DA মামলায় মুখ্যসচিব-অর্থসচিবকে নোটিস, অসন্তোষ সরকারি কর্মীদের

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) ইস্যুতে ফের একবার আইনি চাপের মুখে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করায় এবার সরাসরি রাজ্যের…

supreme-court gives relief to pocso victim

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (DA) ইস্যুতে ফের একবার আইনি চাপের মুখে রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর না করায় এবার সরাসরি রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং অর্থসচিবকে আইনি নোটিস পাঠাল সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন ‘কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ’।

কী রয়েছে আইনি নোটিসে?
সরকারি কর্মীদের সংগঠনের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই বকেয়া DA-এর অন্তত ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। আজ, অর্থাৎ ২৭ জুন, শেষ হচ্ছে সেই সময়সীমা। এর আগেও বারবার সরকারের কাছে দাবিপত্র জমা দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত DA সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশিকা জারি করেনি রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।

   

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কী ছিল?
১৬ মে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সময়কালের জন্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫ শতাংশ ২৭ জুনের মধ্যে মেটাতে হবে। আদালত জানিয়েছিল, সময়সীমার মধ্যে নির্দেশ কার্যকর না করলে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে আদালত।

রাজ্য সরকারের ভূমিকা কী?
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত DA সংক্রান্ত কোনও নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি রাজ্য সরকার। আদালতের আদেশের পরেও সরকার কোনো রিভিউ পিটিশনও দাখিল করেনি সুপ্রিম কোর্টে। শুধু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রকাশ্যে এসেছে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সময় সময়ে DA প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ:
হাইকোর্ট জানিয়েছে, DA দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পক্ষে ‘অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স’ (AICPI) মানা বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্য চাইলে নিজের আর্থিক পরিস্থিতি অনুযায়ী DA দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ থাকায় এবার আইনি চাপে পড়তে পারে রাজ্য সরকার।

Advertisements

সরকারি কর্মচারীদের অবস্থান:
এদিকে সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্মেন্ট এমপ্লয়িজ জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও বকেয়া DA না পেলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ কর্মসূচির পরিকল্পনাও চলছে বলে জানা গেছে।

কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?
সরকার যদি আজকের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে আদালত অবমাননার মামলা শুরু হতে পারে বলেই আইন বিশেষজ্ঞদের মত। সরকারি কর্মচারীদের একাংশের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে লঙ্ঘন করে থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে কনটেম্পট অফ কোর্টের মামলা হতে পারে।

বর্তমানে একদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, অন্যদিকে রাজ্য সরকারের নিরুত্তর অবস্থান। ফলে দ্বন্দ্ব আরও ঘনীভূত হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীদের দাবি স্পষ্ট—‘আমাদের বকেয়া DA চাই, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে হবে।’ আগামী দিনে এই ইস্যু রাজ্য রাজনীতিতেও বড় ভূমিকা নিতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।