গণধর্ষণের প্রতিবাদে বিস্ফোরক কুণাল, বললেন ‘চামড়া গুটিয়ে দেওয়া হোক’

সম্প্রতি কসবা এলাকায় এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শাসক দল তৃণমূল…

TMC Leader Kunal Ghosh Says Court Seeks Explanation on Why He Should Not Be Sent to Jail

সম্প্রতি কসবা এলাকায় এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা সামনে আসতেই রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও সরাসরি ও কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া এসেছে। শুক্রবার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

তিনি স্পষ্ট লেখেন, “কসবার ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এসব জানোয়ারকে মেরে পিঠের চামড়া গুটিয়ে দেওয়া উচিত। পুলিশ এদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করুক।”

   

এই বক্তব্যে যেমন তাঁর ক্ষোভ স্পষ্ট, তেমনই দলের অবস্থানও কঠোরভাবে তুলে ধরেছেন কুণাল। তাঁর মতে, এরকম নৃশংস অপরাধ শাসক দলের কাছে কোনোভাবেই বরদাস্তযোগ্য নয়। তিনি মনে করিয়ে দেন যে অতীতে সিপিএমের জমানাতেও এমন বহু ঘটনা ঘটেছে, আবার বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও এই ধরনের ঘটনা কম নয়। তাই বিরোধীদের কাছে নীতিগতভাবে এমন ঘটনার বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার নেই।

তবে এখানেই থেমে থাকেননি কুণাল। তিনি নিজের দল, অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরের দিকেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমাদের চূড়ান্ত সতর্কতা দরকার। এইসব ছেলে কখন কোন সময় কিছুকালের জন্য দলের কাছাকাছি এসে তারপর নিজেদের মত চলবে, সমাজটাকে কলঙ্কিত করবে, এতে সকলের সতর্কতা দরকার।”

তাঁর এই বক্তব্যে স্পষ্ট, দলের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করলেও যারা আদর্শচ্যুত, অপরাধপ্রবণ তাদের ব্যাপারে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না। কুণাল আরও লেখেন, “তৃণমূল কংগ্রেস এইসব বাঁদরামি বরদাস্ত করবে না। এইসব ছেলে স্থানীয়ভাবে বা তার কাজের বৃত্তে যে নেতা বা সংগঠকের সঙ্গে কাজ করেছে, তাদেরও সতর্ক থাকা দরকার।” অর্থাৎ, এই ধরনের অপরাধে প্রত্যক্ষ অপরাধীদের পাশাপাশি যাঁরা তাদের প্রশ্রয় দিয়েছেন বা অজান্তে হলেও পাশে থেকেছেন, তাঁদেরও দায় এড়ানো উচিত নয়।

Advertisements

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে—রাজনীতিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দলগুলো কতটা সতর্ক থাকে? দলের মধ্যে যে কেউ কিছুদিনের জন্য সক্রিয় থাকলেই তার পেছনে চোখ-কান বন্ধ করে সমর্থন দেওয়া কি উচিত? কুণাল ঘোষের বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এখন তৃণমূল সেই দায় এড়াতে চাইছে না।

তবে এই সংবেদনশীল ঘটনার সুযোগ নিয়ে বিরোধীরা যাতে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে না পারে, সেই দিকেও কুণাল ইঙ্গিত করেছেন। তিনি লেখেন, “বিরোধীরা এনিয়ে রাজনীতি করতে এলে সমুচিত জবাব পাবে। একটি বিচ্ছিন্ন খারাপ ঘটনা দিয়ে কেউ দয়া করে সামগ্রিকতার মূল্যায়ন করবেন না।”

সবশেষে কুণাল তাঁর সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে লেখেন, “যে মেয়েটির সঙ্গে এসব হয়েছে, তার ও তার পরিবারের কাছে এক নাগরিক হিসেবে দুঃখপ্রকাশ করছি।”

এই ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করল, শুধুমাত্র দলীয় অবস্থান নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতাও এখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। অপরাধ দমন ও দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া বার্তা দেওয়া কতটা কার্যকর হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে কুণালের এই খোলামেলা ও কড়া ভাষার বার্তা রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে এবং দলীয় স্তরে কতটা প্রতিফলন ঘটবে, সেদিকেই নজর থাকছে।