দিঘায় জগন্নাথদেবকে মমতার বিশেষ উপহার, কী দিলেন মুখ্যমন্ত্রী?

দিঘা: দিঘায় ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে বঙ্গবাসী। প্রথমবারের মতো দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা উৎসব। সুসজ্জিত রথ প্রস্তুত, কিছুক্ষণের মধ্যেই মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা…

Mamata Banerjee Digha Jagannath

দিঘা: দিঘায় ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে বঙ্গবাসী। প্রথমবারের মতো দিঘা জগন্নাথ মন্দিরে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা উৎসব। সুসজ্জিত রথ প্রস্তুত, কিছুক্ষণের মধ্যেই মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন ভগবান জগন্নাথ, বলরাম ও দেবী সুভদ্রা। উৎসব ঘিরে উপচে পড়েছে ভক্তদের ভিড়। দিঘার রথযাত্রা হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে। বুধবারই তিনি পৌঁছেছেন দিঘায় এবং নিজের হাতে তুলে দিয়েছেন উপহারসামগ্রী জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের হাতে।

মমতার উপহার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই উৎসবকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এসে নিজ হাতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার জন্য আম, পেয়ারা এবং নতুন পোশাক উপহার হিসেবে প্রদান করেছেন। এই ফলমূল সরাসরি তাঁর কালীঘাটের বাড়ির নিজস্ব বাগান থেকে আনা হয়েছে, যা উৎসবের পবিত্রতা এবং ভক্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। উপহার হস্তান্তরের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইসকন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস, যারা এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানকে সমর্থন এবং সহযোগিতা করছেন।

   

রথযাত্রার প্রস্তুতিতে নজর Mamata Banerjee Digha Jagannath

রথ তৈরির কাজ ও উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুঁটিনাটি নজর দিয়েছেন। মন্দির চত্বর পরিদর্শন করে ৭ নম্বর গেট থেকে ৩ নম্বর গেট পর্যন্ত হাঁটতে হাঁটতে রথের দৈর্ঘ্য, রাস্তার পরিকাঠামো ও অন্যান্য ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। হিডকোর ভাইস চেয়ারম্যান এবং একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে তিনি রথ টানার রাস্তাঘাট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন, যেন এই উৎসব সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদে সম্পন্ন হয়।

পুজোর সময়

রথযাত্রা উৎসবের দিন সূচনা হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে পুজোপাঠের মাধ্যমে। দুপুর ২টা থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত হবে বিশেষ আরতি, যার পরেই শুরু হবে রথ টানার পবিত্র পর্ব। রথে স্থান পাবে নিমকাঠের বিগ্রহ, আর পাথরের মূল বিগ্রহ মন্দিরের ভেতরেই সংরক্ষিত থাকবে। ভগবানদের পরানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নতুন পোশাক, যা উৎসবের ঐতিহ্য ও ভক্তির নিদর্শন হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে।

Advertisements

নিরাপত্তা জোরদার

নিরাপত্তার দিক থেকেও অত্যন্ত সুসংগঠিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দিঘায় মোতায়েন থাকবে তিন হাজারেরও বেশি পুলিশ, যাদের ওপর থাকবে ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করার দায়িত্ব। সাদা পোশাকের পুলিশ এবং মহিলা বাহিনী উৎসবের প্রতিটি মুহূর্তে সতর্ক নজর রাখবে। এছাড়া মন্দির চত্বর ও আশপাশে থাকবে একাধিক স্বাস্থ্য শিবির, দুটি মোবাইল হেলথ ইউনিট এবং বিশ শতাধিক লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স। জরুরি অবস্থায় ব্যবহার করার জন্য হেলিপ্যাডেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ও একটি হেলিকপ্টার।

গাঁদা ও বাহারি ফুলের সাজে মন্দির চত্বর এক বিশেষ রূপ ধারণ করেছে। রঙিন আলোকসজ্জা, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় এই উৎসবকে দিঘার সৈকত শহরকে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে চলা রথযাত্রা দিঘার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে, যা শুধু ধর্মীয়ভাবেই নয়, সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এক গৌরবোজ্জ্বল দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।