্থিতি:
লালবাজারের পিছনের গেটে যেখানে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ করছিলেন, সেখান থেকে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে তাঁদের উঠে যেতে বলা হয়। পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সরতে অস্বীকার করায়, পুলিশের পক্ষ থেকে বলপূর্বক তাঁদের প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। লালবাজার চত্বর কার্যত পুলিশের দখলে চলে যায়।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এই ধরনের পুলিশি আচরণ সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁরা জানিয়েছেন, “আমাদের নেতা-কর্মীদের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।”
কসবাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য বিজেপির কর্মসূচি ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। একদিকে সুকান্ত মজুমদার এবং অন্যান্য বিজেপি নেতারা লালবাজারের লকআপে থাকতে রাজি। অন্যদিকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজেপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা, পুলিশের এই আচরণ মানা হবে না। আন্দোলন আরও বৃহত্তর রূপ নিতে চলেছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।