প্রথমবার দিঘায় জগন্নাথ ধামের মহোৎসব, দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার

দিঘা: আর মাত্র একদিনের অপেক্ষা। তারপরই ইতিহাসের সাক্ষী থাকবে দিঘা। কারণ শুক্রবার থেকেই শুরু হচ্ছে দিঘার জগন্নাথ ধামের প্রথম রথযাত্রা উৎসব। এই প্রথমবার সমুদ্র শহরে…

প্রথমবার দিঘায় জগন্নাথ ধামের মহোৎসব, দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার

দিঘা: আর মাত্র একদিনের অপেক্ষা। তারপরই ইতিহাসের সাক্ষী থাকবে দিঘা। কারণ শুক্রবার থেকেই শুরু হচ্ছে দিঘার জগন্নাথ ধামের প্রথম রথযাত্রা উৎসব। এই প্রথমবার সমুদ্র শহরে মহাধুমধামে আয়োজিত হচ্ছে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা (Rath Yatra)। এই উৎসবকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শহরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ, প্রশাসনিক তৎপরতা পৌঁছেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে।

মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সূচনা
রথযাত্রার (Rath Yatra) আগে বুধবারই দিঘায় পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। বৃহস্পতিবার দিনভর রথযাত্রা উপলক্ষে চলেছে প্রস্তুতির কাজ। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হবে পূজার্চনা। এরপর দুপুর আড়াইটা নাগাদ শুরু হবে রথযাত্রা। আর রথযাত্রার সূচনা হবে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই। তিনি নিজে রশি টেনে রথ টানার মাধ্যমে সূচনা করবেন দিঘার প্রথম রথযাত্রা।

   

বিশেষ নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা
বিগত বছরগুলিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা, বিশেষত পদপিষ্টের ঘটনা মাথায় রেখে দিঘার এই রথযাত্রার (Rath Yatra) জন্য প্রশাসন অত্যন্ত সতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘রাস্তায় যেন কোনও সাধারণ মানুষ দাঁড়িয়ে না থাকেন।’’ দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা ব্যারিকেড। ব্যারিকেডের সঙ্গেই রথের দড়ি লাগানো থাকবে, যাতে ভক্তরা ছুঁয়ে প্রণাম করতে পারেন।

দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
দিঘা মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে রথ মন্দির প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হবে। শুক্রবার সকালে পুজো শেষে রথযাত্রা শুরু হবে। দর্শনার্থীরা যাতে ভালোভাবে রথদর্শন (Rath Yatra)করতে পারেন, তার জন্য রথ পথের বিভিন্ন স্থানে থামবে। মাত্র পৌনে এক কিলোমিটার পথ হলেও, প্রতিটি পুণ্যার্থী যেন রথের দর্শন পান, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘‘সবাই যাতে দড়ি ছুঁতে পারেন, সেই ব্যবস্থা থাকছে। বাংলা থেকে আসা প্রতিটি মানুষকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে স্বাগত জানাই।’’

Advertisements

৫৫ ভোগ অর্পণ
রথযাত্রার (Rath Yatra) আগের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জগন্নাথদেবের কাছে ৫৫ প্রকার ভোগ নিবেদন করা হয়েছে। এই ভোগে থাকছে নানা ধরনের মিষ্টান্ন, ফলমূল এবং বিশেষ প্রসাদ। এটি রথযাত্রার আগের এক বিশেষ রীতি বলে জানান মন্দির কর্তৃপক্ষ।

রাস্তার নিরাপত্তা, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ
পুরো রথযাত্রা (Rath Yatra) রুটজুড়ে থাকবে পুলিশ বাহিনী। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিঘার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। ভিড় নিয়ন্ত্রণে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবক দলও।

দিঘার ইতিহাসে এই প্রথমবার এমন বিশাল আকারের রথযাত্রা (Rath Yatra) হতে চলেছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে প্রশাসন—সকলেই চেষ্টা করছে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে এবং প্রতিটি পুণ্যার্থী নির্বিঘ্নে এই ঐতিহাসিক উৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। বাংলার এক নতুন ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এবার দিঘার জগন্নাথধামও জায়গা করে নিচ্ছে রাজ্যের ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে।